খোলা বাজার২৪ বুধবার, ৭ অক্টোবর ২০১৫
মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখায় গৃহকর্মীকে অমানুষিক শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে গৃহকর্ত্রীর বিরুদ্ধে। বর্তমানে আহত ওই গৃহকর্মী সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনাটি জেলার বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের পাঁচাপাড়া গ্রামের। আহত গৃহকর্মী নাজমা বেগম (১৬) বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের বিছরাবন্দ গ্রামের মনসুর আলীর মেয়ে। এ ঘটনায় নাজমার বাবা মনসুর আলীর দায়ের করা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় পুলিশ মঙ্গলবার বিকেলে গৃহকর্ত্রী রাবেয়া বেগমকে গ্রেফতার করেছে। মামলার এজাহারে জানা যায়, বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের বিছরাবন্দ গ্রামের নাজমা বেগম প্রায় এক বছর আগে গৃহকর্মীর কাজ নেন পাঁচপাড়া গ্রামের আজির উদ্দিনের বাড়িতে। এর তিন মাস পর তাকে মেয়ে লুৎফার শ্বশুরবাড়ি কুমিল্লার লাকসামে পাঠিয়ে দেন গৃহকর্ত্রী রাবেয়া। এ সময় নাজমার বাবা-মা মেয়ের খোঁজ করলে রাবেয়ার পরিবার থেকে বলা হয়, তোমার মেয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গেছে। ঈদের দিন ২৫ সেপ্টেম্বর মেয়েকে দেখতে আবারও পাঁচপাড়া গ্রামের আজির উদ্দিনের বাড়িতে উপস্থিত হন নাজমার বাবা-মা। এ সময় গৃহকর্ত্রী রাবেয়ার মানসিক ভারসাম্যহীন স্বামী আজির উদ্দিন ফাঁস করে দেন সব কথা। তিনি মনসুর আলীকে বলেন, ‘ওই বেটা তর পুড়ি (কন্যা) তো আমার ঘরো বন্দী আছে তিন মাস ধরে। তর পুড়িরে (কন্যা) লইয়া যা।’ এ কথা শুনে মনসুর আলী এলাকার লোকজনের সহযোগিতায় গৃহবন্দী অবস্থা থেকে মেয়েকে উদ্ধার করেন। এ সময় তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে পচন ধরেছে ও শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। গুরুতর আহতাবস্থায় মেয়েটিকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মেয়েটি এখন সেখানেই চিকিৎসাধীন। নাজমার বাবা মনসুর বলেন, ‘তারা আমার মেয়েকে বাসায় আটকে রেখে প্রতিদিন রুটি বানানোর বেলুন দিয়ে পেটাত। প্রতিদিন চলত নির্যাতন। চিকিৎসকরা বলেছেন নাজমার একটি পা কেটে ফেলা হতে পারে। এ ছাড়া আমার মেয়েটির শরীরে অসংখ্য ক্ষতচিহ্ন রয়েছে নির্যাতনের। তিন মাস থেকে আমার মেয়ের সঙ্গে তারা যোগাযোগ করতে দেয়নি।’ এ ঘটনায় ৬ অক্টোবর বড়লেখা থানায় গৃহকর্ত্রী রাবেয়া বেগম, তার মেয়ে লুৎফা বেগমসহ তিনজনকে অভিযুক্ত করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন নাজমার বাবা মনসুর আলী। এ বিষয়ে বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, পুলিশ গৃহকর্ত্রী রাবেয়াকে তাৎক্ষণিক গ্রেফতার করেছে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।