খোলা বাজার২৪ ॥ রবিবার, ১১ অক্টোবর ২০১৫ : ইউনিলিভার বাংলাদেশ সম্প্রতি ঘোষণা করেছে যে, তাদের চিটাগাং কালুরঘাটে অবস্থিত ফ্যাক্টরি থেকে কোন ধরনের বর্জ্য উৎপাদিত হয় না। বর্জ্য উৎপাদন শতভাগ শুন্যে নামিয়ে এনে ইউনিলিভারের এই স্থানীয় শাখাটি তাদের বিশ্বব্যাপী অন্যান্য শাখার সাথে শুন্য বর্জ্য উৎপাদনকারী লীগে যোগ দিয়েছে। ২০১০ সালে গৃহীত ইউনিলিভার সাস্টেনেইবল লিভিং প্ল্যান এর অধিনে ইউনিলিভার বাংলাদেশ কিছু যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে। উৎপাদনে অপচয় এবং বর্জ্য কমিয়ে আনা এই পরিকল্পনারই একটি অংশ যা পরিবেশের উপর তাদের পণ্যের প্রভাব কমিয়ে এনেছে। ইউনিলিভার বাংলাদেশের সাপ্লাই চেইন ডিরেক্টর আমিনুর রহমান বলেন “এই লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য আমাদের ফ্যাক্টরি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। আমাদের উৎপাদনের প্রক্রিয়ায় প্রতিনিয়তই কিছু না কিছু নষ্ট হত-এটি তেল হতে পারে, ক্যামিকেল ও খাবার হতে পারে, এমনকি প্যাকেজিং ও হতে পারে। বছর জুড়েই ইউনিলিভারের কালুরঘাট ফ্যাক্টরিতে উৎপাদন খাতে অপচয় কমাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়। ২০১৫ সালে স্বপ্ন হয়ে আসে সত্যি, অতিরিক্ত ব্যবহৃত সবকিছুই পুনব্যবহার করা হয় যা বর্জ্য হিসেবে আর ফেলে দেয়া হয় না। ক্যান্টিন কিংবা রান্নাঘরের অতিরিক্ত খাবার ফ্যাক্টরির চারিদিকের বাগানে ব্যবহার করা হয়। এতে ফ্যাক্টরির যেমন সৌন্দর্য বর্ধন হয়, তেমনি পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব থাকে না। সাবান তৈরির বর্জ্য গ্লিসারিন, বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটু একটু করে কমিয়ে আনা হয়। উৎপাদন প্রক্রিয়ায় কাঁচামালের সুষম ব্যবহারও কমিয়ে এনেছে বর্জ্য উৎপাদন। এরপরেও যা বর্জ্য তৈরি হয় তা বিভিন্নভাবে কাজে লাগানো হয়। যেমনঃ বাড়তি গ্লিসারিন অন্যান্য ফ্যাক্টরিতে উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ফলশ্রুতিতে গ্লিসারিনের অপচয় পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। বর্জ্য সৃষ্টির অন্য দুটি মুল কারণ হল অনুৎকৃষ্ট কাঁচামাল এবং প্যাকেজিং বর্জ্য, যা ফ্যাক্টরি ইঞ্জিনিয়ারদের উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে কমিয়ে আনা হয়েছে। এই পদ্ধতিতে ২০০৮ সালের তুলনায় প্যাকেজিংয়ে বর্জ্য এর পরিমাণ ৫০% কমিয়ে আনা হয়। ইউনিলিভার বাংলাদেশ পরিবেশের উপর তাদের উৎপাদন প্রক্রিয়ায় উৎপাদিত বর্জ্যের প্রভাব কমিয়ে আনতে উৎসাহী। “উৎপাদন প্রক্রিয়ায় বর্জ্য তৈরি কমানোর জন্য আমরা পানির ব্যবহার অর্ধেকে নামিয়ে এনেছি”। আমিনুর রহমান বলেন, “আমরা এখনো কাজ করছি এনার্জির ব্যবহার এবং উৎপাদন প্রক্রিয়ায় কার্বন ডাই অক্সাইড সৃষ্টি কমিয়ে আনতে। ইউনিলিভার সাস্টেনেইবল লিভিং প্ল্যান ২০১০ সালে শুরু হওয়া এই ইউনিলিভার সাস্টেনেইবল লিভিং প্ল্যান-টি ইউনিলিভার বাংলাদেশের সমৃদ্ধির একটি ব্লু প্রিন্ট। এই পরিকল্পনা শুধুমাত্র সামাজিক উন্নয়নেই সক্রিয় ভূমিকা পালন করে না, বরং এর পাশাপাশি ইউনিলিভারকে দেয় দায়িত্বশীল, লাভজনক প্রবৃদ্ধি। বিশ্বজুড়ে এই পরিকল্পনাটির তিনটি লক্ষ্য আছে- ১। ২০২০ সালের মধ্যে ১০০ কোটিরও বেশি মানুষের সুস্বাস্থ্যে উৎবৃদ্ধি এবং মানব কল্যানে কাজ করা। ২। ২০২০ সালের মধ্যে পণ্য উৎপাদন এবং ব্যবহারে পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব অর্ধেকে নামিয়ে আনা। ৩। ২০২০ সালের মধ্যে কোম্পানির সমৃদ্ধির সাথে সাথে জীবিকা নির্বাহে ভুমিকা রাখা। এছাড়া চার বছর ইউএসএলপি প্রোগ্রামের পর ইউনিলিভার বাংলাদেশ- ১ কোটি ৭৮ লক্ষ মানুষকে লাইফবয় হ্যান্ড ওয়াশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে সাহায্য করেছে তাদের জীবাণুমুক্ত জীবন যাপনে। পিউরইট এর মাধ্যমে ১৪ লক্ষ মানুষকে বিশুদ্ধ পানি পানের নিশ্চয়তা দিয়েছে। চিটাগাং কালুরঘাট ফ্যাক্টরিতে বর্জ্য উৎপাদনের পরিমান শুন্যে নামিয়ে এনেছে। ২০০৮ সালের তুলনায় উৎপাদন প্রক্রিয়ায় পানি ব্যবহারের পরিমান অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে।