খোলা বাজার২৪ ॥ বুধবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫
রংপুর নগরের তাজহাট বিহারিপাড়ায় মঙ্গলবার বিষাক্ত মদ পান করে ৭জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ১০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। আরও দুইজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
নিহতরা হলেন, নগরের তাজহাটের বাসিন্দা দুই ভাই রংমিস্ত্রি নাসিম (৪০) ও মনু (৩৫), মজিদ (৩৫), গফুর (৩০), খুশি দাস (৩২), আবদুল আজিজ (৩৫) এবং পাশের বালাটারি বীরভদ্র এলাকার বাসিন্দা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আজমেরি (৩৫)।
পুলিশের ধারণা, ওই মদ বিষাক্ত ছিল এবং এর বিষক্রিয়ায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। একই মদ পান করার পর অসুস্থ হওয়া দুজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই দুজন হলেন মজিদ (৩৫) ও জসিম (৩০)। গতকাল সন্ধ্যা ৬টার দিকে মজিদ মারা যান বলে হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান জাকির হোসেন নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেছেন, হাসপাতালে আনা দুই ব্যক্তি অ্যালকোহলের বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। চিকিৎসাধীন জসিমের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, গতকাল সন্ধ্যার পর মদ পান করা আরও তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এঁরা হলেন খুশি দাস (৩২), মিঠুন দাস (২৮) ও আবদুল আজিজ (৩৫)। এর মধ্যে খুশি দাস ও আবদুল আজিজ মারা যান।
ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে মিঠু (৩৮) নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। মিঠুর বিরুদ্ধে এলাকায় মদ বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। এ অভিযোগে পুলিশ ইতিপূর্বে তাঁকে চারবার গ্রেপ্তার করেছিল।
মদ্যপানে মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে গতকাল দুপুরে পুলিশ সুপার আবদুর রাজ্জাক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ বি এম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী ঘটনাস্থলে যান। অভিযুক্ত মিঠুর বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় বাড়িতে কেউ ছিল না।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মিঠুর বাড়ির ১২টি স্থানে গর্ত করে পাতিলে রাখা মদ উদ্ধার করে পুলিশ। গত সোমবার রাত ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ওই এলাকায় মিঠুর বাড়ির সামনের গাছতলায় মদ্যপানের আসর বসে। গতকাল ভোরের দিকে মদ্যপায়ীরা অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই চারজন মারা যান। পরে সন্ধ্যায় হাসপাতালে মারা যান আরও তিনজন।
এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে পুলিশ ঘটনাস্থল ও এর আশপাশের এলাকা থেকে ১০ ব্যক্তিকে আটক করেছে।
আটককৃতরা হলো- তাজহাট এলাকার আমজাদ (২৫), বিজয় (৩০), আসমা (৩০), আয়নাল (৩৮), তারা বানু (৫০), আবদুল আজিজ (৪৮), সৈকত মৃধা (২৩), উৎপল (৩৩), সাতমাথা চকবাজার এলাকার আজিমুল (২৫) ও তাজহাট নিচুতলা এলাকার আনোয়ার (৩২)। এঁদের সবার বিরুদ্ধে মদ বিক্রি, সরবরাহ ও সংরক্ষণের অভিযোগ রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
রংপুর কোতোয়ালি থানার ওসি আবদুল কাদের জিলানী বলেন, বিষক্রিয়ায় এঁদের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের পর আসল কারণ জানা যাবে।
মদ বিক্রির অভিযোগে মিঠুর বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় ১৬টি মামলা রয়েছে বলে ওসি আরও জানান।