খোলা বাজার২৪ ॥ বুধবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫
রাজধানীর গুলশানে ইতালির নাগরিক তাবেলা সিজারকে গুলি করে হত্যার ঘটনা অত্যন্ত সুপরিকল্পিত বলে মন্তব্য করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা। তারা বলেছেন, যে সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘে পুরস্কৃত হয়েছেন, ঠিক সেসময়ই এই হত্যাকাণ্ড। এ হত্যাকাণ্ড অত্যন্ত সুপরিকল্পিত। শেখ হাসিনার অর্জনকে ম্লান করার জন্যই এ হত্যাকাণ্ড। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া লন্ডনে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সেই ষড়যন্ত্রের যোগসূত্র থাকতে পারে। বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় নেতারা এ কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘চ্যাম্পিয়ন্স অব দ্য আর্থ’ এবং ‘আইসিটি অ্যাওয়ার্ড’ পুরস্কার পেয়েছেন। এ অর্জনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনার প্রস্তুতি হিসেবে এ বর্ধিত সভার আহ্বান করা হয়েছে। সভার প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, যখন আমাদের নেত্রী বিশ্বের বড় পুরস্কার অর্জন করেছেন, দেশের জন্য দু’টি পুরস্কার বয়ে এনেছেন, ঠিক সেই মুহূর্তে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি আর্ন্তজাতিক শক্তির সঙ্গে মিলে গুলশানে একজন নিরীহ ইতালিয়ান নাগরিককে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। এই হত্যা সাধারণ হত্যা নয়। তারা অন্ধকারে একটা মিশন করে নিরীহ লোকটাকে হত্যা করেছে। একজন মোটরসাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে থেকেছে। দুইজন মোটরসাইকেল থেকে নেমে এসে পিস্তল দিয়ে গুলি করে ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে সেখান থেকে চলে গেছে। এতে স্পষ্টভাবে প্রমাণ হয়, এটা অত্যন্ত সুপরিকল্পিত হত্যা। শেখ হাসিনার অর্জনকে ম্লান করে দেওয়ার জন্যই এটা করা হয়েছে। দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যারা হত্যা করেছে। তারা কিন্তু আপনাদের দিকে তাকিয়ে আছে। তারা খোঁজ নিচ্ছে। কারণ তারা জানে, এই জঙ্গিদের বিরুদ্ধে একমাত্র বঙ্গবন্ধুর সৈনিকেরা রুখে দাড়াঁতে পারে। আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, এমন একটা সময়ে এই ভদ্রলোককে হত্যা করা হয়েছে, যে সময় জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের প্রায় ১২৭টি দেশের প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। যখন চ্যাম্পিয়ন্স অব দ্য আর্থ পুরস্কারের ভূষিত হয়েছেন। আইসিটিতে পুরস্কার পেয়েছেন। ঠিক সেই সময় এ হত্যাকাণ্ড সুপরিকল্পিত বলে আমরা মনে করি। হানিফ বলেন, যারা ক্ষমতায় থেকে দেশে লুটপাট করে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল, দেশকে জঙ্গিবাদের আখড়ায় পরিণত করেছিল। সেই দলের নেত্রী খালেদা জিয়া লন্ডনে বসে আজকে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। সেখান থেকে ষড়যন্ত্রের নীলনকশা বুনছেন। আমরা মনে করি, আজকে এই বিদেশি নাগরিকের হত্যাকাণ্ড এবং লন্ডনে বসে খালেদা জিয়ার ষড়যন্ত্র; দু’টোর মধ্যে যোগসূত্র থাকতে পারে। এটা তদন্ত করে দেখা উচিত। তিনি বলেন, আমরা জেনেছি। যতটুকু তথ্য-প্রমাণ গণমাধ্যমে এসেছে। এতে এই ভদ্রলোকের কোনো ব্যক্তিগত শত্রু ছিল বলে শুনিনি। এই বিদেশি নাগরিককে হত্যা করা হয়েছে; কী কারণে, এটা অবশ্যই খতিয়ে দেখার প্রয়োজন আছে। আগামী ৩ অক্টোবর ঢাকা শহরে মানুষের ঢল নামিয়ে এ ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব দিতে হবে। আমাদের প্রমাণ করে দিতে হবে, বাংলার জনগণ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আছে। আর বাংলার জনগণ যতদিন তার পাশে আছে, ততদিন কোনো দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটাতে পারবে না। তার ক্ষতি করতে পারবে না। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সহ-সভাপতি মুকুল চৌধুরী, শেখ বজলুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. সেলিম, আওলাদ হোসেন, শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ