খোলা বাজার২৪ ॥ শনিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ :
এবারের কোরবানির ঈদে চাহিদার চেয়ে কম পরিমাণ পশুর চামড়া পাওয়ার ভয়ে আছেন ব্যবসায়ীরা, সেই সঙ্গে গরমে নষ্ট হওয়ার শঙ্কাও রয়েছে তাদের।
বাংলাদেশে চামড়া শিল্প যে পরিমাণ কাঁচামাল বছরে পায়, তার অর্ধেকের বেশি আসে ঈদুল আজহায় পশু কোরবানি থেকে। ভারত সীমান্তে কড়াকড়িতে এবার পশু কোরবানি কম হবে বলে ধারণা ব্যবসায়ীদের।
ঈদের এক সপ্তাহ আগে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, ভারতীয় গরু না আসায় চামড়ার সঙ্কট সৃষ্টি হতে পারে।
“গত বছর ৫০ থেকে ৫৫ লাখ গরুর চামড়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল, প্রায় কাছাকাছি পেয়েছি। এবছরের লক্ষ্যমাত্রা ৬৫ লাখ গরুর চামড়া। কিন্তু ১০ থেকে ১২ লাখ চামড়ার ঘাটতি থেকে যাবে বলে মনে হচ্ছে।”
তবে সভাপতির সঙ্গে ভিন্নমত প্রকাশ করেছেন সংগঠনেরেই আরেক নেতা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, “আমরা খবর পাচ্ছি, ভারত ও মিয়ানমার থেকে গরু আসা শুরু করেছে। গরু নিয়ে সাধারণ মানুষের যে সংশয় রয়েছে, তা শেষ পর্যন্ত থাকবে বলে মনে হয় না।”
কোরবানির পশুর সঙ্কট হবে না বলে দাবি করছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হকও।
কয়েকদিন আগে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, সারা দেশের খামারে কোরবানির উপযোগী ৪০ লাখ গরু এবং ৬৯ লাখ ছাগল প্রস্তুত রয়েছে।
গরুর সঙ্কটের চেয়ে তাপমাত্রা নিয়ে বেশি চিন্তা করছেন চামড়াজাত পণ্য উৎপাদনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আফতাব খান।
তিনি বলেন, “গত বছরও ৩৫ শতাংশ চামড়া গরমে নষ্ট হয়েছিল। আপনাদের (সাংবাদিক) মাধ্যমে ফড়িয়াদের (ছোট ব্যবসায়ী) জানাতে চাই, তারা যেন চামড়া কিনে লবণ ছাড়া দীর্ঘক্ষণ ফেলে না রাখে।”
গত কয়েকদিন ধরে দেশে তাপমাত্রা বেশি। শুক্রবার দেশের প্রায় সব স্থানেই দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে ছিল। আগামী এক সপ্তাহে আবহাওয়ার খুব-একটা পরিবর্তনের আভাস নেই।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল বগুড়ায় ৩৮ দশমিক ২ ডেগ্রি সেন্টিগ্রেড, ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি।
ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক তথ্য অনুযায়ী, বছরে বাংলাদেশ থেকে ২২ কোটি বর্গফুট চামড়া পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৬৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ গরুর চামড়া, ৩১ দশমিক ৮২ শতাংশ ছাগলের, ২ দশমিক ২৫ শতাংশ মহিষের এবং ১ দশমিক ২ শতাংশ ভেড়ার চামড়া। এর অর্ধেকের বেশি আসে কোরবানির ঈদের সময়।