খোলা বাজার২৪ ॥ শনিবার, ০৩ অক্টোবর ২০১৫
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ‘আপনি যদি মনে করেন ভোট ছাড়াই কালিহাতীতে আপনার দলকে জেতাতে হবে, তবে আমার দল উপ-নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে না।’ তিনি কালিহাতী বাসস্ট্যান্ডে নারী নির্যাতন ও গুলি করে মানুষ হত্যার প্রতিবাদে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে আরও বলেন, ‘আপনার বাবার এক কথায় আমি মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম। তার পায়ের কাছে এক লাখ চার হাজার অস্ত্র বিছিয়ে দিয়েছিলাম। কালিহাতীতেই পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকে সর্বপ্রথম পর্যুদস্ত করেছিলাম। সেই কালিহাতীতে আপনার কুলাঙ্গারেরা ছেলেকে দিয়ে মায়ের ইজ্জত নষ্ট করার দুঃসাহস দেখিয়েছে, মায়ের ইজ্জত নষ্ট করার প্রতিবাদ মিছিলে গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। আপনি কালিহাতীতে আসুন, দেখুন, বিচার করুন।’ কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘পাকিস্তানীরা আমাদের ভোটাধিকার মানে নাই বলেই অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। আজও বাংলাদেশের কোনো মানুষের অধিকার নাই।’ পুলিশকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘বিপদে পড়লে কোনো পুলিশের পক্ষে সরকার দাঁড়ায় না, তাদের সবার আগে কোরবানি করে, তাই তোমরা নারী নির্যাতনকারীদের পক্ষ নিও না।’ তিনি বলেন, ‘নারী নির্যাতন ও গুলি করে মানুষ হত্যার প্রতিবাদে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে প্রতিবাদ সভা আহ্বান করেছিলাম, কিন্তু প্রশাসন নারী নির্যাতনকারীদের পক্ষ নিয়ে একতরফাভাবে ১৪৪ ধারা জারি করে আমাদের সভাকে পণ্ড করার অপচেষ্টা করেছে। কতদিন তারা ১৪৪ ধারা দিবে? যতদিন মানুষ হত্যা ও নারী নির্যাতনের বিচার না হবে ততদিন আমরা প্রতিবাদ করতেই থাকব। তাই আজকের সভা স্থগিত করলাম।’ কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের যুগ্ম-সম্পাদক প্রিন্সিপাল ইকবাল সিদ্দিকী বলেন, ‘কাদের সিদ্দিকী একটি প্রতিবাদের নাম, একাত্তরে যখন বাংলা মায়ের ওপর হামলা হয়েছিল সেদিন তিনি অস্ত্র হাতে প্রতিবাদ করেছেন, পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর যখন সবাই লুকিয়েছিল সেদিনও তিনি প্রতিবাদ-প্রতিরোধ করেছেন, আজও যেখানে অবিচার-অত্যাচার সেখানেই তিনি প্রতিবাদ করছেন।’ প্রসঙ্গত, কালিহাতী উচ্চ বিদ্যালয়ে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের পূর্বনির্ধারিত প্রতিবাদ সভায় একই সময়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ পাল্টা সভা আহ্বান করলে প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে। এ কারণে স্কুল মাঠের পরিবর্তে বঙ্গবীর কালিহাতী বাসস্ট্যান্ডের বল্লা সড়কে সমবেত জনতার উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইল জেলা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম, সহ-সভাপতি এ্যাডভোকেট মিয়া মোহাম্মদ হাসান আলী রেজা, সহ-সভাপতি আবুল হোসেন মল্লিক, হাসমত আলী, আতিকুর রহমান সাদেক প্রমুখ।