খোলা বাজার২৪ ॥ বৃহস্পতিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫
সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে চাঁদপুরসহ দেশের প্রায় দেড় শতাধিক গ্রামে আজ ঈদুল আযহা পালন হচ্ছে। রাজধানীর কোনো কোনো স্থানেও অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঈদুল আযহার জামাত। সকাল থেকেই ঈদের জামায়াতে অংশ নিতে দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন অনেক মুসল্লী।
রাজধানীর পান্থপথে অবস্থিত শ্যামলি কমিউনিটি সেন্টারের পাশেও ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। বাসাবো থেকে আসা কয়েকজন মুসল্লি প্রতিবেদককে এ কথা জানান।
রাজধানী ছাড়া দেশের প্রায় দেড় শতাধিক গ্রামেও অনুষ্ঠিত হচ্ছে ইদুল আযহা। হাজীগঞ্জ উপজেলার বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের সাদ্রা হামিদিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবু বকর জানান, একই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মরহুম মাওলানা আবু ইছহাক ইসলামের এসব ধর্মীয় রীতিনীতি প্রচলন শুরু করেন। মাওলানা ইছহাকের মৃত্যুর পর থেকে তার ৬ ছেলে এ মতবাদের প্রচার চালিয়ে আসছেন। এদের মধ্যে তার বড় ছেলে আবু যোফার মোহাম্মদ আবদুল হাই সাদ্রাভী অন্যতম।
তবে দেশের মুন্সীগঞ্জ, শরিষতপুর, বরিশাল, মাগুরা জেলার বেশ কিছু এলাকার গ্রামসমূহসহ চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, ফরিদগঞ্জ, মতলব দক্ষিণ ও কচুয়া উপজেলার ৪০টি গ্রামে প্রায় ৮৬ বছর ধরে এভাবে রোজা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়ে আসছে।
যেসব জেলার মধ্যে আজ ঈদ পালন হবে- হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা, সমেশপুর, অলিপুর, বলাখাল, মনিহার, বেলঁেচা, জাঁকনি, প্রতাপপুর, গোবিন্দপুর, দক্ষিণ বলাখাল। এছাড়া ফরিদগঞ্জ উপজেলার-সেনাগাঁও, বাশারা উভারামপুর, উটতলী, মুন্সিরহাট, মূলপাড়া, বদরপুর, পাইকপাড়া, সুরঙ্গচাইল, বালিথুবা, কাইতাড়া, নুরপুর, শাচনমেঘ, ষোল্লা, হাঁসা ও চরদুখিয়া। মতলব দক্ষিণ উপজেলার দশআনী, মোহনপুর, পাঁচআনী ও কচুয়া উপজেলার উজানি গ্রাম রয়েছে।
সাদ্রা দরবার শরীফের গদিনশীন মাওলানা আবু যোফার আবদুল হাই জানান, সৌদি আরবের সাথে বাংলাদেশের সময়ের ব্যবধান মাত্র ৬ ঘন্টা। ৬ ঘন্টা ব্যবধানের জন্য রোজা ও ঈদ পালনে বাংলাদেশে একদিন/দুইদিন ব্যবধান হতে পারে না।
তিনি আরো বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় সাদ্রা হামিদিয়া দাখিল মাদ্রাসা মাঠে ঈদুল আজহার প্রধান জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়।
প্রায় শতবছর আগে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের সাদ্রা দরবার শরীফের পীর ও সাদ্রা ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মরহুম মাওলানা আবু ইছহাক ইংরেজী ১৯২৮ সাল থেকে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ইসলামের সব ধর্মীয় রীতিনীতি প্রচলন শুরু করেন।
দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত মাদ্রাসার ছাত্ররা সাদ্রা মাদ্রাসায় পড়ালেখা শেষে তাদের স্ব-স্ব গ্রামে গিয়ে এই নিয়ম প্রচলন করেন। ফলে দেশের প্রায় দেড় শতাধিকগ্রামে বর্তমানে এই নিয়মে আগাম ঈদ পালিত হচ্ছে। সাদ্রা গ্রামের মুসল্লীরা ইসলামের চার মাযহাবের মধ্যে হানাফি মাযহাবের অনুসারী বলে জানা গেছে।