Wed. Jun 18th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪ ॥ মঙ্গলবার, ১৩ অক্টোবর ২০১৫: ইতালি ও জাপানের দুই নাগরিক হত্যার পর যুক্তরাষ্ট্র, 3যুক্তরাজ্যসহ অন্তত ১২টি দেশ তাদের বিভিন্ন স্থাপনা ও নাগরিকদের নিরাপত্তা বাড়াতে সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে। গত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে গতকাল সোমবার পর্যন্ত নিরাপত্তা চেয়ে এসব দেশ সরকারকে চিঠি দিয়েছে। কোনো কোনো দেশ নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য একাধিকবার অনুরোধ জানিয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দপ্তরের কর্মকর্তারা বলেন, এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, ইতালি, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, সুইডেন, নরওয়ে, ডেনমার্ক ও সংযুক্ত আরব আমিরাত নিরাপত্তা বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছে। পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (প্রশাসন) মোখলেসুর রহমান বলেন, চিঠি দিক আর না দিক, পুলিশ সব বিদেশির নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। এ ব্যাপারে দেশের সব জেলা পুলিশ সুপারকে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। কেউ নিরাপত্তাহীন বোধ করছেন আর পুলিশ তাকে সহায়তা দেয়নি, এমন একটি ঘটনাও নেই। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, জাপানি নাগরিক নিহত হওয়ার পর বিভিন্ন দেশ চিঠি দিয়ে ও মৌখিকভাবে পুলিশের নিরাপত্তা চেয়েছে। ওই দেশগুলো কয়েকটি ক্লাব ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তার ওপর জোর দিয়েছে। এর মধ্যে আছে নরডিক ক্লাব, আমেরিকান ক্লাব, অস্ট্রেলিয়ান ক্লাব ও ডাচ ক্লাব। আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এবং জাপানি স্কুলও নিরাপত্তা চেয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতও তাদের নাগরিকদের নিরাপত্তা চেয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে এসব দেশের প্রতিষ্ঠান ও নাগরিকদের নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়। জাপানের নাগরিকদের বহন করা বাস চলছে পুলিশের পাহারায়। সদর দপ্তরের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ৬ অক্টোবর পুলিশের ত্রৈমাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় দেশে অবস্থান করা সব বিদেশির কে কোথায় আছেন, সে সম্পর্কে খোঁজ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এসব বিদেশির ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহের জন্য সব জেলা পুলিশ সুপার ও কমিশনারকে নির্দেশ দেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক। ওই দিন দেশে ২ লাখ ২৪ হাজার বিদেশি ছিল বলে সভায় উল্লেখ করা হয়েছিল। পুলিশের একজন পদস্থ কর্মকর্তা বলেন, বিভিন্ন দেশ তাদের গোয়েন্দা তথ্য নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। এতে দেশগুলো নতুন করে কোনো আশঙ্কার কথা জানায়নি। তারপরও পুলিশের পক্ষ থেকে রাজধানীর কূটনৈতিকপাড়ার সব প্রবেশপথে নিরাপত্তা চৌকি বসানো হয়েছে। দূতাবাস, দূতাবাসে কর্মরত সব নাগরিকদের বাসা, বিভিন্ন বিদেশি প্রতিষ্ঠান ও মিশনে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। গোপন ক্যামেরাও বসানো হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি স্থানে। এর বাইরে পায়ে হেঁটে, গাড়িতে ও ভ্রাম্যমাণ টহল জোরদার করা হয়েছে। সাদাপোশাকের লোকজন কূটনৈতিক এলাকায় পাহারা বসিয়েছেন। কূটনৈতিক এলাকার লোকজনের নিরাপত্তার ব্যাপারে নিশ্চিত করতে পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা মহড়াও হয়েছে। অভিবাসন পুলিশের কর্মকর্তারা বলেন, বিদেশ থেকে আসা সব নাগরিকের নিরাপত্তা দেখভাল করা হচ্ছে। কেউ চাইলে পুলিশের পাহারায় তাঁদের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। ‘সতর্কতা জারির মতো পরিস্থিতি হয়নি’: বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, বাংলাদেশে এমন কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি, যার জন্য সতর্কতা জারির প্রয়োজন হতে পারে। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। এর ফলে বাংলাদেশের পর্যটনশিল্পসহ সার্বিক অর্থনীতির ক্ষতি হবে। মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কানাডার হাইকমিশনার বেনোয়া পিয়েরে লাঘামের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের সময় রাশেদ খান মেনন এ মন্তব্য করেন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কানাডার হাইকমিশনার বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রচারমাধ্যম অনেক বেশি আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। বিদেশিদের নিরাপত্তায় সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রশংসা করেন তিনি। বেসামরিক বিমান পরিবহনমন্ত্রী বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তাঁর পর্যবেক্ষণ ঢাকায় কর্মরত কূটনীতিকদের জানানোর অনুরোধ জানান। মেনন বলেন, ‘যে সময় যুক্তরাজ্য বাংলাদেশ সফরে সতর্কতা জারি করছে, ঠিক সে সময় যুক্তরাজ্যের উচ্চপর্যায়ের বাণিজ্যিক প্রতিনিধিদল আমার সঙ্গে বৈঠক করেছে।