রবিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫
চলতি অর্থবছরে আয়কর বাবদ ৬৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবি আর)। আর এই বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায়ের জন্য এবারে দেশের ৮৬টি উপজেলায় আয়কর মেলার আয়োজন করতে যাচ্ছে সংস্থাটি। এরআগে বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে এ ধরনের মেলার আয়োজন করা হলেও উপজেলা পর্যায়ে এবারই প্রথম হতে যাচ্ছে আয়কর মেলা।
এনবি আর সূত্রে জানা যায়, কর প্রদানে উৎসাহিত করতে প্রতিবছর ১৬ সেপ্টেম্বর জাতীয় আয়কর দিবস উদযাপন করে এনবি আর। ২০১০ সাল থেকে এ উদ্দেশ্যে আয়কর মেলারও আয়োজন করে আসছে এনবি আর। ঢাকা ও চট্টগ্রামে এ মেলা শুরু করে পরবর্তীতে তা জেলা পর্যায়ে পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়েছে।
এই মেলায় বড় অঙ্কের রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যে কর তথ্য ও সেবা, ই-টিআইএন রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করা হয়। রিটার্ন দাখিল করতে থাকে ই-পেমেন্টের জন্য পৃথক বুথ। সর্বশেষ ২০১৪ সালে পঞ্চমবারের আয়কর মেলায় ১ হাজার ৬৭৫ কোটি ৩০ লাখ ৭৩ হাজার ৪৫১ টাকার আয়কর আদায় করে প্রতিষ্ঠানটি। ওই মেলায় প্রায় সাড়ে ছয় লাখ করদাতাকে সেবা প্রদান করে; যা ২০১৩ সালের আয়কর মেলার তুলনায় ৪৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ বেশি।
তাই চলতি অর্থবছরে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিভাগীয় ও জেলা শহরের পাশাপাশি ৮৬ উপজেলায়ও একযোগে আয়কর মেলা উদযাপনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। তবে জেলা বা উপজেলা পর্যায়ে মেলা দুই থেকে তিনদিনব্যাপী আয়োজন করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
রাজধানীসহ বিভাগীয় ও জেলা শহরের পাশাপাশি যে ৮৬ উপজেলায় আয়কর মেলা উদযাপিত হতে যাচ্ছে সেগুলো হলো- নীলফামারীর সৈয়দপুর, ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ, রংপুরের বদরগঞ্জ, দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ ও ফুলবাড়ী, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ, বগুড়ার দুপচাঁচিয়া, শেরপুর ও গাবতলী, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর, রাজশাহীর ভবানিগঞ্জ ও বাঘা, চাঁপাইনবাবগঞ্চের শিবগঞ্জ, পাবনার ঈশ্বরদী, সাথিয়া ও কাশিনাথপুর, নওগাঁর মহাদেবপুর, নাটোরের সিংড়া, ঢাকার সাভার ও আশুলিয়া, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ ও আড়াইহাজার, গাজীপুরের শ্রীপুর, কালীগঞ্জ, কালিয়াকৈর ও কাপাসিয়া, টাঙ্গাইলের মির্জাপুর, মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর ও সাটুরিয়া, নরসিংদীর মাধবদী, পলাশ, মনোহরদি, রায়পুরা ও শিবপুর, মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর ও টঙ্গীবাড়ী, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া ও মুকসুদপুর, রাজবাড়ীর পাংশা, ফরিদপুরের বোয়ালমারী, ভাঙ্গা ও সদরপুর, মাদারীপুরের রাজৈর ও শিবচর, শরীয়তপুরের জাজিরা ও নড়িয়া, সুনামগঞ্জের ছাতক, হবিগঞ্জের মাধবপুর, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল, সিলেটের গোলাপগঞ্জ ও বালাগঞ্জ, পটুয়াখালীর খেপুপাড়া ও গলাচিপা, পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি, ভোলার লালমোহন, ঝালকাঠির নলছিটি, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ, যশোরের ঝিকরগাছা ও নোয়াপাড়া, বাগেরহাটের মংলা, সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ, নেত্রকোণার কেন্দুয়া, কিশোরগঞ্জের ভৈরব ও হোসেনপুর, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ, ময়মনসিংহের ভালুকা ও মুক্তাগাছা, শেরপুরের নালিতাবাড়ি, চট্টগ্রামের হাটহাজারী, রাউজান, লোহাগাড়া, চন্দনাইশ, পটিয়া, সীতাকুণ্ড, সাতকানিয়া, বোয়ালখালী ও আনোয়ারা, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ, লক্ষ্মীপুরের রায়পুর, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাডিয়ার আশুগঞ্জ, ফেনীর দাগনভূঞা এবং কক্সবাজারের চকরিয়া ও টেকনাফ।
গত ৩০ জুন জাতীয় সংসদে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেট পাস হয়। ২ লাখ ৯৯ হাজার ৯৬ কোটি টাকার বিশাল বাজেটে রাজস্ব খাতে আয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৮ হাজার ৪৪৩ কোটি টাকা। রাজস্ব আয়ের বড় অংশের যোগান আবার আসবে আয়কর, শুল্ক ও মূসক থেকে।