খোলা বাজার২৪ ॥ বৃহস্পতিবার, ৮ অক্টোবর ২০১৫
সিলেট-হবিগঞ্জ-লাখাই ও সরাইল-নাছিরনগর-ঢাকা আঞ্চলিক বিকল্প মহাসড়কের বলভদ্র নদীর ওপর নবনির্মিত ব্রিজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ ব্রিজের উদ্বোধন করবেন তিনি।
এই ব্রিজের উদ্বোধনের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হবে হবিগঞ্জ-৩ আসনের এমপি মো. আবু জাহিরের অন্যতম প্রধান নির্বাচনী প্রতিশ্র“তি। এতে ঢাকার সঙ্গে হবিগঞ্জ তথা বৃহত্তর সিলেটের দূরত্ব কমবে ৪৫ কিলোমিটার। কমবে যাত্রী ভোগান্তি ও যানজট। পাশাপাশি কিশোরগঞ্জ, সরাইল, নাছিরনগর এলাকার লোকজনও এ সড়ক ব্যবহার করতে পারবে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই সড়কে ২০০ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করে। এরই মধ্যে এ প্রকল্পের হবিগঞ্জ-লাখাই অংশ এবং নাছিরনগর অংশের সড়ক ও ব্রিজের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। মূল ব্রিজ নির্মাণের আগে বিকল্প বেইলি সেতু নির্মাণের জন্য এমপি আবু জাহির এক কোটি টাকা বরাদ্দ আনেন। সেটির টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হলে স্থান নির্ধারণের জটিলতা শুরু হয়। ফলে ব্রিজের নির্মাণকাজ বন্ধ থাকে। এরই মধ্যে জাতীয় সংসদে স্পিকারের মাধ্যমে একাধিকবার প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন এমপি আবু জাহির। অনেক দেন-দরবারের পর ২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে বলভদ্র নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণের টেন্ডার আহ্বান করা হয়। এরপর ব্রিজের স্থান নিয়ে বিরোধ আরো তীব্র আকার ধারণ করে। এ অবস্থায় আবু জাহির যোগাযোগমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে মন্ত্রী সচিবকে সরেজমিনে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। যোগাযোগ সচিব তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিলে মন্ত্রণালয়ে হবিগঞ্জ সদর আসনের এমপি আবু জাহির, সরাইল ও নাছিরনগরের এমপি সায়েদুল হক, নাছিরনগর ও লাখাই উপজেলা চেয়ারম্যান এবং সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান, সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে আবারো অতিরিক্ত সচিবকে প্রধান করে একটি উপ-কমিটি গঠন করা হয় সরেজমিনে তদন্তের মাধ্যমে নতুন করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য। অতিরিক্ত সচিব ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে ব্রিজের সম্ভাব্য এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করে একটি প্রতিবেদন দেন। স্থানটি হলো হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার মুড়াকড়ি ও ফান্দাউক বাজার দুটির বাইপাস সড়কের সোজাসুজি একটি স্থান। এই জায়গায় ব্রিজ নির্মাণ করা হলে রাস্তা যেমন সোজা থাকে, তেমনি সরকারের অনেক টাকার সাশ্রয় হয় বলে মত প্রকাশ করে তদন্ত কমিটি। তাদের মতে, ওই স্থানে ব্রিজ নির্মাণ করলে জমি অধিগ্রহণের ঝামেলা থাকে না। নতুবা বহু লোকের ঘর-বাড়ি, জমি ও বিভিন্ন স্থাপনা অধিগ্রহণের আওতায় পড়বে। তদন্ত প্রতিবেদন ও বিশেষজ্ঞ প্রতিবেদনটি যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠায়। প্রধানমন্ত্রী বিশেষজ্ঞদের মতামতকে অগ্রাধিকার দিয়ে প্রস্তাবিত স্থানে দ্রুত ব্রিজ নির্মাণের জন্য নির্দেশ দেন। এর ফলে ব্রিজ নির্মাণের অনিশ্চয়তা কেটে যায় এবং দুটি এলাকার মানুষের উদ্বেগের অবসান হয়। শুরু হয় ব্রিজ নির্মাণ। এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান জানান, ২১ কোটি টাকা ব্যয়ে ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছে। ব্রিজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপলক্ষে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ভিডিও কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়েছে। সংসদ সদস্য মো. আবু জাহির জানান, এই ব্রিজ নির্মাণ এবং আঞ্চলিক মহাসড়কটি চালু করা ছিল তার এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্র“তি। অনেক প্রতিকূলতার পর ব্রিজটি নির্মাণ হয়েছে।