খোলা বাজার২৪ ॥ শনিবার, ০৩ অক্টোবর ২০১৫
জাতিসংঘের পরিবেশ-বিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন্স অব দ্য আর্থ’ ও আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের ‘আইসিটি অ্যাওয়ার্ড’ পুরস্কার পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আজ (শনিবার) গণসংবর্ধনা দেয়া হবে। আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা উপলক্ষে সব প্রস্তুতি গতকালই সম্পন্ন করা হয়েছে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ অধিবেশনে যোগদান শেষে আজ দুপুর দেড়টায় শেখ হাসিনা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে জনসমাগম ঘটিয়ে এ সংবর্ধনা দেয়া হবে।
এ উপলক্ষে আওয়ামী লীগ, অঙ্গসংগঠন ও ১৪ দলীয় জোটের শরীকদের মধ্যে সাজ সাজ রব বিরাজ করছে।সংবর্ধনার প্রস্তুতি উপলক্ষে গত কয়েক দিনে সরকার, আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের মধ্যে ইতিমধ্যে একাধিক প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল এই উপলক্ষে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ১৪ দলের যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী গোটা জাতিকে গৌরবান্বিত করেছেন। তাই জাতির পক্ষ থেকে তাকে এ গণসংবর্ধনা দেয়া হবে। এর জন্য আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।’সংবর্ধনা অনুষ্ঠানকে সুশৃক্সখল করতে বিমানবন্দর থেকে গণভবন পর্যন্ত ৮টি অংশে বিভক্ত করা হয়েছে।
স্থানীয় সংসদ সদস্যদের নেতৃত্বে ১৪ দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এসব রুটে দাঁড়িয়ে কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। এর মধ্যে সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, জাহিদ আহসান রাসেল ও ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লার নেতৃত্বে বিমানবন্দর থেকে খিলক্ষেত; রাশেদ খান মেনন, একেএম রহমত উল্লাহ ও সাবের হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বে খিলক্ষেত থেকে কুড়িল ফ্লাইওভার; হাবিবুর রহমান মোল্লা ও সানজিদা খানমের নেতৃত্বে কুড়িল ফ্লাইওভার থেকে হোটেল রেডিসন; কামাল আহমেদ মজুমদারের নেতৃত্বে হোটেল রেডিসন থেকে কাকলী মোড়; কাকলী মোড় থেকে জাহাঙ্গীর গেট পর্যন্ত দলের সহযোগী সংগঠনগুলো; জাহাঙ্গীর গেট থেকে র্যাংগস ভবন পর্যন্ত জাহাঙ্গীর কবীর নানক, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দীন, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম ও হাজী মো. সেলিম এবং র্যাংগস ভবন থেকে গণভবন পর্যন্ত ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের নেতৃত্বে স্ব স্ব এলাকার দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকরা অবস্থান নেবেন।
এছাড়া ১৪ দল ও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেবেন।এদিকে প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনা উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে সাজ সাজ রবের সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় গতকাল দলীয় নেতাকর্মীদের সংবর্ধনায় অংশ নেয়ার জন্য বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুন, প্লাকার্ড তৈরি করতে দেখা যায়। বিশেষ করে ঢাকা সিটির মধ্যে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি চোখে পড়ার মতোই।সাজ সাজ বর বিরাজ করছে ১৪ দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে। গত কয়েক দিন ১৪ দলের শরীক অন্যান্য দলীয় নেতাকর্মীরা সংবর্ধনাকে সফল করতে আওয়ামী লীগের সাথে সমন্বয় করে কাজ করছে। আওয়ামী লীগের দলীয় অফিসে গতকালকের সভায়ও ১৪ দলের শরীকরা অংশগ্রহণ করেন। আওয়ামী লীগের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিমসহ পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, কৃষিবিদ, ডিপ্লোমা প্রকৌশলী, আইনজীবী, সাংবাদিক, শিক্ষক নেতৃবৃন্দ, ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, সংস্কৃতিকর্মী, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, নারী সংগঠন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।সভায় আজকের সংবর্ধনায় জনতার ঢল নামিয়ে ঐতিহাসিক জনসমাগম ঘটানোর ঘোষণা দেয় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোট।
ঐতিহাসিক জনসমাগমের মাধ্যমে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের আন্তর্জাতিক প্রভূদের ষড়যন্ত্রের দাঁত ভাঙা জবাব দেয়া হবে বলেও ঘোষণা দেয়া হয়।আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এ অর্জন গোটা জাতির অর্জন। সবাইকে দলীয় সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানানোর অনুরোধ করছি। এসময় দলমত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষকে প্রধানমন্ত্রীর এ গণসংবর্ধনায় অংশ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়।দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের সমন্বয়ক মাহাবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমরা জনতার ঢল নামিয়ে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের আন্তর্জাতিক প্রভূদের ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব দিতে চাই। এ সময় তিনি দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে দুপুর সাড়ে ১২টার মধ্যে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান।ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধরিত্রী কন্যা আখ্যায়িত করছি। পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব বিশ্বের বড় বড় দেশগুলোর হলেও তারা এ দায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসছে না। প্রধানমন্ত্রী অন্যান্য দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে এ দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন।জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এ সফলতার জন্য সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে আমরা সংবর্ধনা দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী কী কী সফলতার জন্য পুরস্কার দু’টি পেয়েছে তা জাতিকে জানাতে অল্প কথায় লিফলেট আকারে প্রচার করতে হবে।উল্লেখ্য, জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় অসামান্য অবদানের জন্য ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ’ এবং তথ্য-প্রযুক্তিতে ব্যাপক সফলতার জন্য ‘আইসিটি অ্যাওয়ার্ড’ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে এ পুরস্কার দেশবাসীকে উৎসর্গ করেছেন।