Mon. May 5th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪ ॥ রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫
19দেশের ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রবিবার আবারও পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করছেন শিক্ষকরা। পৃথক বেতনস্কেল ও বিদ্যমান বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবিতে তাদের এই আন্দোলন।
রবিবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত তাদের এই কর্মবিরতি চলবে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সব ধরনের ক্লাস নেওয়া বন্ধ রেখেছেন শিক্ষকরা।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব এ এস এম মাকসুদ কামাল সকালে জানান, সবগুলো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েই কর্মবিরতি চলছে বলে তিনি খবর পেয়েছেন। এর পাশাপাশি বেলা ১১টা থেকে একটা পর্যন্ত শিক্ষকেরা নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচিও পালন করবেন।
এ ছাড়া এ সময়ের মধ্যে কেন্দ্রীয়ভাবে সংবাদ সম্মেলন করে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের দেওয়া ‘বিভ্রান্তিকর’ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানানো হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে ওই সংবাদ সম্মেলন হবে।
24মন্ত্রিসভায় নতুন জাতীয় বেতনকাঠামো অনুমোদনের পর গত মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের সবচেয়ে শিক্ষিত জনগোষ্ঠী জ্ঞানের অভাবে আন্দোলন করছে এবং শিক্ষকদের এই ব্যবহারে তিনি অত্যন্ত দুঃখিত।
বেতনকাঠামোতে মর্যাদাহানি ও অবমূল্যায়ন করা হয়েছে—এমন দাবি করে ওই দিন কর্মবিরতি পালন করেন বিভিন্ন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
মন্ত্রী বলেন, এই কর্মবিরতির কোনো যৌক্তিকতা নেই। তারা জানেনই না যে বেতনকাঠামোতে তাদের জন্য কী রাখা হয়েছে বা কী রাখা হয়নি। তিনি প্রশ্ন করে বলেন, ‘কোথায় তাদের মানমর্যাদা ক্ষুণœ হয়েছে? আমি তো কোথাও কিছু দেখি না।’
এ বক্তব্যের পর বৃহস্পতিবার সিলেটে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমি যেভাবে বক্তব্যটি দিই তাতে অবশ্যই তাদের (শিক্ষকদের) মানহানি হয়েছে। কারণ জ্ঞানের অভাবে বলা এবং যথাযথ তথ্য সম্পর্কে অনবহিত বলার মধ্যে যথেষ্ট তফাৎ রয়েছে। আমি আমার বক্তব্য সম্পর্কে খুবই দুঃখিত।’
বেতনকাঠামো নিয়ে গত মে মাসে সচিব কমিটির প্রতিবেদন দেওয়ার পর থেকেই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আন্দোলন করছেন। তারা আশা করেছিলেন, সরকার তাদের দাবি বিবেচনায় নেবে। কিন্তু সিলেকশন গ্রেড, টাইম স্কেল ও উচ্চতর স্কেল বাদ দিয়েই গত সোমবার মন্ত্রিসভা নতুন বেতনকাঠামো অনুমোদন করেছে।
এর মাধ্যমে সিলেকশন গ্রেড থাকার কারণে অধ্যাপকদের এত দিন গ্রেড-১-এ উন্নীত হওয়ার যে সুযোগ ছিল, সেটা বন্ধ হয়ে গেল। এখন একজন অধ্যাপককে গ্রেড-২-এ গিয়েই চাকরিজীবন শেষ করতে হবে, যা অতিরিক্ত সচিবদের সমমর্যাদার। উপরন্তু মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও মুখ্য সচিব এবং জ্যেষ্ঠ সচিবদের জন্য বিশেষ দুটি গ্রেড সৃষ্টি করা হয়েছে। শিক্ষকরা বলছেন, এতে তাদের মর্যাদা আরো কমবে।
অধ্যাপক মাকসুদ কামাল শনিবার জানান, ১৭ সেপ্টেম্বরও তারা কর্মবিরতি পালন করবেন। এরপর ঈদের ছুটি হয়ে যাবে। কিন্তু দাবি পূরণ না হলে ঈদের পর আরো কঠোর আন্দোলন শুরু করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাশাপাশি দেশের উচ্চশিক্ষার বেশির ভাগ কাজ হয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সরকারি কলেজগুলোতে। সেই কলেজগুলোতেও শিক্ষকদের আন্দোলন শুরু হয়েছে। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির ডাকে গত বৃহস্পতিবার কর্মবিরতি পালন করেছেন তারা।
সমিতির মহাসচিব আই কে সেলিম উল্লাহ খন্দকার জানান, এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি, কোনো আশ্বাসও দেওয়া হয়নি। যদি ১৮ সেপ্টেম্বরের আগেও কোনো যোগাযোগ না করা হয়, তাহলে আগামী ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর আবারও কর্মবিরতি পালন করা হবে।
দেশে এখন ৩০৫টি কলেজ ও সমপর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ১৪ হাজার শিক্ষক রয়েছেন।