খোলা বাজার২৪ ॥ শুক্রবার, ০২ অক্টোবর ২০১৫
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগামীকালের সংবর্ধনায় ব্যাপক জনসমাগম ঘটানোর প্রস্তুতি নিয়েছে আওয়ামী লীগ। ইতোমধ্যে এ নিয়ে কয়েক দফা দলীয় প্রস্তুতি সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল সকালে রাজধানীর ধানম-িতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রস্তুতি সভা শেষে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে শরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, এই অর্জন কোনো দলের একার নয়। প্রধানমন্ত্রীর এই অর্জন পুরো জাতির। তাই আমি দল, মত, জাতি, বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শরিক হতে আহ্বান জানাচ্ছি।
জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সর্বো”চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ’ এবং ‘আইসিটি টেকসই উন্নয়ন পুরস্কার’ লাভ করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গণসংবর্ধনা দেওয়ার প্রস্তুতি উপলক্ষে এই যৌথসভার আয়োজন করা হয়। আগামীকাল দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে শেখ হাসিনাকে এই সংবর্ধনা দেওয়া হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীরের এক বক্তব্যের জবাবে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, যখন বাঙালি জাতি কিছু অর্জন করে, তখন এই দলটি সেই ভালো কাজের প্রশংসা না করে জাতিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। এরা আসলে ভালো কাজের প্রশংসা করতে জানে না।
আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর এই সদস্য বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া সংবর্ধনার কারণে যাতে সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে না হয়, সেজন্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল হানিফের নেতৃত্বে একটি কমিটি করা হয়েছে। এই কমিটি সবকিছু তদারকি করবে।
বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দলীয় নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি বিশিষ্টজন ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের উপস্থিতি বৃদ্ধির বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। প্রস্তাব এসেছে, দলের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা বিমানবন্দরের লাউঞ্জে থাকবেন। সঙ্গে থাকবেন শিল্পী, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, কবি, সাংবাদিকসহ বিশিষ্টজনেরা। প্রধানমন্ত্রীর গণভবন যাত্রার পথে পথে ফুল, প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন, ব্যানার নিয়ে শুভেচ্ছা জানাবেন নেতা-কর্মীরা।
শুধু কেন্দ্র নয়, গণসংবর্ধনাকে সফল করতে বৈঠক করছে মহানগর আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোও। গত ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের বৈঠকে গণসংবর্ধনা কর্মসূচির রুট ঘোষণা করেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।
তিনি জানান, বিমানবন্দর থেকে খিলক্ষেত এলাকার নেতৃত্বে থাকবেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন। খিলক্ষেত থেকে কুড়িল ফ্লাইওভার এলাকার নেতৃত্বে থাকবেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও বেসামরিক বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ও সাবের হোসেন চৌধুরী।
কুড়িল ফ্লাইওভার থেকে হোটেল রেডিসন এলাকার নেতৃত্বে থাকবেন সানজিদা খানম ও হাবিবুর রহমান মোল্লা। হোটেল রেডিসন থেকে কাকলী মোড় পর্যন্ত থাকবেন কামাল আহমেদ মজুমদার। কাকলী মোড় থেকে জাহাঙ্গীর গেটে থাকবে সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলো। জাহাঙ্গীর গেট থেকে র্যাংগস ভবন এলাকায় থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও আসলামুল হক। র্যাংগস ভবন থেকে জাতীয় সংসদ ভবন পর্যন্ত নেতৃত্বে থাকবেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীর নানক, খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. সেলিম। সংসদ ভবন থেকে গণভবন এলাকায় নেতৃত্ব দেবেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
আওয়ামী যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও গণসংবর্ধনা কর্মসূচির সমন্বয়ক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বাংলাদেশের মানুষকে গৌরবান্বিত করেছেন। তাই আমরা মনে করি, উদ্যোগটি দলীয় হলেও সাধারণ মানুষের ঢল রাস্তায় নেমে আসবে প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা জানাতে। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, আমরা সংবর্ধনা সফল করতে প্রস্তুতি নিয়েছি। আশা করছি, ওই বিমানবন্দর থেকে গণভবন লোকে লোকারণ্য হয়ে যাবে।
প্রস্তুতি সভায় অংশ নেওয়া ঢাকা মহানগর ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোর একাধিক নেতা জানিয়েছেন, তাদেরকে ব্যাপক লোক সমাগমের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ ও অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, সম্পাদকম-লীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, অসীম কুমার উকিল, মৃণাল কান্তি দাস, কার্যনির্বাহী সদস্য সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ।