Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

5খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৫
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, জয়কালের ক্ষয় নাই, মরণকালের ওষুধ নাই।

দশম সংসদের সপ্তম অধিবেশনে বৃহস্পতিবার রাতে জাতীয় সংসদে কার্যপ্রণালীবিধির ১৪৭ (১) বিধির আওতায় আনীত প্রস্তাবের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ সদস্যরা এ সব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে আনা প্রস্তাবটি সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়।

সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, খালেদা জিয়ার এমন কাল হইছে কোথাও কোন ওষুধ নাই। ওনি ক্যাডমেন নামে একজন ব্যারিস্টার ধরছে। ধইরা মাসে ৪০ হাজার ডলার দেয়। তিন মাসে একলাখ ২০ হাজার দিয়া দিছেন। এই কোম্পানির নাম হল একিম কাম টস হাওয়ার এন্ড ফ্যাক্স। এটার নিচে লেখা আছে, ক্লায়েন্টটা কে, ২৮ ভিআইপি রোড গুলশান। অর্থাৎ খালেদা জিয়া।

তিনি বলেন, ‘রিপোর্ট যদি এটা আমেরিকানদের হয়। তাহলে এ টাকা দিয়ে ওনার কি কোন কাম অইবো। এ টাকা গেছে। সুতরাং বেগম খালেদা জিয়ার লাস্ট টোপও গেছে। আপনারা তো রিপোর্ট পড়ছেন। দুইটা রিপোর্টের বাংলা অনুবাদ আমি বলছি। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর রিপোর্টের শেষটায় বলা আছে বর্তমান বিএনপি ধ্বংসাত্মক আন্দোলন সম্পর্কে মানুষকে জিজ্ঞাসা করা হল, উত্তর দাতা ৫ ভাগের চার ভাগ বলেছে, তারা এ ধরনের আন্দোলন চান না। এবারের রিপোর্টে আন্দোলনের কথা বলে নাই।

প্রবীণ এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘বলছে ইলেকশনের কথা’। ইলেকশনের কথা যে বললেন, কেউ চায় না। আর আজকে আপনারা পাগল হয়ে গেছেন ইউরোপ নিয়া। সারা ইউরোপ উত্তাল। সেই উত্তালে, জীবিত আয়লান কুর্দির থেকে মৃত আয়লান কুর্দি বেশি শক্তিশালী। প্রায় দেড় লাখ আপনারা নেবেন। আমার বাংলাদেশী কিশোর মনির যখন এই আন্দোলনে মারা গেল তখন তো ইউরোপীয় বিবেক জাগল না। তিন মাস বর্বরের মতো আন্দোলন কইরা, নির্ঘুম মানুষকে পোড়াইয়া দগ্ধ করলো। ছটফট করিয়া মরলো। কোথায় আপনাদের রিপোর্টে সেই বিষয়টা তো নাই।

তিনি বলেন, কি পার্লামেন্ট আছে, দেখেন না। ওই পার্লামেন্ট হইলে কি হইতো। মনে করেন, আমাদের শ্রদ্ধেয় নেত্রী রওশন এরশাদের জায়গায় খালেদা জিয়া থাকত। দিনে ৫বার ওয়াকআউট করতো। তিন মাস পার্লামেন্টে আসত না। ওই পার্লামেন্ট তো অকার্যকর হত। বরং এই পার্লামেন্টে যারা আছে, তারা কথা কয়। প্রয়োজনে ওয়াকআউট করে।

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বলেন, আপনি ইলেকশন করবেন। আপনার যে জেফারসন-ফার্গুসন মারা গেছে। তাই কি আপনি আর একটা ইলেকশন দিয়ে দেবেন। আপনি কি পারবেন সংবিধানের নিয়ম ভেঙে আমেরিকাতে নির্বাচন দিতে? আপনি যখন সংবিধান ভেঙে নির্বাচন দিতে পারবেন না। আর এখানে বলছেন নির্বাচন দিতে। ওখানে এক কথা, এখানে আরেক কথা। আপনারা পাগল হইছেন।

তিনি বলেন, আপনি দক্ষিণ এশিয়া বুঝেন না। শেখ হাসিনা আইকন অব লিডারশিপ হয়ে গেছে। পুরো এশিয়াসহ সারা পৃথিবীতে। এখানে যদি নাড়া দেন, এখানকার কোটি কোটি মানুষ; এরা যদি যাত্রা করে, ইউরোপ-আমেরিকা কুলাব না। আপনাদের সর্বনাশ হয়ে যাবে। সুতরাং এদেশের মানুষ আমরা দেখছি, ১৯৪৭ সালে উদ্ধাস্তু হয়েছিল। ১৯৭১ সালে এক কোটি মানুষ ভারতবর্ষে আশ্রয় নিয়েছিল শরণার্থী হিসেবে।

সুরঞ্জিত বলেন, নয় মাস কাদায়, মাটিতে ড্রেনে; যেখানে-সেখানে রয়েছিল। তারপরও আমরা খেয়েছিলাম কিছু। না খেয়েও ছিলাম। আবার এই পোড়ামাটির দেশে ফিরে এসেছিলাম। সেই বাংলাদেশ, আজকে আপনি এখানে নাড়া দিচ্ছেন। সারাবিশ্বে নাড়া দিচ্ছেন। এর শেষ কোথায়? এর যুদ্ধে শেষ নাকি? বিশাল যুদ্ধ। আপনি কোথায় যাইবেন। এর মানবিক অবস্থা আপনি কোথায় নিয়ে যাবেন। আর এখন আপনি আইছেন দক্ষিণ এশিয়ায়। এটাকে নিয়ে নাড়াচাড়া করতে আসছেন। একমাত্র শেখ হাসিনার কারণে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক স্থিতিশীলতা আছে।

তিনি বলেন, খবরদার এটাকে নিয়ে নাড়াচাড়া করবেন না। আপনি বলছেন, দেশে এখন রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক স্থিতিশীলতা আছে। তাহলে আবার নির্বাচনের কথা আসে কেন? আমেরিকার রিপোর্ট দেখলে আমার ভয় লাগে। আপনারা তো বললেন, পুরান কথা কেন কন। এটা পুরান কথা নয়। আমেরিকা যার বন্ধু হয়, মাশাল্লাহ তার আর দুশমনের প্রয়োজন পড়ে না। সুতরাং নিজে রিপোর্ট দিয়া আমাগো প্রশংসা করছেন। এটাই তো ভয় লাগে। কথা পরিষ্কার পঁচাত্তরের বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে পার পেয়েছিলেন। এইবার বার বার ভয় দেখাইয়া কাজ হইবো না।

এবার যদি শেখ হাসিনার উপর কোন আঘাত আসে এ দেশের মানুষ আমরা পার্লামেন্টসহ রাস্তায় নামব। বিশাল অবস্থা হবে। সুতরাং এসব কথা কইয়া লাভ নাই।

বাংলাদেশে উন্নয়ন হচ্ছে। এটা যদি আপনার পছন্দ না হয় কিছু করার নাই। আপনারা আইএস’র কথা বলছেন, সেই আইএস সমর্থিত বিএনপি-জামায়াত টানা তিন মাস ধরে অগ্নিদগ্ধ করে মানুষ হত্যা করেছে, তখন টু শব্দ করেন নাই।

বাংলাদেশে এগুলো চলবে না। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা সাংবিধানিকভাবে দেশ পরিচালনা করছেন। দেশ সেভাবেই চলবে।

আলোচনায় আরও অংশ নেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সিনিয়র সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, অর্থপ্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, খাদ্যপ্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিম, জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম, সরকার দলীয় সদস্য আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন, মো. তাজুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা, জাসদের কার্যকরী সভাপতি মইনুদ্দিন খান বাদল প্রমুখ।