Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪ ॥ শুক্রবার, ০২ অক্টোবর ২০১৫
24প্রায় চার বছর ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব দিয়ে দল চালানোর পর এবার পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব চূড়ান্ত করেছে বিএনপি। আর প্রত্যাশিতভাবেই সেই দায়িত্ব পাচ্ছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দলের জন্য ‘নিবেদিত প্রাণ, পরীক্ষিত’ নেতার পুরস্কার হিসেবেই বিএনপির মহাসচিব হচ্ছেন এই নেতা। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার লন্ডন সফরে বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে বলে সেখানকার একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।
বিএনপির পঞ্চম কাউন্সিলের পর দলের মহাসচিবের দায়িত্ব পান প্রয়াত নেতা খন্দকার দেলোয়ার হোসেন। ২০১১ সালের ১৬ মার্চ তিনি মারা যান। এরপর দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব করা হয়। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত তাকে ভারমুক্ত করা হয়নি। সম্প্রতি আদালত থেকে জামিন নিয়ে প্রায় দুই মাস সিঙ্গাপুর-নিউইয়র্ক চিকিৎসা শেষে ২১ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরেছেন তিনি।
একাধিক দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে ষষ্ঠ কাউন্সিল করার চিন্তা ভাবনা করছে বিএনপি। এ লক্ষ্যে লন্ডনে অবস্থান করা বিএনপি নেত্রীর (খালেদা জিয়া) সঙ্গে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারমান তারেক রহমানের বিশদ আলোচনা হয়েছে। দীর্ঘদিন পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব না থাকায় দলে সৃষ্ট শূন্যতার বিষয়টি অনুধাবন করেছে হাইকমান্ড। ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে মির্জা আলমগীরের দায়িত্ব পালন নিয়ে সন্তুষ্ট বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব। তারেক রহমানও ইতিবাচক । সেজন্য আসন্ন কাউন্সিলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ভারমুক্ত করার ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দাবি সূত্রের।
দলের কয়েকজন দায়িত্বশীল নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব করার জন্য বিএনপিতে চাপ বাড়ছে। দলের রাজনৈতিক পরিস্থিতি চরম প্রতিকূলে যাওয়ায় এই চাপ আরো বেড়ে গেছে। সিনিয়র নেতা থেকে সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা চান, যাকেই মহাসচিব করা হোক না কেন দলের বৃহত্তর স্বার্থে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আর নয়। এজন্য দলের হাইকমান্ড পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সূত্র জানায়, মহাসচিব পদ পাওয়ার দৌড়ে ফখরুল ইসলামের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা। তবে শেষ পর্যন্ত সবাই ছিটকে পড়েছেন। দলের আপোদকালীন সময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার পুরস্কার হিসেবে তাকে মহাসচিব করা হচ্ছে। দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব পেয়ে মির্জা আলমগীর বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটির বিরোধ নিষ্পত্তির চেষ্টা করেন এবং প্রত্যাশার চেয়েও বেশি সফল হন। ঢাকা-চট্টগ্রামের নেতাদের বিরোধ যাতে প্রকাশ্যে না আসে, সেই উদ্যোগ নিয়েও সফল হন তিনি। দলের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনার পাশাপাশি সরকারবিরোধী আন্দোলন কর্মসূচি সংঘাতপূর্ণ না করে শান্তিপূর্ণ করার চেষ্টা চালিয়ে দলের বাইরেও প্রশংসিত হন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে পূর্ণ মহাসচিব করার বিষয়টি ‘বহুল প্রত্যাশিত’ জানিয়ে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, তিনি (মির্জা আলমগীর) মহাসচিব হচ্ছেন, এই বিষয়টি বহু প্রত্যাশিত এবং অতি অনিবার্য। দলের সব নেতা-কর্মীদের কাছেও বহু প্রতিক্ষীত। এর সুরাহা অনেক আগেই হওয়া উচিত ছিলো। কেন হয়নি জানিনা। তবে বিলম্ব হলেও এটাই হওয়া উচিত।
বিএনপির সরকারবিরোধী আন্দোলনে মির্জা আলমগীরের অবদানের কথা উল্লেখ করে দলটির এই শীর্ষ নেতা বলেন, তিনি (মির্জা আলমগীর) অগ্নিপথ পাড়ি দিয়েছেন। দলের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তিনি কবে মহাসচিব হবেন দলের সকল স্তরের নেতা সেই দিনের অপেক্ষায় আছে। বিষয়টি যত দ্রুত হবে ততই ভালো।