খোলা বাজার২৪ ॥ বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫
দীর্ঘ ৮৬ বছরেও চাঁদপুরে আগাম ঈদ উদযাপন নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার অবসান হয়নি। হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা দরবার শরীফের প্রায় লক্ষাধিক অনুসারী এবারও আরব দেশসূমহের সঙ্গে সংগতি রেখে একদিন ঈদুল আজহা উদযাপন করবে। সে অনুযায়ী বৃহস্পতিবার চাঁদপুরের ৪০টি গ্রামে ঐ দরবার শরীফের অনুসারীরা দেশের নিয়মের একদিন আগে ঈদ পালন করবে। ১৯২৮ সালে হাজীগঞ্জ উপজেলার রামচন্দ্রপুর মাদরাসার তৎকালীন অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ ইছহাক খান আরব দেশ সমূহের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ঈদ উদযাপনের শুরু করেন। কিন্তু স্থানীয় গ্রামবাসী অসহযোগিতা করলে সেটি ভেস্তে যায়। দেশে সরকারি নিয়মের বাইরে একদিন আগে ঈদ পালনের উদ্দেগ গ্রহণের দায়ে মাওলানা খানকে মাদরাসার অধ্যক্ষের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। ধনাঢ্য ও প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান মাওলানা খান ওই বছরই চলে আসেন নিজ গ্রাম একই উপজেলার সাদ্রায়। আরব দেশসমূহের রীতিনীতি অনুযায়ী ধর্ম-কর্ম পালনের জন্য প্রথমে নিজ গ্রামে শুরু করেন ব্যাপক গণসংযোগ। গ্রামের অসহায়, দুস্থ মুসলমানদের প্রচুর আর্থিক সাহায্য দিয়ে আরব দেশগুলো সঙ্গে সংগতি রেখে একদিন আগে ঈদসহ সকল প্রকার ধর্মীয় অনুষ্ঠান উদযাপন প্রথা চালু করেন। এদিকে একদিন আগে ঈদের জামাত করা নিয়ে মতবিরোধের সৃষ্ট সংঘর্ষে ১৯৮৬ ও ‘৮৭ সালে দুই ঈদে দু’শতাধিক মানুষ আহত হয়। এরপর থেকে প্রতি বছর সাদ্রাসায় ঈদের দিন ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সাদ্রা ছাড়াও জেলার ৪০টি গ্রামের একাংশে ওই পীরের অনুসারীরা একদিন আগে ঈদ উদযাপন করেন। গ্রামগুলো হচ্ছে, হাজীগঞ্জ উপজেলার বলাখাল, শ্রীপুর, মনিহার, বরকুল, অলীপুর, বেলচোঁ, রাজারগাঁও, জাকনি, কালচোঁ, মেনাপুর, ফরিদগঞ্জ উপজেলার শাচনমেঘ, খিলা, উভারামপুর, পাইকপাড়া, বিঘা, উটতলী, বালিথুবা, শোল্লা, রূপসা, গোয়ালভাওর, কড়ইতলী, নয়ারহাট, মতলবের মহনপুর, এখলাসপুর, দশানী, নায়েরগাঁও, বেলতলীসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম। এছাড়া চাঁদপুরের পার্শ্ববর্তী নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ভোলা ও শরীয়তপুর জেলার কয়েকটি স্থানে মাও. ইছহাক খানের অনুসারীরা একদিন আগে ঈদ উদযাপন করেন।