খোলা বাজার২৪ ॥ বুধবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ : বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া লন্ডনে পৌঁছেছেন। স্থানীয় সময় বুধবার সকাল পৌনে ৭টায় লন্ডন হিথ্রো বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তিনি। লন্ডন পৌঁছালে তার জ্যেষ্ট পুত্র বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান আবেগ ও আনন্দঘন অনুভূতি নিয়ে মমতাময়ী মা ও একইসঙ্গে দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানান। এ সময় যুক্তরাজ্য বিএনপি সভাপতি এম এ মালেক ও সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদ বিএনপি চেয়ারপারসনকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শত শত কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতিতে অভ্যর্থনা জানাতে বিমানবন্দরে এ সময় অন্যদের মধ্যে ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল আউয়াল মিন্টু, বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহিদুর রহমান, বিএনপির মানবাধিকার সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসিরউদ্দিন অসিম, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সহকারী প্রেস সচিব মুশফিকুল ফজল আনসারি প্রমুখ।
তারেক রহমান মাকে নিয়ে নিজে গাড়ি চালিয়ে বিমানবন্দর থেকে রওনা দেন।
বেগম খালেদা জিয়া ভিআইপি টার্মিনাল থেকে বেরিয়ে এসে টার্মিনাল পাচে সফিটেল হোটেলের সামনে সমবেত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে গাড়ি থামিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
এ সময় নেতাকর্মীরা তাদের প্রিয় নেত্রীকে কাছে পেয়ে উল্লসিত হয়ে স্লোগান দিতে থাকেন।
বিমানবন্দরে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার এম এ সালাম, যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতা আব্দুল হামিদ চৌধুরী, আবুল কালাম আজাদ, আকতার হোসেন, লুৎফর রহমান, মঞ্জুরুল সামাদ চৌধুরী মামুন, মুজিবুর রহমান মুজিব, শামছুদ্দিন শামিম, শহিদুল ইসলাম মামুন, তাজউদ্দিন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ খান, কামাল উদ্দিন, শামসুর রহমান মাহতাব, নাসিম আহমেদ চৌধুরী, নসরুল্লা খান জুনায়েদ, ব্যারিস্টার তারেক বিন আজিজ, নাসির আহমেদ শাহীন দেওয়ান মুকাদ্দিম চৌধুরী নিয়াজ, এম এ সালাম প্রমুখ।
এদিকে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা বিমানবন্দরে উপস্থিত হয়ে বেগম খালেদা জিয়ার আগমনের প্রতিবাদ জানাতে একটি লাইনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
প্রসঙ্গত, চিকিৎসা ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের (ফ্লাইট নম্বর-৫৮৫) একটি বিমানে লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
রাত সাড়ে ৮টার দিকে বেগম খালেদা জিয়া বিমানবন্দরে প্রবেশ করেন। এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনকে বিমানবন্দরের প্রধান সড়কে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে দলের নেতাকর্মীরা শুভেচ্ছা জানান।
এ ছাড়া কয়েকজন বিমানবন্দরের ভেতরে প্রবেশ করেন। তারা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইমলাম খান, দলের মুখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপন, সহদফতর সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হেলেন জেরিন খান প্রমুখ।
এ সময় নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ম্যাডামের এটি ব্যক্তিগত সফর। তিনি চিকিৎসার জন্য যাচ্ছেন, ওখানে ঈদ করবেন। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাবেন। মাড্যামের অনুপস্থিতিতে আমরা দলের সংগঠনিক কাজগুলো এগিয়ে নেব। ঈদের পর তিনি খুব দ্রুতই দেশের ফিরবেন।
তিনি বলেন, তার বড় ছেলে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে চিকিৎসাধীন। তিনি সেখানে সপরিবারে বাস করছেন। প্রয়াত পুত্র আরাফাত রহমান কোকোর বিধবা স্ত্রী শারমিলা রহমান সিঁথি ও কন্যারাও এ উপলক্ষে লন্ডন থাকবেন। বিচ্ছিন্ন পরিবারটির এবার লন্ডনে এটা পুনর্মিলন হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। ঈদুল আজহাও একসঙ্গে উদযাপনের কথা রয়েছে। ইতোমধ্যেই বেগম জিয়ার জন্য চিকিৎসকদের সঙ্গে এপয়েন্টমেন্ট করা হয়েছে। তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমান নিজেই একজন চিকিৎসক এবং তিনিই তার শাশুড়ির চিকিৎসার বিষয়ে সমন্বয় ও দেখভাল করবেন। তিনি সফর শেষে আগামী পয়লা অক্টোবর দেশে ফিরবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
এদিকে আমাদের লন্ডন প্রতিনিধি জানান, বেগম খালেদা জিয়ার এ সফরকে ঘিরে যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাংলাদেশী ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। ব্যক্তিগত সফর হলেও একে সফল এবং স্বার্থক করে তুলতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তারা।
সোমবার এ লক্ষ্যে পূর্ব লন্ডনে এক প্রস্তুতি সভার আয়োজন করে যুক্তরাজ্য বিএনপি। এম এ মালেকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এম কয়সর আহমেদের পরিচালনায় এতে যোগ দেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহিদুর রহমান ও লন্ডনে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সহকারী প্রেস সচিব মুশফিকুল ফজল আনসারী।