কামরুল হাসান, ঠাকুরগাঁও, খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৫
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়ার ঘনিমহেশপুর গ্রামে লায়লা (২৫) নামে এক স্বামী পরিত্যক্তা মহিলার বিয়ে বিয়ে খেলায় এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
সর্বশেষ মঙ্গলবার রাতে অবৈধ মেলামেশাকালে জনতার হাতে আবারো ধৃত হয়েছে। আটকের পর ওই মহিলা জানিয়ে দেয় যে, আটককৃত যুবক তার ৪নং স্বামী।
ঘনিমহেশপুর গ্রামের পিকু, সিদ্দিক শেখ, কালুয়ানী ও ওহিদুল হক জানায়,ঘনিমহেশপুর গ্রামের নূর আলম বাচ্চুর স্বামী পরিত্যাক্তা কন্যা লায়লা (২৫) এর স্বভাব স্বামী পাল্টানো। এ যাবত গোপনে ও প্রকাশ্যে বিয়ে হয়েছে তার ৪টি এবং প্রেমিক সহ অসামাজিক কাজে আটকের ঘটনা অসংখ্য।
তারা আরো বলেন, রুনা যখন হাই স্কুলের ছাত্রী তখন তার ১ম বিয়ে হয় তারই বাড়ির ভাড়াটে আব্দুল মান্নান নামে এক যুবকের সঙ্গে। জামাতার নিকট ৫০ হাজার টাকা নিয়ে বাড়ির সামনের রাস্তায় ক্যাসেটের দোকান দেয় মেয়ের বাবা বাচ্চু মিয়া। পরবর্তীতে দোকানে মাল উঠানোর অজুহাতে আরো এক লাখ টাকা দাবি করে। তাদের আর্থিক আব্দার পূরন করতে না পারায় পিতামাতার চাপের মুখে তাদের ১ম বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে।
২য় বার বিয়ে হয় আটোয়ারী উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দার প্যারিসের ভাটার ম্যানেজার ও রাধানগর গ্রামের নাসির উদ্দীন নামে এক যুবকের সঙ্গে। সেখানে এক সন্তানের মা হয় লায়লা। এখানে ব্যস্ত স্বামী তাকে সময় দিতে না পারায় সে ২০১২ সালে আটোয়ারী থানার জাহিদ হোসেন নামে এক দারোগা সহ পরকীয়ায় লিপ্ত হয়। বিষয়টি বেশিদূর যাবার আগেই দারোগা সহ অবৈধ মেলামেশাকালে দেবর লেবুর হাতে ধরা পড়ে সে। ঘটনা দেখার অপরাধে দেবর লেবুর বিরুদ্ধে স্বামীর কাছে অভিযোগ তোলা হয়” দেবর লেবু তার বাথরুমের ফুটো দিয়ে তাকে গোছলে করতে দেখেছে এবং তাকে কু ’প্রস্তাব দিয়েছে। এ নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মাঝে শুরু হয় টানা পোড়েন। দেবরের বিচারের দাবিতে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে চলে আসে পিত্রালয়ে । সাফ জবাব শ^শুর শাশুড়ির সঙ্গে একই ছাদের নীচে থাকবে না সে। তার সঙ্গে সংসার করতে হলে আলাদা পাকা বাড়ি করে দিতে হবে। সেখানে তার শ^শুর-শ^াশুড়ি বা তার পরিবারের কেউ যেতে পারবেনা ।
তবে মেয়ের বন্ধু বান্ধবের ব্যাপারে কোন আপত্তি করা যাবেনা। নাসিরের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে লায়লা তার বাড়ির ভাড়াটে সুরতনের মেয়ের বিয়ে বাড়িতে গিয়ে সাইদুল নামে এক যুবকের সঙ্গে অসামাজিক কাজে লিপ্ত হয়। তখনকার ভাড়াটের মেয়ে কলি ঘটনা ফাঁস করে দিলে তাদের ভাড়াটে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এসব ঘটঁনা জানাজানি হলে গত ১১/০৪/২০১৩ তারিখে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে নাসিরের সঙ্গে তালাকের মধ্য দিয়ে লায়লা ২য় বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে।তারপরও একমাত্র ছেলের জন্মদিন পালনের নামে তালাক প্রাপ্ত স্বামীর কাছে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু তালাককারি স্বামী নাসির অন্যত্র বিয়ে করে ফেললে শুরু হয় লুনা লায়লার প্রেমলীলা।
২০১৪ সালের ১৭ মার্চ উক্ত মহিলা জামাল উদ্দীন নামে তার এক প্রেমিক সহ অসামাজিক কাজে মিলিত হলে স্থানীয় কৃষক লীগের সাধারন সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেনের নেতৃত্বে লোকজন কর্তৃক ধৃত হয়। এর কিছুদিন পর ৩০ মার্চ অসামাজিক কাজে সহযোগিতা করার অপরাধে ওই বাড়ির ভাড়াটে সুরতনকে মারধোর করে প্রেমিক জামালের স্ত্রী ও তার বড় ।
এ ঘটনায় রুহিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়। অভিযোগে লায়লার বেপরোয়া জীবন যাপনের কাহিনী তুলে ধরা হয়।
এ ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে লায়লা ৩য় বিয়ে করে তারই বাড়ির লজিং মাষ্টার ও এসএসসি পরীক্ষার্থী ভাড়াটে রুবেল নামে এক যুবক সহ। কিন্তু ওই যুবককে স্বামীর মর্যাদা না দিয়ে তাকে ঢাকায় পাঠায় গার্মেন্টস এ চাকুরী করার জন্য । কিন্তু সে তার স্ত্রীর চরিত্রের কথা জানতে পেরে স্ত্রীর কাছে ফিরে এলে তাকে দিয়ে বাড়ির কাজ ,কাপড় চোপড় ধোয়া সহ তার গোছলের পানি আনা নেওয়ার কাজ করানো হয়। রুবেল বাধ্য হয়ে পরিবারের লোকজনের চাপে লায়লাকে তালাক দেয় ।চলতি বছরের ১৪ মে আটোয়ারী উপজেলার বার আউলিয়া মাজার শরীফ থেকে রাতে বাড়ি ফিরে শহরের এক যুবক সহ নিজ বাড়িতে অসামাজিক কাজে মিলিত হলে স্থানীয় যুবলীগের নেতা মোস্তফার নেতৃত্বে লোকজন তাদের ধরে ফেলে। আটককৃত যুবকের নিকট মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
সর্বশেষ সে স্থানীয় মন্ডলাদাম বন্দরপাড়া গ্রামের জাহেরুল ইসলামের ছেলে কম্পিউটার অপারেটর রুহুল আমিনকে (১৮) ফাঁসিয়ে গত ২৯ আগষ্ট ঠাকুরগাঁও রোডের এএইচএম আব্দুল হান্নান নামে এক কাজীর কাছে ৪র্থ বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয়। কিন্তু এ বিয়ের কথা কেউ জানতো না।
মঙ্গলবার রাতে রুহুল আমিন ও লায়লা সহ একই ঘরে রাত্রী যাপনকালে এলাকার লোকজন তাদের হাতে নাতে আটক করে। এ অবস্থায় কপোত কপোতি যুগল উপস্থিত লোকজনকে কাবিনের রশিদ দেখিয়ে জানায় ২৯ আ্গষ্ট তাদের বিয়ে হয়েছে।এ ঘটনায় এলাকার মানুষের মাঝে চাপা বিরাজ করছে।
উলে¬খ্য, লায়লার পিতা নুর আলম বাচ্চু তার জীবদ্দশায় ১৯৯৯ সালে তারই আপন ভাগ্নি মনোয়ারা বেগম মুন্নি (১১)কে ধর্ষনের অভিযোগে ( মামলা নং ১২ তাং ৫/০৮/৯৯ ধারা ১৯৯৫ সারের নারি ও শিশু নির্যাতন আইনের ৬(১)/১৪ ধারা ) গ্রেফতার হয় এবং দীর্ঘদিন হাজত বাস শেষে জামিনে মুক্তি নিয়ে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশকালে বিএসএফ কর্তৃক গ্রেফতার হয় । সেখানে জেল হাজতে মৃত্যু বরন করলে ভারতে তাকে দাফন করা হয়।