Tue. May 6th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

5তল্লাশি করার নামে দুই সাংবাদিককে হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে যাত্রাবাড়ী থানার সহকারী উপপরিদর্শক ফরিদ উদ্দিনের বিরুদ্ধে। দুই সাংবাদিক অভিযোগ করেছেন, পুলিশ কেবল হেনস্তাই করেনি, মানিব্যাগ থেকে টাকাও নিয়ে নিয়েছে।
আজ রোববার শনির আখরায় এ ঘটনা ঘটেছে। তল্লাশি করার কথা স্বীকার করলেও হেনস্তা করার কথা অস্বীকার করেছেন যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অবনী শংকর রায়।
দৈনিক জনতার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক সফিকুল ইসলাম ও দৈনিক ডেসটিনি পত্রিকার মফস্বল সম্পাদক আলী মুনসুর এ ঘটনার শিকার হয়েছেন বলে জানান।
সফিকুল ইসলাম বলেন, “আমরা বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। বাস আসার পর বাসে উঠতে যাব, এমন সময় আমাকে এবং মুনসুরকে টেনে নামিয়ে আনেন সহকারী উপপরিদর্শক ফরিদ উদ্দিন। তিনি আমাদের তল্লাশি করতে থাকেন। মানিব্যাগ ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নেন। এ সময় আমরা পরিচয় দেই যে আমরা দুজনই সাংবাদিক। ওই পুলিশ কর্মকর্তা এরপর আমাদের সঙ্গে বাজে ব্যবহার করতে থাকেন। আমাদের তিনি বলেন, ‘তোরা কিসের সাংবাদিক? তোরা তো প্রতিদিন সন্ধ্যার পরে থানায় আসিস না। তাহলে তোরা কিসের সাংবাদিক?’ আমরা বলি আমরা থানায় যাব কেন? সন্ধ্যার পর আমরা আমাদের কার্যালয়ে থাকি।”
সফিকুল ইসলাম আরো বলেন, ‘পুলিশ কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দিন খুবই উত্তেজিত ভাষায় আমাদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। আমার বাসায় আমার স্ত্রীকে ফোন করতে বলেন। একপর্যায়ে তিনি আমাদের মানিব্যাগ ও মুঠোফোন ফেরত দেন। ওই মানিব্যাগে ১ হাজার ২০০ টাকা ছিল। মানিব্যাগ ফেরত পাওয়ার পর ওখানে কোনো টাকা পাইনি আমি।’
যাত্রাবাড়ী থানায় বিষয়টি জানিয়েছেন কি না জানতে চাইলে সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সহকারী উপপরিদর্শকের হাতে যথেষ্ট হেনস্তা হয়েছি। থানায় গেলে আরো হেনস্তা হতে হয় কি না সে আশঙ্কায় ওখানে আর যাইনি আমরা।’
দৈনিক ডেসটিনির মফস্বল সম্পাদক আলী মুনসুর বলেন, ‘ওই পুলিশ কর্মকর্তা এমনভাবে আমাদের সঙ্গে কথা বলছিলেন যা বেশ অপমানজনক। উনি বারবার বলছিলেন, কেমন সাংবাদিক আপনাদের তো থানায় দেখিনি। থানায় কেন যাব আমরা?’
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অবনী শংকর রায় বলেন, ‘আমি ওই পুলিশ কর্মকর্তা ফরিদের সঙ্গে কথা বলেছি। ফরিদ আমাকে বলেছে সে উনাদের (সাংবাদিক) তল্লাশি করেছে। এর বাইরে কিছু নয়। টাকা-পয়সা নেওয়া বা হেনস্তা সে করেনি। আমরা কেন উনাদের টাকা নিব। আর সাংবাদিকরা যে অভিযোগের কথা বলছেন, সেটা চাকরিতে থাকাকালীন কোনো পুলিশ কর্মকর্তা করবে না। তারপরও আমি আরো খোঁজ খবর নিতাম। কিন্তু উনারা কোনো ধরনের অভিযোগ করেননি আমাদের কাছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পরও তল্লাশি করায় হয়তো উনাদের ইগোতে লেগেছে। এ কারণে এ ধরনের কথা হয়তো বলছেন তাঁরা (সাংবাদিক)।’
সম্প্রতি শীর্ষ নিউজের একজন শিক্ষানবীশ প্রতিবেদককে পুলিশ তল্লাশি করার পর তার মানিব্যাগ থেকেও টাকা গায়েব হয়ে গিয়েছিলো। ওই প্রতিবেদক জানান, ঘটনার দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে অসুস্থ বন্ধুকে ডাক্তার দেখিয়ে অফিসে আসার পথে কলেজগেট বাসস্ট্যান্ডে পুলিশের একটি দল তাকে তল্লাশি করে। এ সময় শীর্ষ নিউজ প্রতিবেদককে হাত উঁচু করতে বলে তার পকেট থেকে তটজলদি মানিব্যাগ ও মোবাইল বের করে নেয় এক পুলিশ সদস্য। এরপর চেক করে আবার পকেটে রেখে দিয়ে প্রতিবেদককে ছেড়ে দেয়। কিন্তু একটু সামনে এসেই ওই প্রতিবেদক মানিব্যাগ চেক করে দেখেন ব্যাগে রাখা তার ৩০০ টাকা হাওয়া হয়ে গেছে।
ওই প্রতিবেদক জানান, পুলিশ আবার নতুন ঝামেলা পাকাতে পারে এমন ধারণা থেকে টাকা লুটের বিষয়ে তাৎক্ষণিক আর ওই পুলিশ সদস্যদের কাছে যাননি তিনি। আবার পুলিশ ইদানিং সাংবাদিকদের উপর ক্ষ্যাপা এমন আতঙ্ক থেকে সাংবাদিক পরিচয়টিও দেননি তিনি।