খোলা বাজার২৪ ॥ শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৫
টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের আসন্ন উপ-নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর দল কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ। কাদের সিদ্দিকীর বড় ভাই আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী সংসদ থেকে পদত্যাগ করায় নির্বাচন কমিশন আসনটি শূন্য ঘোষণা করে।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে শনিবার বিকেল ৪টায় সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা জানান বঙ্গবীর নিজেই। এরআগে সকালে মতিঝিলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের বর্ধিত সভায় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই কাদের সিদ্দিকী প্রয়াত জাতীয় পার্টির নেতা কাজী জাফরের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১ মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ও মানুষ যাতে নিরাপদে ভোট দিতে পারে সেই সংগ্রামের অংশ হিসেবেই কালিহাতী উপ-নির্বাচনে আমাদের দল অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
সকালের বর্ধিত সভায় প্রার্থী কে হবেন এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কী না জানতে চাইলে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থীই অংশ নিবে, আপনাদের পরে নাম জানানো হবে।’
এদিকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্তের কারণে তার পদত্যাগ দাবি করেন কাদের সিদ্দিকী। তিনি বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী মুহিত পদত্যাগ না করলে তাকে মন্ত্রিসভা থেকে অব্যাহতি দেওয়া উচিত।’
দলীয় সরকারের অধীনে ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে অংশ না নিয়ে উপ-নির্বাচনে কেন অংশ নিচ্ছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘উপ নির্বাচন আর জাতীয় নির্বাচনের মধ্যে লক্ষ্য-কোটি গুণ পার্থক্য। উপ নির্বাচন সব সময় সরকারের অধীনেই হয়।’
২৮ এপ্রিলের সিটি করপোরেশন নির্বাচন তো সরকারের অধীনেই হয়েছে, সেই নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘সিটি করপোরেশন নির্বাচন কোনো নির্বাচনই হয় নাই।’
সংবাদ সম্মেলনে দলের বর্ধিত সভার সিদ্ধান্ত পাঠ করেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বীর প্রতীক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, কাদের সিদ্দিকীর সহধর্মিনী নাসরিন কাদের সিদ্দিকী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকী, এ্যাডভোকেট মিয়া মো. হাসান আলী রেজা, শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার, টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের সাবেক পৌর মেয়র আব্দুর রশিদ মিয়া, হাবিবুন নবী সোহেল, রিফাতুল ইসলাম প্রমুখ।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) ৬ সেপ্টেম্বর রবিবার টাঙ্গাইল-৪ আসনটি শূণ্য ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে। উপ-নির্বাচনে তারিখ এখনও ঘোষণা করেনি ইসি। এরআগে ১ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদসের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে লিখিত পদত্যাগপত্র জমা দেন আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত প্রেসিডিয়াম সদস্য লতিফ সিদ্দিকী।
তবে লতিফ সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৪ আসনের উপ-নির্বাচনে আর অংশ নিবেন না বলে ২ সেপ্টেম্বর সাংবাদিকদের জানিয়ে দিয়েছেন।
টাঙ্গাইলের ঐহিহ্যবাহী সিদ্দিকী পরিবারের নিবাস টাঙ্গাইল-৪ কালিহাতী উপজেলাতে হলেও কাদের সিদ্দিকী সব সময় টাঙ্গাইল-৮ (সখিপুর-বাসাইল) থেকে নির্বাচন করেন। সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা কাদের সিদ্দিকী এই টাঙ্গাইল-৮ আসনের সংসদ সদস্য পদ থেকেই ১৯৯৯ সালে পদত্যাগ করেছিলেন। একই বছর ১৫ নভেম্বর সেখানে উপনির্বাচনে অংশ নিয়ে ব্যাপক ভোট কারচুপির মাধ্যমে পরাজিত হয়েছিলেন।
১৯৯৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ গঠন করেন।