Fri. May 16th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

sirajganjখোলা বাজার২৪ ॥ সোমবার, ১২ অক্টোবর ২০১৫, সলঙ্গা, সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জের বেলকুচির বজরু দুলাল উদ্ভাবন করেছেন বিদ্যুতের লোডশেডিং এর নিয়ন্ত্রন করার নতুন এক যন্ত্র। উদ্ভাবকের দাবী নতুন এই যন্ত্র দিয়ে বাড়তি কোন খরচ না করে বানিজ্যিক, আবাসিক সকল বৈদ্যুতিক সংযোগ নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব। এই যন্ত্রটি ব্যবহার করলে বিদ্যুৎ অপচয় রোধ সহ গ্রাহকদের ভোগান্তি কমে যাবে। স্থানীয় পল¬ী বিদ্যুতের কর্মকর্তারাও মনে করেন এই উদ্ভাবনটি কাজে লাগানো গেলে বিদ্যুতের ব্যবহার আরো বাড়ানো সম্ভব।
বেলকুচির সূবর্ণসাড়া গ্রামের বজরু দুলাল ছোটবেলা থেকেই ইলেকটনিক্স সামগ্রীর উপর ঝোক ছিল। তার এই ঝোক এক সময় নেশাতে পরিনত হয়। পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন সরঞ্জাম দিয়ে নানা নিজ প্রযুক্তি দিয়ে ইউপিএস, আইপিএস, সেচ পাম্পের ডিজিটাল পদ্বতি,মোবাইল দিয়ে সেচ পাম্প চালু ও বন্ধ সহ নানা ধরনের ইলেকট্রনিক ও ইলেকট্রিক সামগ্রী তৈরী করেছে। যা তার গ্রামের মানুষ ব্যবহার করে আসছে। সর্বশেষ তিনি উদ্ভাবন করেছেন বিদ্যুৎ লোড শেডিং নিয়ন্ত্রন করার এক নতুন যন্ত্র। যার মাধ্যমে একই ফিডারে থাকা বানিজ্যিক এবং আবাসিক সংযোগের লোড শেডিং আলাদা আলাদা ভাবে দেয়া সম্ভব। এই যন্ত্রটি ব্যবহার করতে নতুন করে কোন তার, খুটি, বা ট্রান্সফরমার ব্যবহার করতে হবে না। পুরানো সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমেই এই যন্ত্রটি ব্যবহার করে আলাদা আলাদা ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব। এই যন্ত্রটি ব্যবহারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ অপচয় রোধ করা সহ সেই বিদ্যুৎ নতুন গ্রাহকের মাঝে দেয়াও সম্ভব বলে দাবি করেছেন উদ্ভাবক দুলাল।
উদ্ভাবকের দাবী কোন এলাকায় নির্ধারিত বিদ্যুতের চেয়ে বেশী পরিমান বিদ্যুতের চাহিদা বাড়লে কর্তৃপক্ষ বিদ্যুতের লোড শেডিং করতে বাধ্য হন। লোড শেডিং করার সাথে সাথে সমস্ত এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়। লোড শেডিং করার ফলে একদিকে যেমন গ্রাহকেরা বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে বঞ্চিত হন, অপরদিকে তেমনি বিদ্যুতের অপচয় হয়। লোড শেডিং দেবার পরও বিদ্যুতের তারের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ চালুই থাকে কিন্তু তা কোন কাজে আসে না। ফলে সঞ্চালন লাইনে থাকা বিদ্যুৎ টুকু অব্যবহৃত থেকে অপচয় হয়। কিন্তু যদি বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে তার উদ্ভাবিত ডিভাইসটি ব্যবহার করে বানিজ্যিক এবং আবাসিক সংযোগ আলাদা করেই লোড শেডিং নিয়ন্ত্রন করা হয় তাহলে কোন সময়ই বিদ্যুতের অপচয় হবে না। ডিভাইসটি ব্যবহার করে যে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে তা দিয়ে নতুন সংযোগ প্রদান করে সরকারও আয় বাড়াতে পারবে। সিষ্টেম লসের কারনে সরকারের কোন বিদ্যুৎ অপচয় হবে না।
এলাকাবাসী জানান, দুলাল ছোট বেলা থেকেই নুতুন নতুন জিনিস উদ্ভাবনের চেষ্টায় মত্ত থাকতো। তার নতুন আবিষ্কারে তারা অনেক খুশী। সরকার সহযোগীতা করলে দুলাল অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
পল¬ী বিদ্যুৎতের বেলকুচি শাখার উপ-মহাব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান জানান, এ উদ্ভাবনটি আরো পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ব্যবহার করা গেলে সরকার লাভবান হবে। পাশাপাশি আবাসিক এলাকায় বিদ্যুতের লোডশেডিং এর পরিমান কমবে।
বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল হাসান জানান, ইতিমধ্যেই স্থানীয় ডিজিটাল মেলায় এই আবিষ্কারটি প্রথম হয়েছে। সরকারের উচ্চ মহলের নজরে আনার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।
এই ডিভাইসটি সঠিক ভাবে কাজ করলে তা দেশের বিদ্যুৎ বিতরন কেন্দ্রে ব্যবহারের উদ্যোগ নিলে বিদ্যুতের অব্যবহৃত অপচয় রোধ সহ আরো বেশী মানুষকে বিদ্যুত সংযোগ দেয়া সম্ভব। এলাকাবাসী সহ বজরু দুলালের প্রত্যাশা তার উদ্ভাবিত যন্ত্রটি সরকারীভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষার ব্যবস্থা নেয়া হোক।