Wed. Mar 12th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪ ॥ রবিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫
86এখন পর্যন্ত সৌদি আরবের পক্ষ থেকে কোন দেশের কতজন হাজি মারা গেছেন তার একটা প্রাথমিক হিসেব দেয়া হয়েছে। এক লাখ সেনা সদস্য ছাড়াও পদপৃষ্ট ঘটনার পর বেশ কয়েকটি বিশেষ বাহিনী মোতায়েন করে সৌদি আরব সরকার। জামারাত সেতুর কাছ থেকে তারা নিহত হাজির লাশ ও আহত হাজিদের উদ্ধার করে।
তবে সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে মিনায় নিহত হাজিদের একটি তালিকা দেয়া হয়েছে। তাতে দেখা যায়, মিনায় পদপৃষ্ট হয়ে আলজেরিয়ার ৪, বাংলাদেশ ১, বুরুন্ডির ১, ক্যামেরুনের ২০, চাদের ১১, মিসরের ১৪, ইরানের ১৩৪, ভারতের ১৮, ইন্দোনেশিয়ার ৩, কেনিয়ার ৩, মরক্কোর ৮৭, নাইজারের ১৯, নাইজেরিয়ার ৩, হল্যান্ডের ১, পাকিস্তানের ১১ , সেনেগালের ৫ , সোমালিয়ার ৮ ও তাঞ্জানিয়ার ৪ জন হাজি মারা গেছে।
সৌদি আরবের মিনায় পদপৃষ্ট হয়ে ৭৬৯ জন হাজি মারা গেলেও অনেকের আশঙ্কা আরো বেশি হাজি মারা গেছেন। তবে কোন দেশের কতজন হাজি মারা গেছেন তা নিয়েও শঙ্কা রয়েছে এবং এ হতাহতের সুনির্দিষ্ট কোনো হিসাব না পেয়ে হাজিদের স্বজনরা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। তবে মিনায় ওই পদপৃষ্টের ঘটনা ঘটার পর সৌদি আরবের পক্ষ থেকে ইরানের ৩’শ হাজির বিরুদ্ধে দোষারোপ করে বলা হচ্ছে তাদের উচ্ছৃঙ্খলভাবে চলাচলের জন্যে ওই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। পাল্টা ইরান বলছে, সৌদি যুবরাজের মিনায় আগমন উপলক্ষ্যে কয়েকটি সড়ক বন্ধ ও একটি একমুখী সড়ক দ্বিমুখী করে দেয়ার ফলে বিশাল মানবস্রোত সহসা মুখোমুখি হয়ে জনসুনামির মত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েই সহস্রাধিক হাজি পদপৃষ্ট হয়ে মারা যায়।
সৌদি আরবের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে ৭৬৯ জন হাজি মারা গেলেও কে কোন দেশের নাগরিক তা বলা কঠিন ও সময় সাপেক্ষ। এশিয়া ও আফ্রিকার অনেক দেশের সরকার তাদের কতজন হাজি মারা গেছেন তা ঘোষণা করেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত সৌদি আরবের পক্ষ থেকে মৃত আড়াই’শ হাজির তালিকা দেয়া সম্ভব হয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে দেশটির ১৪ থেকে ১৮ জন হাজি মারা গেছেন। পাকিস্তান বলছে ৮ থেকে ১১ জন হাজি মারা গেছে। ইরান বলছে দেশটির ১৩৪ জন হাজি মারা গেছে এবং ৮৫ জন আহত হয়েছে। এছাড়া ইরানের ৩৬৫ জন হাজি এখনো নিখোঁজ রয়েছে। বেসরকারি হিসেবে বাংলাদেশের ১৫ জন হাজি মারা গেছে ও ৯৮ জন হাজি এখনো নিখোঁজ রয়েছে।
সৌদি আরবে নিহত, আহত ও নিখোঁজ হাজিদের স্বজনরা হাসপাতাল, থানা সহ বিভিন্ন তথ্যকেন্দ্রে অনবরত খোঁজ নিচ্ছেন। তারা জানেন না তাদের স্বজনরা বেঁচে আছেন না কি মারা গেছেন। আব্দুল্লাহ নামের একজন হাজি সৌদি গেজেটকে জানান, তিনি এখনো তার প্রতিবেশিকে খুঁজে পাননি যার বয়স ৩৬ বছর বয়স। তারা এক সঙ্গে হজ করতে এসেছিলেন। মিসরের এই হাজি বলেন, মিনার সব হাসপাতালে তিনি তার প্রতিবেশির খোঁজ নিয়েছেন। হাসপাতালগুলো থেকে বলা হচ্ছে এ নামে কারো নাম তাদের তালিকায় নেই। তারা বলছে মর্গে যেতে। কিন্তু জীবিত কিংবা মৃত কোনোভাবেই আমি আমার প্রতিবেশির হদিশ পাচ্ছি না। মিসরের আরেক হাজি জানান, তার স্ত্রী মিনায় পদপৃষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হবার পর ক্যাম্পে পড়ে আছেন। হজের বাকি আনুষ্ঠানিকতা তার পক্ষে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। তারেক নামে আরেক হাজি তার স্ত্রীর খোঁজে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাচ্ছেন কিন্তু কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না। মোহাম্মদ বিলাল নামে আরেক হাজি তার বৃদ্ধ মায়ের খোঁজ এখনো পাননি। মিনায় পদপৃষ্ট হয়ে অনেক হাজি মারা যাওয়ার পর বিলাল তার মায়ের ফোন বন্ধ পাচ্ছেন এবং কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না। প্রথমেই আমি আমার মা মারা গেছেন কি না খোঁজ নেই। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো খোঁজ পাইনি। মর্গে থেকে মর্গে আর হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ঘুরছি কিন্তু কোনো খবর পাচ্ছি না।
তথ্য কেন্দ্রে দেখা গেল এক সৌদি নারীকে যিনি তার ৪৩ বছর ভাইয়ের কোনো খোঁজ না পেয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। এই মহিলা জানান, প্রতিটি হাসপাতালে আমি আমার ভাইয়ের ছবি দিয়েছি, মর্গে মর্গে খোঁজ নিয়েছি, তন্নতন্ন করে খুঁজছি কিন্তু কোনো কূলকিনারা পাচ্ছি না। এক পর্যায়ে ওই মহিলার স্বামী হন্তদন্ত হয়ে তথ্যকেন্দ্রে এলেন, তার চোখ গড়িয়ে পড়ছে অশ্রুজল। কিন্তু স্ত্রীকে তার ভাইয়ের কোনো খোঁজ দিতে পারলেন না। সৌদি গেজেট