Thu. Jun 19th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

awdqwfil;j;wifwejkmখোলা বাজার২৪ ॥ মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ :কিডনি হচ্ছে আমাদের দেহের রক্ত পরিশোধনের অঙ্গ। আমরা যেসব খাবার খেয়ে থাকি তার পুষ্টি সরাসরি আমাদের দেহে ছড়ায় না। বরং খাবার গ্রহনের পর তার একটি অংশ কিডনি থেকে রক্তে যায়। এবং রক্তের মাধ্যমে পুরো দেহে সঞ্চালিত হয়। এছাড়াও শরীরে জমে থাকা অনেক রকম বর্জ্যও পরিশোধিত হয় কিডনিতে। কিডনির নানা সমস্যার মধ্যে সবচাইতে বড় সমস্যা হচ্ছে কিডনিতে পাথর হওয়া। কিডনিতে পাথর হওয়ার সমস্যা বেশ মারাত্মক একটি সমস্যা। যদি কোনো কারণে কিডনিতে খনিজ পদার্থ আটকে যায় বা যে কোনো ব্যাকটেরিয়ার কারণে কিডনি দেহের বর্জ্য ঠিক মত পরিশোধিত করতে পারে তখন তা জমা হতে থাকে কিডনির ভেতরে। আর একেই আমরা মূলত কিডনির পাথর হিসেবে জানি। কিন্তু ঠিক কি কি কারণে এই কিডনি তার সঠিক কাজ করতে পারেন না তা জানেন কি? চলুন জেনে নেয়া যাক চিকিৎসকের ভাষায় কিডনিতে পাথর হওয়ার কারণগুলো সম্পর্কে যা হয়তো আপনার জানা নেই।

১) লেবু জাতীয় খাবার খুব কম খাওয়া
ডঃ রানা চৌধুরী জানান, ‘লেবু, কমলা,মালটা ইত্যাদি ধরণের citrus ফল কম খাওয়ার কারণে কিডনিতে পারথ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। কারণ এই ধরণের ফলমূলে থাকে সাইট্রেট যা কিডনিতে পাথর হওয়া রোধে সহায়তা করে’। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এই ধরণের ফল অবশ্যই খাবেন। যদি তেমন কিছু নাও পান তাহলে পানিতে লেবু চিপে পান করতে পারেন। তবে অবশ্যই তা পরিমিত পর্যায়ে।

২) পালং শাক বা অক্সালেট সমৃদ্ধ খাবার বেশী খাওয়া
পালং শাকে অনেক বেশী মাত্রায় অক্সালেট থাকে। অক্সালেট দেহের ক্যালসিয়ামের সাথে মিশে যায় এবং মূত্রনালির মাধ্যমে বের হয়ে যায়। এতে করে দেহে অক্সালেটের মাত্রা বেড়ে যায় যা কিডনিতে জমা হতে থাকে পাথর হিসেবে।

৩) ক্যালসিয়ামের অভাব
দেহে ক্যালসিয়ামের অভাব হলে তা কিডনিতে পাথর জমার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। খাবারে পরিমিত ক্যালসিয়াম না থাকা এবং ক্যালসিয়ামের অভাব পূরণ না হওয়ার কারণে কিডনিতে পাথর জমার সম্ভাবনা প্রায় ২০% বৃদ্ধি পায় বলে জানান ডঃ রানা।

৪) অতিরিক্ত পরিমাণে লবণ খাওয়া
অনেকেই খাবারে অনেক লবণ খান যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। কারণ লবণের সোডিয়াম খুব সহজে কিডনি দূর করতে পারে না এবং তা জমা হতে থাকে কিডনিতে। এছাড়াও অতিরিক্ত সোডিয়াম সমৃদ্ধ খাবারের কারণেও কিডনিতে পাথর জমার সম্ভাবনা বাড়ে।

৫) মাইগ্রেনের ঔষধ ও ব্যথা নাশক ঔষধ
যারা মাইগ্রেনের সমস্যায় ভোগেন তারা অতিরিক্ত মাথাব্যথার থেকে মুক্তি পেতে ঔষধ সেবন করেন। কিন্তু এই ঔষধের সবচাইতে বড় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে কিডনিতে পাথর জমার সম্ভাবনা। কারণ এই ধরণের ঔষধ মূত্রনালির পিএইচ এর মাত্রা বৃদ্ধি করে থাকে যা কিডনিতে পাথর জমতে সহায়তা করে।

৬) অতিরিক্ত সোডা অর্থাৎ কোমল পানীয় পান করা
অতিরিক্ত পরিমাণে কোমল পানীয় পানের কারণেও কিডনিতে পাথর জমে। এই ধরণের কোমল পানীয়তে প্রচুর পরিমাণে ফসফরাস থাকে যা মূত্রকে অ্যাসিডিক করে তোলে। এছাড়াও এইধরনের অস্বাস্থ্যকর পানীয়তে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে। এই অস্বাস্থ্যকর চিনিও কিডনিতে পাথর জমার জন্য দায়ী।

৭) পরিমিত পানি পান না করা
কিডনির কাজ হচ্ছে দেহের বর্জ্য ছেঁকে দেহকে টক্সিনমুক্ত করা। আর এই কাজটি কিডনি করে পানির সহায়তায়। যদি আপনি পানি পরিমিত পান না করেন তাহলে কিডনি সঠিকভাবে দেহের বর্জ্য দূর করতে পারে না যা কিডনিতে জমা হতে থাকে পাথর হিসেবে। সুতরাং পরিমিত পানি পান করুন।
ডঃ রানা চৌধুরী জানান, ‘এইসকল কারণে কিডনিতে পাথর জমার সম্ভাবনা অনেক বেশী, সুতরাং সাবধান থাকা খুবই জরুরী। এছাড়াও যাদের পরিবারের ইতিহাসে কিডনির সমস্যা রয়েছে তারা আরও বেশী সতর্ক থাকুন। কারণ তাদের কিডনির সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা অন্যান্যদের তুলনায় আরও বেশী থাকে। তাই এমন কোনো কাজ যে কারণে কিডনির সমস্যা বৃদ্ধি পায় এবং কিডনি তার স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারায় এমন কিছুই করা উচিত নয়। এবং যদি কিডনি এবং মূত্র জনিত কোনো সমস্যা হয় তাহলে যতো দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে পরামর্শ গ্রহণ করে সেই অনুযায়ী চলা উচিত’।