Wed. Mar 12th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪ ॥ শুক্রবার, ০২ অক্টোবর ২০১৫
58জেলার জাজিরায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধেরে ভাইয়ের হাতে ভাই খুন হয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতের ওই ঘটনায় শুক্রবার সকালে জাজিরা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের সমর্থকরা ৩০টি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন দু’জন।
নিহতের স্ত্রীর ভাই মালেক সরদার জানান, জাজিরা উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের চর খোরাতলা গ্রামের সোলায়মান মাদবর পাঁচ ছেলে রেখে মারা যান। মারা যাওয়ার পর তার রেখে যাওয়া স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি সকল ছেলেরা সমান ভাবে ভাগ করে ভোগ দখল করেন। কিন্তু নিহত সামাদ মাদবরের দাদী মারা যাওয়ার পূর্বে ৪৮ শতাংশ জমি তার বড় নাতি অর্থাৎ নিহত সামাদ মাদবরের নামে লিখে দিয়ে যান। সামাদ মাদবরের চার ভাই দাদীর দেওয়া জমির সমান ভাগ চান কিন্তু বড় ভাই সামাদ জমির ভাগ দিতে রাজি ছিলেন না। এ জমি নিয়ে পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সামাদ মাদবর ( ৬০) পাশের গঙ্গানগর এলাকা থেকে ওয়াজ শুনে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ির কাছাকাছি এলে ছোট ভাই মোতালেব মাদবর ও মালেক মাদবর তাদের সহযোগীদের নিয়ে এলোপাতাড়ি ডেগার দিয়ে নৃশংসভাবে বড় ভাই সামাদ মাদবরকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন। এ সময় সামাদ মাদবর বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। একটু পরে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
ওই ঘটনার পর হত্যাকারীরা দ্রুত পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। ওই ঘটনায় নিহতের ছেলে শাহ জালাল বাদী হয়ে শুক্রবার জাজিরা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
হত্যার ওই ঘটনার পর নিহত সামাদ মাদবরের সমর্থকরা বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত সুলতান মাদবর, নুরুল ইসলাম মাদবর, আয়নাল মাদবর, আলমগীর সরদার, মোকলেছ সরদার, হালিম মাদবর, আনোয়ার মাদবর, জলিল ফকির, জালাল ফকির, খালেক ফকির, আনোয়ার ফকির, রহিম মৃধা, জাহাঙ্গীর সরদার, আসলাম সরদার, জব্বার ফকিরসহ প্রতিপক্ষের ৩০টি ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর চালায়।
তাদের হামলায় আহত হন শ্রীমতি বিবি ও নুরজাহান বেগম। পুলিশের উপস্থিতিতে লুটপাট ও ভাঙচুর করা হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ। বর্তমানে ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নিহতের স্ত্রী আয়নামতি বেগম বলেন, ‘আমার স্বামীকে মোতালেব মাদবর ও মালেক মাদবর সন্ত্রাসীদের নিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। আমি এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।’
চর খোরাতলা গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত খোকন ফকিরের স্ত্রী খুকু মনি বলেন, ‘নিহত সামাদ মাদবরের সমর্থকরা বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুরু করে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত বহু বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালায়। এ সময় ২০টি গরু, ১০টি ছাগলসহ মূল্যবান জিনিস লুট করা হয়। আমাদের দুই নারীকে মারধর করা হয়। কিন্তু উপস্থিত থেকেও পুলিশ কোনো ভূমিকা নেয়নি।’
লুটপাটের ঘটনা অস্বীকার করে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ এলাকা পরিদর্শন করে। পরে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।’