খোলা বাজার২৪ ॥ সোমবার, ১২ অক্টোবর ২০১৫ : এক শিশুর পায়ে গুলি করার অভিযোগে গাইবান্ধার সরকারদলীয় সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের আগাম জামিনের আবেদন নাকচ করেছে হাই কোর্ট। আগামী ১৮ অক্টোবরের মধ্যে এমপি লিটনকে গাইবান্ধার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে। সোমবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর অবকাশকালীন বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। আদেশে বলা হয়, আপিল বিভাগের সিদ্ধান্ত বিবেচনায় নিয়ে এবং মামলার এফআইআর পর্যালোচনায় আগাম জামিনের কোনও উপাদান পাওয়া যায়নি। তাই আবেদন খারিজ করা হল। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন সোমবার বেলা ১২টা ৫৫ মিনিটে এ বেঞ্চের সামনে হাজির হলে সোয়া ১টায় শুনানি শুরু হয়। লিটনের পক্ষে আইনজীবী ব্যারিস্টার মোকছেদুল ইসলাম ও রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুববে আলম শুনানিতে অংশ নেন। আগের দিন আইনজীবী এস এম আরিফুল ইসলাম সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় লিটনের পক্ষে আগাম জামিনের এ আবেদন জমা দেন। সোমবার সকালে ব্যারিস্টার মোকছেদুল ইসলাম ওই আবেদন একই বেঞ্চে উপস্থাপন করলে আদালত বেলা ১টায় আবেদনকারীকে শুনানিতে হাজির করতে বলে। গাইবান্ধার এই আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে দুটি মামলা থাকলেও জামিন চাওয়া হয়েছে আহত শিশুর বাবার করা মামলায়। মামলার কারণে সাংসদ লিটনকে হয়রানি ও অপদস্ত করা হতে পারে বলে আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে ওই আবেদনে। পরিবারের অভিযোগ, গত ২ অক্টোবর গাইবান্ধা-১ আসনের সংসদ সদস্য লিটনের ছোড়া গুলিতে সৌরভ মিয়া নামে নয় বছর বয়সী ওই শিশু আহত হয়। আহত শিশুর বাবা সাজু মিয়া ঘটনার পরদিন সাংসদ লিটনকে আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এছাড়া ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগে আরেকটি মামলা করেন হাফিজার রহমান নামে সর্বানন্দ ইউনিয়নের উত্তর শাহাবাজ গ্রামের এক বাসিন্দা। মামলার পর থেকে আত্মগোপনে রয়েছেন লিটন। তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে নানা কর্মসূচিও পালিত হচ্ছে গাইবান্ধায়। গুলির ঘটনায় সমালোচনার মধ্যে লিটনের লাইসেন্স করা দুটি অস্ত্র সুন্দরগঞ্জ থানায় জমা দেন তার স্ত্রীর বড় ভাই তারিকুল ইসলাম। এরপর জেলা ম্যাজিস্ট্রেট লিটনের অস্ত্র দুটির লাইসেন্স বাতিল করেন। এই সংসদ সদস্য এর আগেও নানা ‘অপকর্ম’ করেছেন বলে তার দলের নেতাদের অভিযোগ। স্থানীয়রা তার সাংসদ পদ বাতিলেরও দাবি তুলেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন নিজে থেকে ধরা না দিলে তাকে খুঁজে বের করে গ্রেপ্তার করা হবে।