শনিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেল রুটের ফতুল্লার পাগলা রেলস্টেশনে শুক্রবার রাতে আব্দুল হাকিম (৪০) নামে এক ট্রেনযাত্রীর চোখ উপড়ে ফেলেছে ট্রেনের টিকিট চেকার। পরে আহত ওই যাত্রীকে উদ্ধার করে ঢাকা ইসলামীয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত আব্দুল হাকিম ফতুল্লার পাগলা এলাকায় অবস্থিত আকবর রোলিং মিলের শ্রমিক।
বেসরকারী খাত এস কে ট্রেডিং নামের একটি প্রতিষ্ঠানের অধীনে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে ট্রেন চলাচল করে। ঘটনার পর এস কে ট্রেডিংয়ের নিয়োগকৃত ওই টিকিট চেকার সোহেল মিয়া ট্রেন থেকে নেমে পালিয়ে যায়।
ঘটনাস্থলে যাওয়া ফতুল্লা মডেল থানার এসআই ইকবাল হোসেন জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে ৭টায় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনের যাত্রী আব্দুল হাকিমের সাথে টিকেট কাটা নিয়ে টিকিট চেকার সোহেল মিয়ার তর্ক হয়। এক পর্যায়ে সোহেল কলম দিয়ে ট্রেনযাত্রী আব্দুল হাকিমের ডান চোখে আঘাত করে। এতে আব্দুল হাকিমের চোখ বেরিয়ে আসে। পাগলা স্টেশনে ট্রেন থামলে টিকিট চেকার সোহেল নেমে দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। পরে ট্রেনে থাকা যাত্রীরা আব্দুল হাকিমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এস আই ইকবাল আরো জানান, এব্যাপারে রেল কর্তৃপক্ষ, রেল পুলিশ ও এস কে ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, ঘটনার পর আব্দুল হাকিমের লোকজন এসে ওই ট্রেনে থাকা এস কে ট্রেডিংয়ের চার স্টাফকে আটক করেছে। ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
ট্রেনের নিয়মিত যাত্রীদের অনেকেই অভিযোগ করেন, বেসরকারী খাত এস কে ট্রেডিংয়ের তত্ত্বাবধানে চলাচলরত ট্রেনের টিকিট চেকাররা সবসময়ই ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটের যাত্রীদের সঙ্গে উশৃঙ্খল আচরণ করে থাকে। অনেক সময় সামান্য ছলছুতায় যাত্রীদের গায়ে হাতও তোলে। কেউ প্রতিবাদ করলে তারা চার-পাঁচজন একত্রিত হয়ে যাত্রীদের লাঞ্ছিত করে। এমনকি ঢাকাগামী যাত্রীদের কেউ এসব নিয়ে প্রতিবাদ করলে কমলাপুরে রেলস্টেশনে নামার পর এস কে ট্রেডিংয়ের গেটে থাকা প্রহরীদের দিয়ে যাত্রীদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয় এবং তাদের আটকিয়ে থানা হাজতের ভয় দেখিয়ে টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়ারও ঘটনা প্রায়ই ঘটছে।
ভুক্তভোগী যাত্রীদের অনেকেই জানান, ঢাকা-নারানয়ণগঞ্জে আসা যাওয়ার পথে ঢাকার বিভিন্ন কলেজে অধ্যয়নরত ছাত্রীরা ট্রেনের এসব টিকিট চেকার ও কমলাপুর রেল স্টেশনের গেটে থাকা এস কে ট্রেডিংয়ের প্রহরীদের দ্বারা উত্যক্ত ও লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা হরহামেশা ঘটে থাকে।
ক্ষুব্ধ যাত্রীরা অভিযোগ করেন, এসব বিষয়ে রেল কর্তৃপক্ষের লোকজনদের কাছে একাধিকবার নালিশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু যাত্রীরা এস কে ট্রেডিংয়ের বিভিন্ন স্টাফদের দ্বারা লাঞ্ছনার হাত থেকে নিস্তার পায়নি। দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের কর্মকান্ড হয়ে আসলেও রেল কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এজন্যই তারা বেপরোয়া।