Sun. May 4th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪ ॥ শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫
15হজ পালনকালে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ পদ পিষ্টে সৌদি আরবের মিনায় শতশত হাজির নিহতের ঘটনায় সৌদি আরবের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ত্রুটিকেই দায়ী করেছে ইরান।
ইরান বলেছে, মিনার দুর্ঘটনায় তাদের অন্তত ৪৩ জন নাগরিক নিহত হয়েছে। আর এই দুর্ঘটনার জন্য সৌদি নিরাপত্তা ব্যবস্থার ত্রুটিই দায়ী। ইরানের মতে সৌদি সরকার হাজিদের জন্য যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে তা ছিল ত্রুটিপূর্ণ।
কিন্তু সৌদি আরবের স্বাস্থ্যমন্ত্রী খালিদ আল ফালিহ এই দুর্ঘটনার জন্য হাজিদেরকেই দায়ী করেছেন। আল আখবারিয়া টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, হাজিরা কর্তৃপক্ষের বেধে দেওয়া নিয়ম লঙ্ঘন করার ফলেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। অনেক হাজিই হজের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত টাইম-টেবিল অনুসরণ না করেই চলাফেরা করছিল। আর তাতেই অতিরিক্ত ভিড়ের চাপ সৃষ্টি হয়ে এই প“লনের ঘটনা ঘটে।
অতিরিক্ত গরমেই নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েন হাজিরা
হাজীরা যদি কর্তৃপক্ষের দিক-নির্দেশনা মেনে চলত তাহলে এই ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো যেত। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য দ্রুত এবং স্বচ্ছ তদন্ত করার প্রতিশ্র“তিও দিয়েছেন।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় এই গণপ“লনের ঘটনা শুরু হয়। এর কিছুক্ষণ আগেই মাত্র সৌদি আরবের বেসামরিক প্রতিরক্ষা সার্ভিস টুইটারে জানায় যে তারা মক্কা থেকে তিন মাইল দূরে অবস্থিত মিনার একটি গণজটলা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক সুদানি হাজি জানান, এবারসহ তিনি চারবার হজ করতে এসেছেন। এই চারবারের মধ্যে এবারের হজই ছিল সবচেয়ে দুর্বলভাবে সংগঠিত।
তিনি বলেন, ‘প“লনের ঘটনার আগে হাজিরা পানিশুন্যতায় ভুগছিলেন এবং অনেকে অজ্ঞান হয়ে পড়ছিলেন; একে অপরের গায়ের উপর হেলে পড়ছিলেন। এমন সময় তার এক সৌদি সহযাত্রী তাকে বলেন, ‘সাবধান হও! শিগগিরই ভয়ানক কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে।’
বৃহস্পতিবার হাজিরা মিনার পাঁচতলা উচু স্থাপনা জামরাত ব্রিগেডে চড়ে শয়তানের উপর পাথর নিক্ষেপের সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে। জামরাত ব্রিগেড নামের এই স্থাপনাটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে ১০০ কোটি ডলার। গত কয়েক বছর ধরেই এই স্থাপনাটি ব্যবহার করেছেন হাজিরা।
দেখতে গাড়ি পার্কিংয়ের গ্যারেজের মতো প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ এই স্থাপনাটি প্রতি ঘন্টায় একসঙ্গে ৩ লাখ হাজিকে শয়তানের উপর পাথর নিক্ষেপের জন্য ধারণ করতে সক্ষম।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই মুজদালিফা থেকে পাথর কুড়িয়ে বোতলে ভরে মিনায় হাজির হচ্ছিলেন হাজিরা। আগের দিন বুধবার মিনা থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে আরাফাত পাহাড়ের পাদদেশের ময়দানে হজের প্রধান অনুষ্ঠানটি পালিত হয়।
আরাফাত ময়দান থেকে ক্লান্ত-শ্রান্ত হাজিরা যখন আসছিল তখন এতো বিশাল জনস্রোতের সৃষ্টি হয় যে, শৃঙ্খলা রক্ষার্থে তা সামাল দেওয়ার জন্য সৌদি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা আরফাত ময়দানের রাস্তাগুলোকে মানবপ্রাচীর তৈরি করে ঘিরে ফেলে। এসময় কয়েকটি জেট বিমান থেকে হাজিদেরকে ঠা-া রাখতে পানিও ছিটিয়ে দেওয়া হচ্ছিল।
এ বছর হজের প্রধান দিন বুধবার আরফাতের ময়দানে প্রায় ২০ থেকে ৩০ লাখ হাজী জড়ো হয়েছিল।