খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫: আসন্ন কাউন্সিলে সবচে বেশি পরিবর্তন আসছে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে। বর্তমানে সাতজন সাংগঠনিক সম্পাদকের মধ্যে পাঁচজনই বাদ পড়তে পারেন। আর এ পদে আসতে পারে নতুন মুখ।
আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতা বলেছেন, সাংগঠনিক সম্পাদকরা বেশিরভাগই দু’মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তৃতীয় মেয়াদে এদের রাখার সম্ভাবনা ক্ষীণ। বিশেষ করে গত কয়েকটি কাউন্সিলের চিত্র দেখলে তা-ই প্রমাণ মেলে। অপেক্ষাকৃত তরুন এসব নেতারা জেলা-উপজেলা কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। ফলে কাউন্সিলের ঝড়টা এবার বইবে তাদের উপর দিয়েই।
দলের একজন যুগ্ম সম্পাদক জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের বিগত দিনগুলোর দিকে তাকালে সবচে’ পরিবর্তনশীল পদ হচ্ছে সাংগঠনিক সম্পাদক পদ। সেটা যখন মোহাম্মদ নাসিম একক দায়িত্বে ছিলেন তখনও যেমন ঘটেছে, তেমনি পরবর্তী ছয় সাংগঠনিক সম্পাদকের ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে। আর বর্তমানে যারা সাংগঠনিক সম্পাদক তারা অপেক্ষাকৃত তরুণ। এদের কাউকেই প্রেসিডিয়াম সদস্য কিংবা যুগ্ম সম্পাদক পদে পদোন্নতি দেয়া যাচ্ছে না। আবার যুগ্ম সম্পাদকদের কাউকে প্রেসিডিয়ামে নেয়া যাচ্ছে না। এ কারনেই ঝড়টা যাবে সাংগঠনিক সম্পাদকদের উপর থেকেই।
বর্তমানে দুই মেয়াদে সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন বিএম মোজাম্মেল হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, আহমেদ হোসেন, মেসবাহ উদ্দিন সিরাজ, বীর বাহাদুর উশে শিং। এক মেয়াদে দায়িত্ব পালন করছেন বাহাউদ্দিন নাসিম। এর আগে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করা সাবের হোসেন চৌধুরী, সুলতান মো. মনসুর, আব্দুর রহমান, মাহমুদুর রহমান মান্না, বীর বাহাদুর একসঙ্গে দায়িত্ব থেকে বাদ পড়েছিলেন।
দলীয় সূত্র জানিয়েছে, প্রথমবারের কারনে বাহাউদ্দিন নাসিম, আঞ্চলিকতার কারনে বীর বাহাদুর ছাড়া বাকি সবারই বাদ পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিএম মোজাম্মেলকে পদোন্নতি দেয়া সম্ভব না হলে সম্পাদকীয় পদে রাখা হতে পারে। রাজশাহী বিভাগে আবু সাঈদ মাহমুদ আল স্বপনের জায়গায় রাজশাহীর সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন অথবা তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের নাম আলোচিত হচ্ছে। রংপুর বিভাগে খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর স্থলে সংসদের হুইপ ও ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ইকবালুর রহীম, সিলেট বিভাগে সংসদ সদস্য আবু জাহির, খুলনা বিভাগে ধষষ ষরফবৎ সোহেল, বরিশাল বিভাগে উপমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবকে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক করার সম্ভাবনা রয়েছে।
বর্তমানে বরিশাল ও খুলনা বিভাগে দলীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নেই। বিএম মোজাম্মেল হক খুলনা এবং বাহাউদ্দিন নাসিম বরিশালের দায়িত্ব পালন করছেন। বাহাউদ্দিন নাসিমকে যুগ্ম সম্পাদক করা হতে পারে এমন একটি গুঞ্জনও রয়েছে। এছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু ও প্রয়াত নেতা আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাকের নাম আলোচিত হচ্ছে।
প্রসঙ্গত: আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদটি এক সময়ে তৃতীয় সর্বো”চ নেতার মর্যাদায় ভাবা হতো। তখন একটি পদ ছিল। পরে তা বাড়িয়ে ছয়টি এবং সর্বশেষ সাতটি করার পরে এদের অবস্থান নিয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। কারণ সম্পাদকীয় পদে অনেক সিনিয়র নেতারা দায়িত্ব পালন করছেন।