খোলা বাজার২৪ ॥ মঙ্গলবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫
সৌদি আরবের মিনায় প“লিত হয়ে অন্তত দুই হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক হাজি ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার সংস্থা আইআরআইবি’র সংবা“াতাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, প্রচ- ভিড়ের চাপ এবং পানির পিপাসায় এতগুলো মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী অসহায় হাজিদের সাহায্যে এগিয়ে আসেনি বলেও তিনি জানান। তার পুরো বক্তব্য পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো:
“শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করতে গিয়ে দেখি জনতার চাপ বেড়ে যাচ্ছে। এ সময় আমি ঘন ঘন দরুদ শরীফ ও কলেমাসহ অন্যান্য যা কিছু জানা ছিল তা পাঠ করতে থাকলাম। কিন্তু কোনোকিছুতেই কাজ হলো না। মানুষের শরীরের নীচে চাপা পড়ে গেলাম। কয়েকজন বন্ধু আমাকে সেখান থেকে বের করে আনলেন। আবার কালেমায়ে শাহাদাত পড়লাম। আল্লাহতায়ালাকে বললাম, হে আল্লাহ! আমি এসেছি তোমার দীদার লাভের জন্য। যদি হায়াত থাকে তাহলে আমার প্রতি দয়া করো। যদি আমার প্রতি দয়া না করো তাহলে অন্তত আমার স্ত্রী ও শিশুসন্তানদের প্রতি দয়া করো। এ সময় হঠাৎ আমার চোখের সামনে সবকিছু অস্পষ্ট হয়ে গেল, সবকিছু অন্ধকার দেখছিলাম। আমার গোটা জীবনের সব দৃশ্য কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আমার চোখের সামনে দিয়ে চলে গেল। শুধু এতটুকুই মনে করতে পারলাম যে, আমার মেয়ে আমাকে বাবা, বাবা বলে ডাকছে। এভাবে প্রায় চার ঘণ্টা জীবিত মানুষ ও লাশের স্তুপের মাঝখানে থাকার পর হঠাৎ মনের শক্তি সঞ্চয় করে চোখ খুলে উঠে দাঁড়ালাম।”
মিনার এই দুঃখজনক ঘটনা কীভাবে ঘটল জানতে চাইলে তিনি জানান, “কর্তৃপক্ষ সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছিল এবং ঘটনাস্থলে কোনো নিরাপত্তা কর্মী ছিল না। শত শত মানুষের মৃত্যুর পর উদ্ধারকর্মীরা এসে পৌঁছায়। তীব্র গরম ও দাবদাহের নীচে সেখানে কোনো খাবার পানি ছিল না। প্রচ- ভিড়ের চাপ এবং পানির পিপাসায়ই এতগুলো মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এমনকি তাদের হেলিকপ্টারগুলিও নীচে নেমে এসে একটু বাতাস দেয়ার চেষ্টা করেনি। ভিড়ের চাপে সবারই নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল এবং অনেকে দম বন্ধ হয়ে মারা গেছে।”