খোলা বাজার২৪ ॥ রবিবার, ১১ অক্টোবর ২০১৫ : প্রায় ৪০ কোটি টাকার সমপরিমাণ লিবিয়ান দিনার কিনে ফেঁসে গেছে সরকারি ৩ ব্যাংক। আন্তর্জাতিক মুদ্রা না হওয়ায় এসব দিনার বিক্রি করা যাচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকও সাড়া দিচ্ছে না এসব মুদ্রা কিনে নেয়ার অনুরোধে। সাবেক প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের মৌখিক নির্দেশে লিবিয়া ফেরত বাংলাদেশিদের কাছ থেকে এসব মুদ্রা কিনেছিল ব্যাংকগুলো। ইতোমধ্যেই নতুন দিনার চালু করে এসব মুদ্রা বাতিল করেছে, লিবিয়ার নতুন সরকার। ২০১১ সাল। গাদ্দাফি ও তার বিরোধীদের ক্ষমতার লড়াইয়ে লিবিয়া পরিণত হয় মৃত্যুপুরীতে। জীবন বাঁচাতে পালাতে থাকে বেসামরিক মানুষ। যেখানে খোদ লিবিয়ান নাগরিকরাই নিরাপদ নয় সেখানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবস্থা ছিল আরো করুন। সরকার ও বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগি প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় লিবিয়া থেকে দেশে ফেরত আসে প্রায় ৩৭ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক। সে সময় তাদের সাথে থাকা লিবিয়ান মুদ্রা কেনার জন্য এয়ারপোর্টে থাকা সরকারি ব্যাংকের বুথগুলোকে মৌখিক নির্দেশনা দেন তৎকালীন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী। লিবিয়া ফেরত মানুষের দুর্দশা ও দেশের রিজার্ভের কথা চিন্তা করেই এমন নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। মন্ত্রীর মৌখিক নির্দেশে প্রায় ৪০ কোটি টাকার সমমূল্যের লিবিয়ান দিনার কিনেছিল সরকারি ৩ ব্যাংক। এরমধ্যে সোনালী ব্যাংক ১০ কোটি ১৫ লাখ, জনতা ১৫ কোটি এবং অগ্রণী ১৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকা সমমূল্যের দিনার কিনেছিল। কিন্তু এসব মুদ্রা কিছু দিনের মধ্যেই বাতিল করে দেয় লিবিয়া সরকার। লিবিয়ান এসব মুদ্রা নেয়ার বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকেরও কোনো অনুমতি নেয়নি ব্যাংকগুলো। তাই, গত দুই বছরে রাষ্ট্রায়ত্ত ৩টি ব্যাংক বহুবার বাংলাদেশ ব্যাংককে এসব মুদ্রা নিতে অনুরোধ করলেও তা আমলে নেয়নি প্রতিষ্ঠানটি। কোনো লিখিত নির্দেশনা না থাকায় এসব মুদ্রার দায় নিচ্ছে না সরকারের কোনো মন্ত্রণালয়। ফলে নিরূপায় ব্যাংকগুলোকে ব্যাপক লোকসান গুণতে হচ্ছে। তবে, এখনো কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসব মুদ্রা নিয়ে লিবিয়ান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে একটি দফারফা করবে বলে আশাবাদী ব্যাংকগুলো।