খোলা বাজার২৪ ॥ সোমবার, ৫ অক্টোবর ২০১৫
শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতনের মামলায় ক্রিকেটার শাহাদাত হোসেনের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকার মহানগর হাকিম ইউসুফ হোসেন এ আদেশ দেন। একই মামলায় শাহাদাতের স্ত্রী জেসমিন জাহান ওরফে নৃত্য শাহাদাত কারাগারে আছেন। আজ ঢাকার মহানগর হাকিম ইউসুফ হোসেনের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন শাহাদাত। শুনানি শেষে আদালত ওই নির্দেশ দেন। শুনানিতে শাহাদাতের আইনজীবী কাজি নজিবুল্লাহ আদালতকে বলেন, শাহাদাত জাতীয় দলের একজন ব্যস্ততম ক্রিকেটার। ঘটনার (শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতন) সঙ্গে তাঁর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তিনি খেলা নিয়ে সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকেন। ঘর সামলান তাঁর স্ত্রী, যাঁকে গতকাল রোববার কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এই আইনজীবী বলেন, ‘শিশু নির্যাতনের বিচার আমিও চাই। কিন্তু জাতীয় দলের খেলোয়াড় হওয়ায় সার্বিক দিক বিবেচনা করে শাহাদাতের জামিন চাইছি। বিচারকাজ মামলার গতিতেই চলবে।’ মামলার বাদীপক্ষে শুনানি করেন জাতীয় মহিলা আইনজীবী সংস্থার ফাহমিদা আকতার। তিনি আদালতকে বলেন, ‘এই মামলার প্রধান আসামি শাহাদাত। মামলার এজাহার ও নির্যাতনের শিকার শিশুটির জবানবন্দিতে স্পষ্ট হয়েছে, তাকে নির্যাতনের সঙ্গে শাহাদাত জড়িত ছিলেন। তাই আসামির জামিন আবেদন নাকচ করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আবেদন জানাচ্ছি।’ শাহাদাতের স্ত্রী জেসমিনের জামিন ও রিমান্ডের আবেদন গতকাল নাকচ করা হয়। তাঁকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছেন আদালত। গত শনিবার দিবাগত রাতে মালিবাগ থেকে জেসমিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁকে মিরপুর থানায় নেওয়া হয়। গতকাল তাঁকে আদালতে হাজির করে পাঁচ দিন রিমান্ডের আবেদন জানায় পুলিশ। শুনানি নিয়ে আদেশ দেন আদালত। গৃহকর্মী মাহফুজা আক্তার ওরফে হ্যাপিকে (১১) নির্যাতনের অভিযোগে গত মাসের শুরুর দিকে শাহাদাত ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে মিরপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা হয়। মামলাটি করেন জনৈক খন্দকার মোজাম্মেল হক। বাদীর ভাষ্য, কালশীর সাংবাদিক কলোনি এলাকা থেকে মাহফুজাকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান তিনি। শিশুটির কেউ না থাকায় তিনি বাদী হয়ে শাহাদাত ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, ক্রিকেটার শাহাদাত হোসেনের বাসায় সাত মাস আগে কাজে যোগ দেয় মাহফুজা। শাহাদাত ও তাঁর স্ত্রী প্রায়ই তাকে মারধর করতেন, গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দিতেন। ঘটনার পর মাহফুজা পুলিশের কাছে অভিযোগ করে, শাহাদাত ও তাঁর স্ত্রী তাকে মারধর করে আহত করেন। একপর্যায়ে দরজা খোলা পেয়ে সে বাসা থেকে বের হয়ে যায় এবং কালশী এলাকায় এসে অসুস্থ হয়ে পড়ে। মাহফুজা জানায়, তার বাবার নাম আরব আলী ও মা পেয়ারা বেগম। বাড়ি জামালপুর। গণমাধ্যমে এ নিয়ে খবর প্রকাশের পর মাহফুজাকে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেন শাহাদাত।