খোলা বাজার২৪ ॥ শুক্রবার, ০২ অক্টোবর ২০১৫
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গণসংবর্ধনার অন্তরালে ব্যাপক শোডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দল গুছিয়ে আন্দোলনে নামা হবে বিএনপির এমন হুমকির কারণেই প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনার অন্তরালে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে বলে জানা গেছে, জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ’ এবং ‘আইসিটি টেকসই উন্নয়ন পুরস্কার’লাভ করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এই গণসংবর্ধনা দেয়া হবে। পাশাপাশি বিএনপি-জামায়াত জানুয়ারিতে আবারও আন্দোলনের নামে জ্বালাও-পোড়াও করতে পারেন। এ জন্যই আওয়ামী লীগের শক্তি সম্পর্কে তাদের আগাম জানান দিতেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এই কর্মসূচি সফল করার লক্ষ্যে দলীয় হাইকমান্ডের নির্দেশনায় এরই মধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। দলের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের পাশাপশি ঢাকা ও এর আশপাশের দলীয় সংসদ সদস্যদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছে দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা।
৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে ইমেজ সংকটে ক্ষমতাসীন এ দলটি। এর পর থেকেই বিভিন্ন ইস্যুতে ব্যাপক সোডাউন করছে আওয়ামী লীগ। এর মাধ্যমে দেশ-বিদেশে নিজেদের অবস্থান সম্পর্কে জানান দিচ্ছেন তারা।
যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে আগামী ৩ অক্টোবর দেশে ফেরার পরেই প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে লক্ষাধিক নেতাকর্মী ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গণভবন পর্যন্ত রাস্তার দুই ধারে অবস্থানের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে আওয়ামী লীগ। এ কর্মসূচি সফল করতে ইতোমধ্যে নেতাকর্মীদের প্রতি কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে দলীয় হাইকমান্ড।
এদিকে বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনার দেয়ার জন্য প্রস্তুতি বৈঠক করা হয়েছে। বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্ক সফর শেষে আগামী ৩ অক্টোবর দুপুর দেড়টায় দেশে ফিরবেন। ওই সময় হযরত শাহজালাল বিমান বন্দর থেকে গণভবন পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনাকে গণসংবর্ধনা দেয়া হবে’।
একই দিন বিকালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কারর্যালয়ে ঢাকা মহানগরের এক বর্ধিত সভায় নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, ‘ আমরা এমন কর্মসূচি হাতে নিয়েছি যে, ৩ তারিখের পর জঙ্গিরা এ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাবে। ঐ দিন আমরা একটি নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করবো।’
এই পরিস্থিতিতে দলীয় শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশনায় দলের অন্যতম ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ এবং যুবলীগ সক্রিয় থাকবে রাজপথে। ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, ঐ দিন তারা ৫০ হাজারেরও অধিক নেতাকর্মী নিয়ে মাঠে থাকার পরিকল্পনা করছে। একই সাথে যুবলীগও তাদের নেতাকর্মীদের প্রস্তুত রেখেছে বলেও জানা গেছে। হাতে জাতীয় ও দলীয় পতাকা এবং ফুলের পাপড়িসহ রাস্তার দুই পাশের আই’লাইনে অবস্থানের নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে নেতাকর্মীদের প্রতি।
একই সাথে সাধারণ মানুষের যাতায়াতে যেন কোন বিঘœ না ঘটে সে বিষয়েও কঠোর নির্দেশনা রয়েছে দলীয় উচ্চপর্যায় থেকে। প্রধানমন্ত্রীর এ পুরস্কার দেশ এবং দলীয় ইতিহাসে সর্বোচ্চ বলেও মনে করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।