Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪ ॥ মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৫
67কিচ্ছু বলার নেই। তার পরেই চুপচাপ। চোখের কোণে বোধ হয় তখনো চিকচিক করছে পানির রেখা। বারকতক চোখ দুটি পিটপিট করে চোখের পানিকে যেন বৃথা সামলানোর চেষ্টা করলেন তিনি। তার পর খুব শান্ত গলায় বললেন, ‘জগমোহন ডালমিয়ার প্রয়াণে আমার ব্যক্তিগত ক্ষতি হয়ে গেল।’ ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সদ্যপ্রয়াত সভাপতির অন্তিম যাত্রার ফাঁকে এভাবেই প্রথম প্রতিক্রিয়া দিলেন সৌরভ গাঙ্গুলী। তার পর ফের চুপচাপ ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা অধিনায়ক। শূন্যে তাকানো চোখ দুটো তখন যেন স্মৃতির পাতা হাতড়ে চলেছে। ডালমিয়ার সঙ্গে অজস্র স্মৃতির ছেঁড়া-ছেঁড়া ছবি হয়তো ভাসছিল তাঁর চোখের পাতায়। শোকে স্তব্ধ হয়ে অন্তিম যাত্রায় পা মিলিয়ে চলেছেন সৌরভ। বেশ কিছুক্ষণ পর বললেন, ‘আজকের দিনে এর থেকে আর কী বলা যায়? আজ কথা বলার ভাষা জানা নেই আমার। ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। এত তাড়াতাড়ি ওনাকে হারাব, ভাবতেই পারছি না।’ এটুকু বলেই ফের হয়তো স্মৃতিমেদুর হয়ে পড়লেন সৌরভ। ধীরে ধীরে ফের ভারী হয়ে উঠল তাঁর চোখের কোণ। সামলে নিয়ে বললেন, ‘শুধু সিএবি প্রেসিডেন্ট কিংবা ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট নন, উনি আমার কাছে ছিলেন একজন অভিভাবকের মতো। যখন যে প্রয়োজনে তাঁর কাছে গিয়েছি, উনি আপনজনের মতো পরামর্শ দিয়েছেন। কখনোই দূরের কোনো মানুষ বলে মনে হয়নি।’ কথাটা বলার সময় গলার স্বর ভারী হয়ে এলো ‘প্রিন্স অব কলকাতা’ সৌরভের। যদিও কাউকে বুঝতে দিতে চাইছিলেন না। অনেকটা সময় নিয়ে নিজেকে সামলে নিলেন। তার পর বললেন, ‘আজ অনেক কিছু হারালাম। সেটা প্রতিটি মুহূর্তে বুঝতে পারছি। অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল আমার।’ সোমবার সকাল থেকেই সৌরভ ছিলেন কলকাতার আলিপুরে জগমোহন ডালমিয়ার বাড়িতে। সেখান থেকে ডালমিয়ার মরদেহের সঙ্গে আসেন ইডেন গার্ডেন্সে। সে সময় তাঁর পাশে ছিলেন ডালমিয়ার ছেলে অভিষেক। সারাক্ষণ ডালমিয়ার পরিবারের পাশাপাশি থেকেছেন সৌরভ। ইডেন থেকে কেওড়াতলা মহাশ্মশানেও শোকাচ্ছন্ন পরিবারটির সঙ্গী ছিলেন ভারতের বহু জয়ের নায়ক। প্রায় নির্বাক সৌরভকে বারবার দেখা গেছে দীর্ঘশ্বাস ফেলতে। ভারতের অনন্য ক্রিকেট-ব্যক্তিত্বকে শেষ বিদায় জানিয়ে ফেরার সময় তিনি আবারো বললেন, ‘জগমোহন ডালমিয়ার এই চলে যাওয়া সত্যিই অপ্রত্যাশিত। ভাবতেও পারছি না, উনি আর নেই। তিনি চলে যাওয়ায় শুধু ক্রিকেটেরই নয়, আমারও বিরাট ক্ষতি হয়ে গেল। একজন অভিভাবককে হারালাম।’ তার পর ফের চুপচাপ সৌরভ। তাঁর মুখের দিকে তাকালে শুধু ডানে-বাঁয়ে ঘাড় নাড়লেন। যার অর্থ একটাই, আর না; আর কিচ্ছু বলতে চান না তিনি।