খোলা বাজার২৪ ॥ সোমবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী ১ অক্টোবর দেশে ফিরতে পারছেন না। তার দেশে ফেরা কয়েকদিন বিলম্ব হবে। কারণ, তার দুই চোখেই অপারেশন করানোর জন্য পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তিনি চোখ অপারেশন করাবেন। তবে দিনক্ষণ এখনও ঠিক হয়নি। ঈদের কারণে খালেদা জিয়া কিছুটা সময় নেন। এ তথ্য দিয়েছেন খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্য।
খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, তিনি চিকিৎসকের কাছে গেছেন। চোখের পরীক্ষা করিয়েছেন। এরপর চিকিৎসক সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলেছেন, চোখের অপারেশন করাতে হবে। খালেদা জিয়া আবারও চোখের চিকিৎসকের কাছে যাবেন। এরপর তার সঙ্গে আলোচনা করেই অপারেশনের দিন ও সময় ঠিক করবেন। তার দুই চোখেই অপারেশন হবে তবে তা একসঙ্গে নয় আলাদা আলাদা করে। একটি করার কয়দিন পর দ্বিতীয়টি হবে এই বিষয়টি নিয়েও আলোচনা করবেন। এই কারণে তিনি ১ অক্টোবর দেশে ফিরে আসবেন এই জন্য আগাম টিকিট কাটলেও তা হচ্ছে না। ইতোমধ্যে তার টিকিটের তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত হাঁটুর চিকিৎসা শুরু করতে পারেননি। চোখের চিকিৎসা শেষ করেই হাঁটুর চিকিৎসা করাবেন।
এদিকে খালেদা জিয়া লন্ডনে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আট বছর পর এই প্রথমবারের মতো বিদেশে ঈদ পালন করেন। সেখানে বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী, সমর্থকদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় ছাড়াও তিনি দীর্ঘ বক্তৃতা করেন। সেখানে তিনি রাজনৈতিক বিভিন্ন বিষয়, সরকারের সমলোচনা, দেশের জনগণের সমস্যা ও আগামী দিনে তিনি কি করবেন সেই সব কিছু পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন। নেতাকর্মী ও প্রবাসী সমর্থকরা বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঈদ করতে পেরে তারাও আনন্দিত।
তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, খালেদা জিয়া ঈদের দিন কাটিয়েছেন তারেক রহমানের বাসায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। আর সন্ধ্যায় নেতাকর্মীদের ও সমর্থকদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এদিকে খালেদা জিয়া লন্ডন ছাড়াও দেশে তিন জায়গাসহ মোট চার জায়গাতে কোরবানি দিয়েছেন। লন্ডনে তারেক রহমানের স্ত্রী জোবায়দা রহমানের শাশুড়ির পছন্দের বিভিন্ন আইটেম রান্না করেন। এর মধ্যে ছিল অলিভ ওয়েল-এর পোলাও ও অল্প মসলা দিয়ে আদার ঝালে মাংস। স্যুপ ও ফলমূলও ছিল তার খাদ্য তালিকায়। ছিল তার পছন্দের জুস ও অন্যান্য খাবার।
সূত্র জানায়, খালেদা জিয়া খুব বেশি খান না। এই কারণে আগেই ছেলের বউকে তার জন্য বেশি কিছু তৈরি না করার পরামর্শ দেন। তিনি প্রাধান্য দেন ছেলে ও তারা কি খেতে পছন্দ করেন সেটা তৈরি করার উপর। খালেদা জিয়া নিজেও রান্না ঘরে গেছেন। তারেক রহমানসহ পরিবারের সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে দুপুরের খাবার খেয়েছেন। তারেক রহমানের বাসা ছোট এই কারণে ঈদের দিন বেশি মানুষ সেখানে যেতে পারেননি। যারা তারেক রহমানের খুব কাছের কেবল তারাই গেছেন। এই সময়ে তারেক রহমান, তার কন্যা ও কোকোর দুই কন্যা অতিথিদের আপ্যায়ন করেছেন।
সূত্র জানায়, অনেক দিন পর খালেদা জিয়া লন্ডনে ভালো সময় কাটাচ্ছেন। একাকীত্বও অনেকটা ঘোচাতে পেরেছেন। তিনি ওয়ান ইলেভেনের পর থেকে আট বছর ধরে দেশে একাই থাকছেন। নানা দিক থেকে চাপে থাকা খালেদা জিয়া মনে করেছেন লন্ডনে গেলে তার চিকিৎসার পাশাপাশি সময়টাও ভালো কাটবে। তিনি যাওয়ার আগে তার দলের নেতাদের বলে গেছেন, আমি আমার পরিবারের সঙ্গে লন্ডনে ঈদ করব সেটা ভালো হবে। তিনি লন্ডনে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানেও সেই কথা বলেছেন।