খোলা বাজার২৪ ॥ শুক্রবার, ০২ অক্টোবর ২০১৫
র্যাব হেফাজতে মারা যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সহকারী পরিচালক ওমর সিরাজের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন শম্পা অভিযোগ করেছেন, র্যাবের নির্যাতনে তার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গের সামনে শুক্রবার সকালে সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন তিনি।
শম্পা বলেন, ‘তার স্বামী দোষ করলে তার জন্য আইন আছে। আদালত আছে। আদালত তার স্বামীকে শাস্তি দেবে।’
তিনি বলেন, ‘শারিরীকভাবে তার স্বামী সুস্থ ছিল। র্যাব ষড়যন্ত্র করে তার স্বামীকে হত্যা করেছে।’
তবে, র্যাব তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। র্যাব-৪ হেড কোয়ার্টার এর অপারেশন অফিসার এসএসপি মোহাম্মদ মুজাহিদ দ্য রিপোর্টকে জানান, ওমর সিরাজের স্ত্রী আবেগতাড়িত হয়ে এসব কথা বলছেন। যার কোনো ভিত্তি নেই।
তিনি বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছি। এখনও বলছি। ওমর সিরাজ চিকিৎসাধীন অবস্থায় হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে ইন্তেকাল করেছেন।’
এদিকে, মারা যাওয়ার পর বৃহস্পতিবার রাতে ওমর সিরাজের লাশের সুরতহাল করা হয়েছে। শেরেবাংলা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওয়াজেদ আলী সুরতহাল রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন, ওমর সিরাজের বাম হাতের কবজীতে পুরাতন ক্ষত চিহ্ন আছে। ডান হাতের কনুইতেও পুরাতন ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। এ ছাড়া ডান কাঁধের পেছনে লাম্বা কালো দাগ আছে।
এসআই ওয়াজেদ আলী সুরতহাল রিপোর্টে আরও উল্লেখ করেছেন, অসুস্থ অবস্থায় ওমর সিরাজকে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা ৫৫ মিনিটে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭টা ১৫ মিনিটে তার মৃত্যু হয়।
তিনি জানান, লাশের ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে রাত পৌনে ১১টার দিকে সাদা কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় ওমর সিরাজের লাশ ঢামেক মর্গে নিয়ে আসা হয়। তবে লাশের বাহকের পরিচয় জানা যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শেরেবাংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোপাল গণেশ বিশ্বাস জানান, পুলিশের কোনো সদস্য নয়, র্যাবের সদস্যরাই ওমর সিরাজের লাশ ঢামেকে নিয়ে গেছেন।
শেরেবাংলা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আহাদ আলী রাতে দ্য রিপোর্টকে জানান, প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১৮ সেপ্টেম্বর ওমর সিরাজকে আটক করা হয়। ১৯ সেপ্টেম্বর মামলা হওয়ার পর ২১-২২ সেপ্টেম্বর ওমর সিরাজকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। ২৪ সেপ্টেম্বর মামলা র্যাবে হস্তান্তর করা হয়।
ওমর সিরাজের মৃত্যুর খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে র্যাব-৪ এর অপারেশন অফিসার এএসপি মুজাহিদ দ্য রিপোর্টকে বলেন, এ ঘটনায় আর কেউ জড়িত আছে কিনা, তা জানতে ৩০ সেপ্টেম্বর ও ১ অক্টোবর তাকে আরও দুই দিনের রিমান্ডে আনা হয়েছিল। ২ অক্টোবর তাকে কোর্টে হাজির করার কথা ছিল। কিন্তু সন্ধ্যার দিকে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে তিনি মারা যান। কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন, তিনি হার্টএটাকে মারা গেছেন।’
১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর আগারগাঁও ইউজিসি কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে সহকারী পরিচালক ওমর সিরাজ (৩২), বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের স্টোরকিপার রেজাউল করিম (৩২) ও ঈশান ইমতিয়াজ হৃদয় (২২) নামের তিনজনকে আটক করা হয়।