Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

39সোমবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ : পাবনার সুজানগর জহুরুল কামাল ডিগ্রি কলেজ থেকে অপহরণের পর মুক্তিপণের ২০ লাখ টাকা না দেওয়ায় ১৮ দিন পর হত্যা করা হয়েছে এক কলেজ ছাত্রকে। রবিবার মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার বাঘুলিয়া বাজারের উত্তর পাশের একটি ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত কলেজ ছাত্র পাবনার আমিনপুর উপজেলার কাবাশ কান্দা গ্রামের মুকুল শেখের ছেলে আব্দুল গাফফার ওরফে মাসুম (১৮)। সে সুজানগর উপজেলার দুলাই এলাকার জহুরুল কামাল ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি ১ম বর্ষের মানবিক শাখার ছাত্র।

রবিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান দৌলতপুর থানার ওসি নাজমুন নিশাদ।

অপহরণের খবর নিশ্চিত হবার পর নিহতের বড় ভাই শিহাব উদ্দিন বাদী হয়ে দুলাভাই আজিমকে প্রধান আসামি করে সুজানগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকা চারজনকে আটক করে।
আটকরা হচ্ছেন, সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার বাইশা গ্রামের নুরাল মেম্বারের ছেলে আজিম (৩৫), আজিজ মিস্ত্রির ছেলে রমজান আলী (৩৪), একই গ্রামের মছলব সরদারের ছেলে ছবেদ আলী (৩৫) এবং ওহাব আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম।

নিহতের মামা আব্দুর রফিকুল ইসলাম রফিক জানান, ১৯ আগস্ট মাসুম কলেজে যাবার পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চাচাতো বোন রুপার স্বামী আজিম কলেজ থেকে তাকে (মাসুম) ডেকে নিয়ে যায়। কলেজ থেকে মাসুম বাড়িতে না ফেরায় তাকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজা হয়।

পরে বেলা ৩টার দিকে মাসুমের ফোন থেকে একটা কল আসে। ফোনে মাসুম জানায়, সে তার দুলাভাই আজিমের সাথে আছে। তবে সে খুবই বিপদে আছে বলে ফোন কেটে দেয়।

পরে আজিমের বাড়ি সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার মিনিদিয়া গ্রামে গিয়ে তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। তাতে ডায়াল কল লিস্টে দেখতে পাওয়া যায়, আজিম মাসুমের ফোনে অপহরণের আগে ও পরে কয়েকবার ফোন দেয়। রাতে স্থাণীয় লোকজন এক সালিশে বসলে আজিম অপহরণের কথা স্বীকার করে। তখন আজিম জানায়, তারা মাসুমকে বগুড়ায় রেখেছে।

তিনি জানান, অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা মাসুমের ফোন দিয়ে তার বড় ভাই সিঙ্গাপুর প্রবাসী সুমনকে ফোন দিয়ে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। না দিলে তাকে হত্যা করবে বলে জানায়।

প্রতিবেশী মোবারক হোসেন জানান, মাসুমের নম্বর থেকে ওই দিন ৫টার দিক আবার একটা ফোন আসে। তখন ফোনের অপর প্রান্ত থেকে জানায়, মাসুমকে অপহরণ করা হয়েছে।২০ লাখ টাকা দিলে তাকে মুক্তি দেওয়া হবে বলে ফোন বন্ধ করে দেয়।

পাবনার সুজানগর থানার ওসি হাবিবুর রহমান জানান, অপহরণের পর মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে মাসুমকে হত্যা করে অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা।
অভিযোগের ভিত্তিতে মামলার প্রধান আসাম আজিমকে গ্রেফতার করা হলে সে পাবনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ৩ নং আদালতের বিচারক এ কে এম রৌশন জাহানের নিকট ১৬৪ ধারায় স্বীরোক্তিমূলক জবান বন্দি দেয়। অপহরণ চক্রের বাকী সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।