খোলা বাজার২৪ ॥ রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫
মিছিল-মিটিংয়ে অংশ না নেয়ায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রীতিলতা হলের এক ছাত্রীকে শারীরিকভাবে নির্যাতনকরেছে ওই হলের ছাত্রলীগের চার কর্মী। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রী প্রক্টর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। শনিবার দুপুরে এই লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির সদস্যরা হলেন- সহকারী প্রক্টর হেলাল উদ্দিন আহমেদ ও নিয়াজ মোরশেদ রিপন।
অভিযোগকারী ছাত্রী ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্সুরেন্স বিভাগের ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষের। এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন- প্রীতিলতা হলের ছাত্রলীগকর্মী সানজিদা জিনিয়া, উষা চাকমা, সাফরিন হক ও মুনমুন। এরা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছিরের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা যায়।
অভিযোগপত্রে ওই ছাত্রী উল্লেখ করেছেন, বিগত কয়েক মাস ধরে সানজিদা জিনিয়া তাকে বিভিন্ন মিছিল-মিটিংয়ে যেতে নির্দেশ দিতেন। দু’একবার গেছেনও। কিন্তু ফিরতে অনেক রাত হয় বলে পরে বিরত হন। গত কয়েক দিন ধরে জিনিয়া তার পথে আটকিয়ে তার রুমে যেতে চাপ দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু ভয়ে যাননি।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, গত বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে জিনিয়া তাকে দেন। কিন্তু ঘুমিয়ে থাকায় রিসিভ করতে পারেননি। এর কিছুক্ষণ পরই মুনমুন রুমে এসে ঘুম থেকে ডেকে জিনিয়ার রুমে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় হলের পূর্ব পরিচিত এক বড় আপুর রুমে গিয়ে আশ্রয় নেন। কিছুক্ষণ পর নিজের রুমে ফিরে যাওয়ার সময় সাফরিন হক, মুনমুন, উষা চাকমা তার পথ আটকিয়ে টেনেহিঁচড়ে তিন তলায় নিয়ে যায়। এসময় জিনিয়াসহ তারা তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। একপর্যায়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অভিযোগকারী ছাত্রী বলেন, নির্যাতিত হওয়ার পর তিনি প্রক্টর স্যারকে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এ প্রসঙ্গে প্রক্টর আলী আজগর চৌধুরী বলেন, ‘ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্সুরেন্সবিভাগের এক ছাত্রী প্রীতিলতা হলের কয়েকজন ছাত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। দু’জন সহকারী প্রক্টরকে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।’
অভিযুক্ত সাফরিন হক বলেন, ‘আমি এসব জানি না। আর আমি ওই সময়ে ছিলামও না । এটা ভুল এবং আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে।’
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর টিপু অভিযুক্ত সানজিদা জিনিয়া, সাফরিন, উষা চাকমা ও মুনমুনের সঙ্গে সংগঠনের যোগযোগ নেই উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা এ ধরনের কাউকে চিনি না। ওরা ছাত্রলীগের কেউ না । এ ধরনের ছাত্রলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে যারা অপকর্ম করবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ ও প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিবে।’