Wed. Mar 12th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪ ॥ রবিবার, ১১ অক্টোবর ২০১৫ : ঋণ করে ঘি খাওয়ার প্রবাদটা নিশ্চয় অনেকের জানা। 82একটা সময় হয়তো ছিল যখন অনেকে ঋণ করে ঘি খেতেন। অথবা প্রয়োজন না থাকার পরও ঋণ করে বিলাসিতায় সেই অর্থ ব্যয় করতেন। কিন্তু সময় পাল্টেছে। এখন অনেকের কাছে ছোটখাটো ঋণও এখন অনেক বেশি প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে। এ কারণেই মানুষের হরেক রকম প্রয়োজন, হরেক রকমের চাহিদাকে সামনে রেখে ঋণও একটি পণ্য হয়ে উঠেছে। চাহিদা ভেদে তাই গ্রাহকের জন্য হরেকরকম ‘ঋণ পণ্য’ সাজিয়েছে ব্যাংকগুলো। ধরা যাক, আপনার বিয়ের কথাবার্তা পাকাপাকি। খুশির এ আয়োজনে বড় দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিয়ের খরচ। পরিবার-পরিজন, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন—কেউই এ দুশ্চিন্তা দূর করতে এগিয়ে আসছে না বা আপনিও তাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন না। তাহলে কি কাটছাঁট করবেন বিয়ের আয়োজনে? টাকার অভাবে পিছিয়ে যাবেন? ‘বিয়ের টাকা ভূতে জোগায়’ প্রবাদের মতো আপনার ভাগ্য হয়তো সুপ্রসন্ন নয়। তাহলে আপনি সাহস করে পা বাড়াতে পারেন ‘বিয়ের ঋণের’ পথে। আপনার বিয়ে-সংক্রান্ত প্রয়োজন মেটাতে দেশের বেশ কয়েকটি ব্যাংক চালু করেছে ‘বিয়ের ঋণ’। এবার তাহলে জেনে নিন কারা দিচ্ছে এ ঋণ। ব্যাংক এশিয়ার গ্রাহক (কনজ্যুমার) ব্যাংকিং বিভাগের প্রধান ফেরদৌস বিন জামান বলেন, এ ধরনের ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে গ্রাহকের ঋণ পরিশোধের আর্থিক সক্ষমতার বিষয়টি সবার আগে বিবেচনা করা হয়। এ কারণে চাকরিজীবীদের ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানের খ্যাতিটা বিশেষ গুরুত্ব পায়। যেহেতু এ ধরনের ঋণে সরাসরি কোনো জামানত নেওয়া হয় না। তাই ঋণ গ্রহীতার বিপরীতে দুজনকে ‘জিম্মাদার’ রাখা হয়। ঋণ গ্রহীতা যেখানে বসবাস করেন, একজন জিম্মাদারকে ওখানকার স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। প্রাইম ব্যাংক: বেসরকারি খাতের প্রাইম ব্যাংক বলছে, সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি সংস্থা, বিদেশি সংস্থা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, বাড়ির মালিক—সবার জন্য ‘বিয়ের ঋণের’ বন্দোবস্ত রয়েছে। পেশাভেদে ১৫ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকা মাসিক আয় বা বেতনের যে কেউ এ ঋণ নিতে পারবেন। গ্রাহকভেদে সর্বনিম্ন ৫০ হাজার থেকে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত বিয়ের ঋণ দিচ্ছে প্রাইম ব্যাংক। মাসিক কিস্তিতে পরিশোধযোগ্য এ ঋণের মেয়াদ পাঁচ বছর। ঋণের বার্ষিক সুদের হার ১২ থেকে ১৫ শতাংশ। আইএফআইসি ব্যাংক: এই ব্যাংকও গ্রাহকভেদে সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকা পর্যন্ত ‘বিয়ের ঋণ’ দিয়ে থাকে। এ ঋণের মেয়াদ সর্বনিম্ন এক থেকে সর্বোচ্চ তিন বছর। বার্ষিক সুদের হার সাড়ে ১৬ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে যদি কোনো গ্রাহক তিন বছর মেয়াদের জন্য এক লাখ টাকা ঋণ নেন, তাহলে ওই গ্রাহককে প্রতি মাসে ঋণের কিস্তি বাবদ পরিশোধ করতে হবে তিন হাজার ৫৪২ টাকা। ট্রাস্ট ব্যাংক: ব্যক্তিগত ঋণের আওতায় বিয়েসহ আরও বেশ কিছু প্রয়োজনে ঋণ-সুবিধা দেয় ব্যাংকটি। তবে ‘বিয়ের ঋণ’ নামে সরাসরি কোনো ঋণ পণ্য নেই। গ্রাহকের প্রয়োজনভেদে সর্বনিম্ন ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকার ঋণ দেওয়া হয়। এক থেকে পাঁচ বছর মেয়াদি এ ঋণের দুই ধরনের সুদের হার রয়েছে। ব্যাংকটির রিটেইল ব্যাংকিং বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, বিয়েসহ নানা ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ঋণ-সুবিধা দেওয়া হয়। সরকারি চাকরিজীবীদের বেলায় ন্যূনতম ১৫ হাজার টাকা ও বেসরকারি চাকরিজীবীদের বেলায় ন্যূনতম ৩০ হাজার টাকা মাসিক বেতনের ব্যক্তিদের এ ঋণ-সুবিধা দেওয়া হয়। চাকরিজীবীদের বেতনের বিপরীতে যে ঋণ-সুবিধা দেওয়া হয়, তার বার্ষিক সুদের হার সাড়ে ১৪ শতাংশ। আর ব্যবসায়ীসহ অন্যদের বেলায় এ ধরনের ঋণের বার্ষিক সুদের হার সাড়ে ১৬ শতাংশ। ব্যাংক এশিয়া: বিয়ের জন্য সরাসরি কোনো ঋণ-সুবিধা না থাকলেও ব্যক্তিগত ঋণের আওতায় ঋণ নিয়ে তা বিয়ের খরচ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। ব্যাংকটি সর্বনিম্ন ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিচ্ছে। ১৫ হাজার টাকা মাসিক আয়ের বিভিন্ন শ্রেণির পেশাজীবীদের এ ঋণ দেওয়া হয়। ঋণের বার্ষিক সুদের হার ১২ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত। ব্যাংকটির গ্রাহক ব্যাংকিং বিভাগের প্রধান ফেরদৌস বিন জামান বলেন, কোনো গ্রাহক যদি পাঁচ বছরের জন্য দুই লাখ টাকা বিয়ের ঋণ নেন, তাহলে মাসিক কিস্তি দাঁড়াবে ৪ হাজার ৭০০ টাকা। ব্যাংক এশিয়া ছাড়াও বেসরকারি খাতের অন্যান্য ব্যাংকও ব্যক্তিগত ঋণ (পার্সোন্যাল লোন) দিয়ে থাকে। যে ঋণ নিয়েও বিয়ের খরচ মেটানোর সুযোগ রয়েছে।