খোলা বাজার২৪ ॥ শুক্রবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৫
বন্যার পানি নামতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গেই গাইবান্ধায় ডায়ারিয়ার প্রকোপ বেড়ে গেছে। ইতিমধ্যে নছিরন বেগম (৬৭) নামে এক বৃদ্ধা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় গাইবান্ধা আধুনিক হাসপাতলে দুই শতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছেন। চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন আরও শতাধিক।
বৃহস্পতিবার ভোর থেকে শহর এবং শহরতলীর ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হতে শুরু করে। ধীরে ধীরে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। নির্ধারিত ওয়ার্ডে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় হাসপাতাল ভবনে প্রবেশের প্রধান ফটক বন্ধ করে করিডোরসহ বিভিন্নস্থানে রোগীদের গাদাগাদি করে রাখার ব্যবস্থা করা হয়।
শুক্রবার নছিরন বেগম (৬৭) নামে এক বৃদ্ধা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তার বাড়ি সদর উপজেলার খোলাহাটী ইউনিয়নের চকমামরোজপুর গ্রামে।
জেলার অন্যান্য হাসপাতালেও ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ওইসব হাসপাতালে শতাধিক রোগী ভর্তি এবং চিকিৎসা নেয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে গাইবান্ধা সদর উপজেলার পরিস্থিতিই ভয়াবহ।
বন্যার পানি নামতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গেই জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় ডায়রিয়া আক্রান্তের খবর পাওয়া যেতে থাকে।
শুক্রবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত গাইবান্ধা আধুনিক হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগী ভর্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১৫ জন। এছাড়া হাসপাতালে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় আরও শতাধিক রোগী প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে গেছে।
বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য হাসপাতালের সামনে ব্র্যাকের সহযোগিতায় অস্থায়ীভাবে ত্রিপল টানিয়ে ২০ বেডের একটি চিকিৎসা কেন্দ্র চালু করা হয়েছে।
এদিকে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ থেকে হাসপাতাল চত্বরে বিশুদ্ধ পানির জন্য নলকূপ এবং অস্থায়ীভাবে কয়েকটি ল্যাট্রিন স্থাপন করেছে। এছাড়া স্থানীয় প্রশাসন শহরে মাইকিং করে ফুটানো বা বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ব্যবহার করা পানি খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে।
অনেক রোগী হাসপাতালে ঢুকতে না পেরে হাসপাতাল চত্বরেই রাস্তার ওপরই পলিথিন বিছিয়ে শুয়ে পড়েছে এমন দৃশ্যও দেখা গেছে।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় চিকিৎসকরা হিমশিম খাচ্ছে। আরএমও ডা. শাহীনকে পাওয়া না গেলেও সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু চৌধুরীকে সেখানে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করতে দেখা গেছে।
জেলা রোভার স্কাউটসের সদস্যরা চিকিৎসা সেবায় সহায়তা করছে।
এদিকে ঢাকার মহাখালী সংক্রামক ব্যধি রোগ নির্ণয় বিভাগের (আইইডিসিআর) ঊর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. আল মামুন মাহবুব আলমের নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি দল শুক্রবার বিকালে গাইবান্ধায় এসে পৌঁছেছেন। তারা এ পরিস্থিতির কারণ অনুসন্ধান করবেন বলে সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানিয়েছে।