খোলা বাজার২৪ ॥ সোমবার, ১২ অক্টোবর ২০১৫, বরিশাল : জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সহকারী কমিশনার (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) পদে তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এখানকার ২৩টি শাখার দায়িত্ব পালন করছেন মাত্র ৫জন ম্যাজিস্ট্রেট। ১৭জন ম্যাজিস্ট্রেটের ১২জনই প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন কারণে বরিশালের বাইরে অবস্থান করায় এ সঙ্কটের সৃষ্টি হয়েছে। তবে জেলা প্রশাসকের দাবি স্বল্পসংখ্যক কর্মকর্তা দিয়েই কার্যক্রম চালিয়ে নেয়া হচ্ছে।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুল বাছেদ জানান, এ কার্যালয়ে মোট ২৩টি শাখার বিপরীতে ১৭জন সহকারী কমিশনার বা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কর্মরত ছিলেন। যারা ২৩টি শাখার দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৭জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মধ্যে একজন চাকুরি ছেড়ে দিয়েছেন। যার কাগজপত্র জনপ্রশাসনে পাঠানো হয়েছে। একজন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে রয়েছেন। এছাড়া সম্প্রতি দু’জন প্রশিক্ষণে গেছেন। আর সর্বশেষ গত রবিবার এখানকার ৮জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বুনিয়াদি প্রশিক্ষণে গেছেন। এখন মাত্র ৫জন ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছেন। যারা একেক জনে ৪/৫টি শাখার দায়িত্ব পালন করছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংশ্লিষ্ট অফিসের এক কর্মকর্তা জানান, একেক জনের ওপর ৪/৫টি করে শাখার দায়িত্ব থাকায় কোনো কাজই সুষ্ঠুভাবে শেষ হচ্ছে না। যেকারণে এ কার্যালয়ের কার্যক্রম অনেকটাই থমকে গেছে। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের জুডিশিয়াল শাখার সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লুৎফুন নেছা জানান, অনেকেই প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য চলে যাওয়ায় তাদেরকে এখন অন্য শাখাগুলোর কাজও করতে হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে অপর এক সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জানান, তাদের প্রত্যেক ম্যাজিস্ট্রেটের ওপর ৪ থেকে ৫টি করে শাখার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। যেকারণে কোনো কাজই সঠিকভাবে করা যাচ্ছে না। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসেন জানান, একসাথে ৭জন কর্মকর্তা প্রশিক্ষণে যাওয়ায় কাজের চাঁপ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে কথা বলেছেন। খুব শীঘ্রই এর একটি সমাধান আসবে। জেলা প্রশাসক ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামান জানান, ম্যাজিস্ট্রেট বা সহকারী কমিশনার না থাকায় চলমান কাজ চালানো দুরূহ হয়ে পড়েছে। একজনকেই অনেক দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, বিভাগের মধ্যে বরিশাল হচ্ছে প্রধান জেলা। এখানে বিভিন্ন কাজে প্রতিদিনই ভিআইপিরা আসেন। তাদের প্রটোকলের ব্যবস্থাও ম্যাজিস্ট্রেটদের মাধ্যমে করা হয়। কিন্তু হঠাৎ করে সহকারী কমিশনাররা প্রশিক্ষণে চলে যাওয়ায় স্বল্পসংখ্যক কর্মকর্তা দিয়ে কাজ সামলানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে বরিশাল বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. গাউস বলেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা সহকারী কমিশনার সঙ্কটের এমন চিত্র সারাদেশেই রয়েছে। কোনো কোনো জেলায় মাত্র দু’জনও রয়েছেন। তিনি আরও বলেন, সহকারী কমিশনার সঙ্কটে কাজে একটু সমস্যা হলেও বিরূপ প্রভাব পড়ছে না।