খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ৬ অক্টোবর ২০১৫
ইতালি ও জাপানের দুই নাগরিকের হত্যাকারীরা যাতে সীমান্ত দিয়ে দেশের বাইরে যেতে না পারে সে জন্য যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। রংপুরে জাপানি নাগরিক ও ঢাকায় ইতালির নাগরিক হত্যার পর বেনাপোলে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হল।
এর আগে রাজধানীর কূটনৈতিক পাড়া গুলশানে সর্বো”চ নিরাপত্তা জোরদার করার পরে এবারই ঢাকার বাইরে বেনাপোলে সর্বো”চ নিরাপত্তা জারি করা হয়েছে।
এদিকে গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সরকারি দলের সাংসদ মঞ্জুরুল ইসলামকে লিটনকে ‘খুঁজে’ পাচ্ছে না পুলিশ। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালানো হলেও সাংসদকে এলাকায় পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ দাবি করেছে। তার বাড়িতেও কেউ সাংসদ লিটন সম্পর্কে কোনো খোঁজ দিতে পারছে না। এর আগে ঢাকায় জাতীয় দলের ক্রিকেটার শাহাদাত হোসেনের বিরুদ্ধে কাজের মেয়ের ওপর নির্যাতনের অভিযোগে মামলা হবার পর পুলিশ তাকে খুঁজতে থাকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার স্ত্রীকে গ্রেফতারের পর শাহাদাত হোসেন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হন।
অবশ্য সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন সাংবাদিকদের জানান, ‘আমরা সাংসদকে গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছি। কিন্তু তাঁকে খুঁজে পাচ্ছি না।’ তিনি বলেন, সুন্দরগঞ্জের বামন ডাঙায় সাংসদের বাড়িতে পুলিশ গিয়েছিল। সেখানে তাঁকে পাওয়া যায়নি।
গত ২ অক্টোবর সাংসদ তাঁর নির্বাচনী এলাকায় শিশু শাহাদাত হোসেনকে (সৌরভ) গুলি করেন। এতে শাহাদাত আহত হয়। তার পায়ে তিনটি গুলি করেন তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন ওই সময় সাংসদ মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। এলাকাবাসী এও জানায়, সাংসদ লিটন প্রায়শ: এধরনের অপকর্ম করে থাকেন। জাতিসংঘের ৭০ তম অধিবেশন যোগদান শেষে দেশে ফিরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, এধরনের ঘটনায় কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। তারপর এ ঘটনায় সাংসদের বিরুদ্ধে সুন্দরগঞ্জ থানায় সাংসদকে একমাত্র আসামি করে একটি মামলা হয়। ইতিমধ্যে পুলিশ সাংসদের দুটি লাইসেন্সকৃত অস্ত্র জব্দ করে এর লাইসেন্স বাতিল করেছে।
তবে মামলা হলেও সাংসদকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। ঘটনার পর পুলিশ তাঁর বাড়িতেও ছিল। সাংসদকে গ্রেপ্তার করতে বিভিন্ন মহল থেকে দাবি তোলা হচ্ছে। স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠনও তাঁকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে আসছে।
এদিকে জেলা পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, সম্ভবত সাংসদ এলাকায় নেই। তিনি ঢাকায় থাকতে পারেন। ওই কর্মকর্তা বলেন, সাংসদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাংসদের একজন ঘনিষ্ঠজন বলেন, ঘটনার পর দুদিন সাংসদ এলাকায়ই ছিলেন। লোক দিয়ে থানায় অস্ত্রও পাঠিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, সাংসদ দেশেই আছেন। দেশ ছেড়ে যাননি, আবার পালিয়ে আছেন, এটাও ঠিক নয়। বলা যায়, সবকিছু থেকে নিজেকে তিনি একটু সরিয়ে রেখেছেন। তবে পুলিশ তাকে খুঁজে পাচ্ছে না।
সার্বিক পরিস্থিতিতে সাংসদকে আর প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না। তাঁর ঘনিষ্ঠজনদের বক্তব্য ‘কিছুটা সরে’ আছেন সাংসদ। তবে তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন এমন অভিযোগ তাঁরা নাকচ করেছেন। মঙ্গলবার সাংসদকে এলাকায় দেখা যায়নি। তিনি কোথায় আছেন সে ব্যাপারে কেউ কোনো তথ্য দিতে পারেননি। গাইবান্ধা শহরে কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন ডিবি রোডে সাংসদকে গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে। একই দাবিতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট মুখে কালো কাপড় বেঁধে শহীদ মিনারে কর্মসূচি পালন করে।