খোলা বাজার২৪ ॥ সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৫
বেসিক ব্যাংকে অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনায় অবশেষে মামলা করল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর তিন থানায় ১৮টি মামলা করেছে সংস্থাটি। গুলশান থানায় ৮ টি, মতিঝিল ও পল্টন থানায় ৫টি করে মোট ১৮টি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় বেসিক ব্যাংকের সাড়ে ছয়শ কোটি টাকারও বেশি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়েছে। মামলায় সর্বমোট আসামির সংখ্যা ১৫৩ জন। তবে একাধিক মামলার আসামি রয়েছেন অনেকে। বেশির ভাগ মামলাতেই অভিযুক্ত হয়েছেন ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফখরুল ইসলাম। এ ছাড়া ১৮টি কোম্পানির চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ব্যাংকটির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা অভিযুক্ত হয়েছেন। বেসিক ব্যাংকের চারটি শাখায় ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় করা প্রথম পর্যায়ের ১৮টি মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) ফজলুল সোবহান, কনক কুমার পুরকায়স্থ ও এ মুনায়েম খান, ব্যাংকের শান্তিনগর শাখার এজিএম এস এম আনিসুর রহমান চৌধুরী, সাবেক ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আলী, গুলশান শাখার শাখা ব্যবস্থাপক শিপার আহমেদ, এ শাখার ক্রেডিট ইনচার্জ এস এম জাহিদ হাসান প্রমুখ। বেসিক ব্যাংকে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা জালিয়াতির ঘটনায় দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে গত ৮ সেপ্টেম্বর ৫৪ মামলা অনুমোদন দেয় কমিশন। পরে আরও দুটি মামলার অনুমোদন দেওয়া হয় বলে দুদক সূত্র জানিয়েছে। এই কেলেঙ্কারির ঘটনায় ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চুর নাম ব্যাপকভাবে উচ্চারিত হলেও কোনো মামলায় তাঁকে আসামি করা হয়নি। দীর্ঘদিন ‘কার্যত’ বন্ধ থাকার পর জুলাই মাসে বেসিক ব্যাংকের জালিয়াতির ঘটনা অনুসন্ধানে সক্রিয় হয় দুদক। জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশনে বেসিক ব্যাংক নিয়ে আলোচনা এবং ৭ জুলাই সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের পর থেকে দুদক অনেকটাই নড়েচড়ে বসে। অনুসন্ধানের প্রক্রিয়া শেষ করে দ্রুত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য কমিশনের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয় অনুসন্ধান দলকে। দুদক সূত্র জানিয়েছে, তাড়াহুড়ো করে প্রতিবেদন জমা দিতে গিয়ে অনেকটা দায়সারা গোছের প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাইকে বাদ দিয়ে দ্রুত প্রতিবেদন তৈরি করে অনুসন্ধান দল। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন প্রতিবেদনে অর্থ আত্মসাতের জন্য শেখ আবদুল হাই দায়ী-এ কথা বলা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতও ব্যাংকটিতে ‘হরিলুটের’ পেছনে আবদুল হাই জড়িত বলে একাধিকবার উল্লেখ করেন। তবে জাতীয় পার্টির নেতা হলেও উচ্চপর্যায়ের যোগাযোগের কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।