Sun. May 11th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪ ॥ মঙ্গলবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫
23পূর্ণদিবস কর্মবিরতিতে গিয়েও সরকারের টনক নাড়াতে না পেরে আরো কঠোর কর্মসূচিতে যাচ্ছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। নতুন আন্দোলনের অংশ হিসেবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা বর্জন করতে পারেন তারা। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সকল কার্যক্রম অচল করে দেয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকে শিক্ষকরা কঠোর আন্দোলনের ডাক দিতে পারেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
ঈদের আগে বেতন কাঠামো পর্যালোচনা, পদমর্যাদা নিশ্চিতকরণ ও স্বতন্ত্র বেতন কাঠামোর জন্য পূর্ণ দিবস কর্মবিরতিতে যান দেশের ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। কিন্তু তাতেও কোনো সমাধান না আসায় অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকে তারা আরো কঠোর আন্দোলনের ডাক দিতে যাচ্ছেন। আগামী ৬ অক্টোবর বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের বৈঠক শেষে কঠোর আন্দোলনের ডাক আসতে পারে ফেডারেশন সূত্রটি জানিয়েছে।
সূত্রমতে, পূর্ণ দিবস কর্মবিরতিতে গিয়েও সরকারের টনক নড়াতে না পেরে কঠোর হচ্ছেন শিক্ষকরা। নতুন আন্দোলনের অংশ হিসেবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা বর্জন করতে পারেন শিক্ষকরা। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সকল কার্যক্রম অচল করে দেয়ার পরিকল্পনাও করছেন তারা।
পরবর্তী আন্দোলন কর্মসূচি প্রসঙ্গে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব ও ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘বাংলাদেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আমাদের চাপ দিচ্ছেন, আমরা যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা বয়কট করি। এখন সরকার যদি আমাদের বিষয়ে আন্তরিকতা দেখায় তাহলে হয়তো আমাদের এতো কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে না। অন্যথায় আমরাও এ বিষয়টি বিবেচনা করবো।’
শিক্ষকদের কঠোর আন্দোলনের প্রস্তুতির মধ্যেই গত রোববার সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘বেতন বৈষম্য দূরীকরণে জন্য গঠিত মন্ত্রিসভা কমিটির ওপর আস্থা রাখার জন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানায়। শিক্ষকদের সকল সমস্যার সমাধানের উদ্দেশ্যে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমার বিশ্বাস, এ কমিটি সকল উদ্ভূত সমস্যার সমাধান করবে। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান হবে।’
জানা গেছে, আগামী ৫ অক্টোবরের মধ্যে বেশিরভাগ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ঈদের ছুটি শেষ হবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দাপ্তরিক কার্যক্রম চালু হবে বৃহস্পতিবার, পহেলা অক্টোবর থেকে। পূর্ণাঙ্গরূপে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর ৬ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। ওই বৈঠকে সার্বিক পরিস্থিতি আলোচনা-পর্যালোচনা শেষে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা করবেন শিক্ষকরা।
শিক্ষকদের আন্দোলনের মধ্যেই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইতোমধ্যেই দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে ৯ অক্টোবর। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাগুলোও অক্টোবর মাসের মধ্যে শেষ হবে। চলবে নভেম্বর পর্যন্ত।
ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে শিক্ষকরা নতুন আন্দোলন কর্মসূচির চিন্তাভাবনা করছেন। বেশিরভাগ শিক্ষকরাই ভর্তি পরীক্ষা বর্জনের পক্ষে রায় দিয়েছেন বলে এক জ্যেষ্ঠ শিক্ষক নেতা জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে পরীক্ষা গ্রহণের সময় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সকল কার্যক্রম অচল করে দেয়ার বিষয়ে রায় দিয়েছেন শিক্ষকরা। ৯ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার প্রথম দিনেই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন ওই শিক্ষক নেতা।
প্রসঙ্গত, গত ৭ সেপ্টেম্বর সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নতুন জাতীয় বেতন স্কেলের প্রস্তাবে অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। এর আগে থেকেই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বেতন ও পদমর্যাদা নিশ্চিতকরনের জন্য এবং পৃথক বেতন কাঠামোর দাবি জানিয়ে আন্দোলন করছেন।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর ‘বেতন বৈষম্য দূরীকরণ-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’ গঠন করে সরকার। এ কমিটির প্রধান করা হয় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে। এর অন্য সদস্যরা হলেন—শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান।
এরপর গত ১৯ সেপ্টেম্বর শিক্ষামন্ত্রীর বাসভবনেও বৈঠক করে শিক্ষক নেতারা। সেদিন শিক্ষক নেতারা মন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন, নিজেদের দাবি-দাওয়ার বিষয়ে অনঢ় অবস্থানের কথা। যদিও শিক্ষকদের সব সমস্যা অতি দ্রুতই সমাধান হবে এবং তারা খুব শিগগিরই হাসিমুখে ঘরে ফিরবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।