Wed. Jun 18th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪ ॥ মঙ্গলবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫
108সৌদি আরবের আইন-কানুন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ কোরআনের দেখানো পথ অনুসরণ করে। যার ফলে মেয়েরা অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়। কিছুদিন আগে পর্যন্ত সৌদি আরবে নারীরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারতেন না। ইতিহাসের পাতায় তারা প্রথম ভোটাধিকার প্রাপ্ত হয়, যখন রাজা আবদুল্লাহ নারী ও পুরুষের জন্য সমান ভোটাধিকারের ঘোষণা করেন। তার ঘোষণা করার ৪ বছর পর নারীরা প্রথম ভোট দেন।
সৌদিতে নারীরা যে সকল কাজ করতে পারেন না, তার মধ্যে ৭টি কাজের বর্ণনা নিম্নে দেয়া হল-
১. নারীরা গাড়ি চালাতে পারবে না:
সৌদি আরবে কখনোই কোন নারী গাড়ি চালায় না। এই ব্যাপারে কোন অফিসিয়াল আইন না থাকা সত্ত্বেও সেখানে কোন নারী এই কাজ করেন না।সৌদি আলেমদের ধারণা নারীরা গাড়ি চালালে এতে সামাজিক মূল্যবোধের পতন হতে পারে এবং তারা চালাতে পারবেন না বলেও তর্ক রয়েছে। সৌদি আরবের একটি মহিলা দল ২০১১ সালে এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য সংগঠিত হয়েছিল। কিন্তু তাদের সেই সংঘটন বেশি সাফল্য লাভ করতে পারে নি।
২. তারা একা কোথাও যেতে পারবে না:
সৌদি আরবের পথে নারীদের সবসময় একজন পুরুষ সঙ্গী নিয়ে চলতে হয়। তাদের একা চলাচল নিষিদ্ধ। তাদেরকে যারা সবসময় গার্ড দিয়ে রাখেন তাদের ‘মাহরাম’ বলা হয়। নারীরা যেখানেই যাক না কেন তাদের সাথে সবসময় এই মাহরাম থাকেন। নারীরা যেন কোন পাপকার্যে লিপ্ত না হয়, এ জন্য তাদের সাথে সবসময় এরকম গার্ডের ব্যবস্থা করা হয়। একবার এক কিশোরীর গণধর্ষণের কথা রিপোর্ট করা হলে, পরবর্তীতে তদন্তে জানা যায় তার সাথে সে মুহূর্তে কোন মাহরাম ছিলেন না। সৌদি সরকার সম্প্রতি মাহরাম ছাড়া ভ্রমণ করার ব্যাপারে মহিলাদের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে দেয়ার বিষয়ে বিবেচনা করছেন বলে ঘোষণা করেছেন।
৩. নারীরা খেলায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না:
সৌদি আরব মহিলাদের অংশগ্রহণ ছাড়া অলিম্পিক গেমস খেলা হোস্ট করার জন্য প্রস্তাব করেছিলেন। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি ( আইওসি ) সৌদি আরব বাহরাইনের সঙ্গে যৌথভাবে সম্মিলিত হয়ে তাদের কোন প্রস্তাব সমর্থন করেনি। সৌদির সমাজ ব্যবস্থা নারীদের খেলাকে গ্রহণযোগ্য মনে করেন না।
৪. পুরুষের সাথে খুব কম কথা বলা:
অপরিচিত পুরুষদের সাথে মেয়েরা অনেক কম সময় কথা বলতে পারে। স্থানীয় গণমাধ্যম থেকে জানা যায়, সেখানে ব্যাংকে, অফিসে ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছেলে ও মেয়েদের জন্য ভিন্নভাবে সকল কিছু ভাগ করে দেয়া আছে। সৌদির বেশিরভাগ অংশে যেমন- জনপরিবহন, উদ্যান, সৈকত ও অন্যান্য অংশে নারী ও পুরুষের জন্য আলাদা আলাদা স্থান রয়েছে। বে আইনিভাবে কারও সাথে মেশার ব্যাপারে সেখানে কঠোর আইন রয়েছে।
৫. মেয়েদের জন্য কোন জিম নেই:
নারীদের ঘরের বাহিরে শরীর চর্চা করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাদের এই রক্ষণশীল সমাজ ব্যবস্থা অনেকাংশে আলেম ও নেতাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়। মেয়েদের স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন জিম ক্লাস বা ক্রীড়া দল নেই। আপাতত কিছু বেসরকারি জিমের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যেখানে শুধু নারীরা শরীর চর্চা করেন। এছাড়াও সৌদিকে অলিম্পিক থেকে একবার নিষিদ্ধ করা হয়েছিল কারণ তারা কখনও কোন মেয়ে অংশগ্রহণকারীকে পাঠায় নি।
৬. ভ্যালেন্টাইন’স ডেতে লাল পোশাক পরিধান করা নিষেধ:
সৌদি আরবে কোন ভ্যালেন্টাইন’স ডে পালন করা হয় না। সেদিন লাল রংয়ের কোন ধরণের কাপএ পরিধান করা নিষেধ। কেউ যদি লাল রং পরিধান করেন তাহলে তাদের স্কুলের গেট থেকে বিদায় করে দেয়া হয়। এই নিষেধাজ্ঞার পেছনে প্রধান কারণ হল, এই উৎসব কোন ধর্মীয় উৎসব নয়।
৭. নারীরা বাহিরে কাজ করতে পারবেন না:
সৌদিতে পুরুষেরা যে সকল কাজ করতে পারেন তা নারীরা করতে পারেন না। সেখানে নারীরা শিক্ষা ও মেডিক্যাল ফিল্ডে কাজ করতে পারেন। কাজ করার সময় নারীদের সবসময় নিজেদের মুখ ঢেকে রাখতে হয়। আবার যে সকল ক্ষেত্রে পুরুষের সংখ্যা বেশি, সেখানে নারীদের সুযোগ দেয়া হয় না।