Sat. May 10th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

nilfamafariখোলা বাজার২৪ ॥ বুধবার, ১৪ অক্টোবর ২০১৫, ডিমলা, নীলফামারী : নীলফামারী ডিমলায় উপজেলায় তিস্তার দূর্গম চরে দশ হাজার জনবসতির একটি মাত্র সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চেনেন না শিক্ষককে। পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলেও শিক্ষা বিভাগ নিরব।

উপজেলার তিস্তা নদী বেষ্টিত টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের চরখড়িবাড়ী মধ্য সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে প্রায় দশ হাজার জন বসতির শিক্ষা বঞ্চিত শিক্ষার্থীদের নিরক্ষতা দূর করার লক্ষে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬৪ইং সালে। বর্তমানে বিদ্যালয়টির মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪শ ৪৩ জন। আর এই শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দেয়ার জন্য কাগজে কলমে শিক্ষক সংখ্যা দুই জন থাকলেও। সহকারী শিক্ষক একজন যোগদানের দিন বিদ্যালয়ে এসে যোগদানের পর হতে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত। আর প্রধান শিক্ষক আসেন মাসে একবার। বাকি পদ রয়েছে দির্ঘ কয়েক বছর ধরে শুন্য। ফলে শিক্ষা কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। আর দুজন শিক্ষ অনুপস্থিত থাকলেও বাড়ীতে বসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করছেন ঠিকই।

১ম হতে ৩য় শ্রেনীর ৩শ ৮০ জন কমোলমতি শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন বন্যা খড়া পারি দিয়ে বিদ্যালয়ে আসলেও। দেখা মেলেনা শিক্ষকদের। বাকি ৪র্থ ও ৫ম শ্রেনীর ৬৩ জন শিক্ষার্থীদের বন্যার কারন দেখিয়ে পরবর্তি নির্দেশ না দেওয়া পয্যন্ত ঘোষনা করা হয়েছে ছুটির। বন্যা খড়ার সাথে যুদ্ধকরা তিস্তা অববাহিকার খেটে খাওয়া মানুষগুলি ওই বিদ্যালয়টির দিকে তাকিয়ে ভাবেন তাদের সন্তানদের শিক্ষিত করার স্বপ্নের কথা। তাদের সেই স্বপ্ন একদিকে সর্বগ্রাসী তিস্তা। অন্য দিকে বিদ্যালয়ে শিক্ষক শুন্যতায় বেহাল শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে দিচ্ছে খানখান করছে। বিদ্যালয়ে খাতায় কলমে দুইজন শিক্ষক থাকলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন। স্বরেজমিনে ছুটির দিন ব্যাতিত বিভিন্ন সময় গিয়ে দেখাযায়, বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি থাকলেও শিক্ষক নেই। প্রধান শিক্ষক শাহাদৎ হোসেন টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের বাসিন্দা হলেও বিদ্যালয়ে মাসে ২/১ দিন উপস্থিত থাকলেও। বিদ্যালয়ে আসেন নিজের সংসার আর ব্যবসা বানিজ্য সামলিয়ে নিজ সময় অনুযায়ী। অপর সহকারী শিক্ষক ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের বাসিন্দা প্রশান্ত কুমার রায় সরকার দলীয় কর্মি হিসেবে পরিচয় দিয়ে। নিজের প্রভাব খাটিয়ে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন যোগদানের পর হতে বছরের পর বছর ধরে। আর বাড়িতে বসেই সরকারের বেতন ভাতা উত্তোলন করছেন নিয়মিত।

নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক একাধিক অভিভাবক অভিযোগ কওে বলেন, বিদ্যালয়ে দুইজন শিক্ষক থাকলেও তারা নিয়মিত উপস্থিত থাকেন না। প্রধান শিক্ষক শাহাদৎ হোসেন বলেন, বিদ্যালয়টিতে যাতায়াতের ব্যবস্থা নাজুক হওয়ায় সঠিক সময়ে বিদ্যালয়ে পৌছতে সমস্যা হয়। তাই নির্ধারিত সময় মতো পৌছতে পারিনা।

সহকারী শিক্ষক প্রশান্ত কুমার বলেন, আমি সরকার দলীয় কর্মী তাই রাজনৈতিক কর্মকান্ডে ব্যস্ত থাকায় বিদ্যালয়ে যেতে পারিনা। সতিযুগ হতে চরের বিদ্যালয় গুলি এভাবেই চলে আসছে। তাই আমিও এভাবেই চলছি। বিদ্যালয়ের দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজল কুমার রায়, বিদ্যালয়টির অবস্থান সম্পর্কেই জানেন না।

তিনি বলেন বিদ্যালয়টি তদারকির দায়িত্ব আমার উপড় থাকলেও যোগাযোগ ব্যবস্থার কারনে বিদ্যালয়টিতে কখনো যাওয়া হয়নি। শিক্ষক অনুপস্থিতির বিষয়টি আমার জানানেই।

তিনি ওই বিদ্যালয়টি পরিদর্শনের দায়িত্বে থাকলেও। পরিদর্শনতো দূরের কথা বিদ্যালয়টির অবস্থানই তিনি জানেন না। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ে শিক্ষক অনুপস্থিতের বিষয়টি আমার জানানেই, বিষয়টি তদারকির জন্য নির্ধারিত সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা কাজল চন্দ্র রায় রয়েছেন।

বিষয়টি পত্র-পত্রিকায় প্রকশের সুত্র ধরে প্রধান ও সহকারী শিক্ষককে কারন দর্শানোর নোটিশ করা হয়েছে। এবং তারা আগামী ১৫.১০.১৫ ইং তারিখ পয্যন্ত মৌখিকভাবে জবাবের সময় চেয়েছেন। তাই বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তবে বিদ্যালয়ে এখনো শিক্ষক অনুপস্থিতির বিষয়টি দুঃখ জনক।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দিলীপ কুমার বনিক বলেন, বিদ্যালয়ে শিক্ষক অনুপস্থিতির বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষক অনুপস্থিতির বিষয়টি অবশ্যই তদন্ত পূবূক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।