খোলা বাজার২৪ ॥ বুধবার, ১৪ অক্টোবর ২০১৫ : যুদ্ধাপরাধের মামলায় আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছেন ফাঁসির আসামি জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ।
৩৮ পৃষ্ঠার মূল ‘রিভিউ’ আবেদনে রায় পুনর্বিবেচনার পক্ষে ৩২টি যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী শিশির মনির।
রিভিউ আবেদন করার জন্য নির্ধারিত ১৫ দিন সময় শেষ হওয়ার এক দিন আগে বুধবার সকালে শিশির মনির সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই আবেদন জমা দেন।
যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রিভিউ আবেদনও দুপুরের মধ্যে জমা দেওয়া হবে বলে তার আইনজীবী হুজ্জাতুল ইসলাম খান আলফেসানী জানান।
নিয়ম অনুযায়ী, রিভিউ নিষ্পত্তির আগে তার দণ্ড কার্যকর করা যাবে না। আর রিভিউ খারিজ হয়ে গেলে সেই রায়ের অনুলিপি কারাগারে যাবে এবং কারা কর্তৃপক্ষ সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আসামিদের ফাঁসি কার্যকর করবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ইতোমধ্যে বলেছেন, আইন অনুযায়ী যেভাবে অগ্রসর হওয়ার কথা, তারা সেভাবেই অগ্রসর হবেন।
আপিল বিভাগ গত ৩০ সেপ্টেম্বর জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মুজাহিদ ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর যুদ্ধাপরাধ মামলার চূড়ান্ত রায় প্রকাশ করলে পরদিন দুই আসামির বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
ওই দিনই কারা কর্তৃপক্ষ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে মুজাহিদ এবং গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে সাকা চৌধুরীকে মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শোনায়, শুরু হয় রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদনের দিন গণনা।
মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে মুজাহিদের সঙ্গে দেখা করেন তার পাঁচ আইনজীবী শিশির মনির, মসিউল আলম, এহসান আব্দুল্লাহ সিদ্দিক, মতিউর রহমান আকন্দ ও আসাদ উদ্দিন।
পরে তার আইনজীবী শিশির মনির বলেন, “আমরা বুধবার রিভিউ দায়ের করব। মুজাহিদ দুটি প্রশ্ন তুলছেন। একটি হচ্ছে ১৯৭১ সালে তার বয়স ছিল ২৩ বছর, তিনি ছিলেন ছাত্র। একজন ছাত্র কীভাবে একটি আধা সামরিক বাহিনীর কমান্ডার হন? আলবদর, রাজাকার ও শান্তিবাহিনীর কোনো কমিটির তালিকায় মুজাহিদের নাম নেই বলেছে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
“তাহলে তিনি কীভাবে বদর বাহিনীর কমান্ডার হলেন? এছাড়া কে তাকে কমান্ডার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে, কীভাবে নিয়োগ হলেন, এ বিষয়ে কোনো দালিলিক বা মৌখিক সাক্ষী রাষ্ট্রপক্ষ হাজির করতে পারেননি।”
এ বিষয়গুলো রিভিউ আবেদনে রয়েছে বলে শিশির মনির জানান।
তিনি বলেন, “মুজাহিদ আশা করেন, আপিল বিভাগ উল্লেখিত বিষয়গুলো বিবেচনায় নেবেন এবং তার দণ্ড মওকুফ করে ওই অভিযোগ থেকে খালাস দেবেন।”
এর আগে গত ৩ অক্টোবর শিশির মনিরসহ পাঁচ আইনজীবী কারাগারে গিয়ে মুজাহিদের সঙ্গে দেখা করে এসে জানিয়েছিলেন, তাদের রিভিউ আবেদন করতে বলা হয়েছে।
এরপর স্ত্রী, তিন ছেলে ও মেয়ে গত ৯ অক্টোবর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে মুজাহিদের সঙ্গে দেখা করে আসেন।
সালাউদ্দিন কাদেরের পরিবারের সদস্যরাও কাশিমপুর কারাগারে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করে এসেছেন