Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

োূগ.................................

খোলা বাজার২৪ ॥ বুধবার, ১৪ অক্টোবর ২০১৫ :বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, প্রযুক্তি হচ্ছে টেকসই প্রবৃদ্ধির অন্যতম চালিকাশক্তি। এ উপলব্ধি থেকে প্রযুক্তি ব্যবহারে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের অন্যান্য রেগুলেটরি প্রতিষ্ঠান উদারনীতি অবলম্বন করেছে।
বুধবার সিঙ্গাপুরের হোটেল ম্যারিনা বে সেন্ডস-এ অনুষ্ঠিত ‘সিবোস ২০১৫ সিঙ্গাপুর’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনারে বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
গভর্নর সেমিনারে ‘টেকনোলজি অ্যাজ এ গেম চেঞ্জিং ড্রাইভার অব সাসটেইন্যাবল গ্রোথ : সাম রিফ্ল্যাকশনস ফ্রম বাংলাদেশ’ বিষয়ের ওপর বক্তব্য দেন। পেরুর রাজধানী লিমায় অনুষ্ঠিত বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বার্ষিক সভা শেষে ফিরতি পথে তিনি সিঙ্গাপুরে এই সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন।
গভর্নর বলেন,১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ ছিল মূলত স্বল্প প্রবৃদ্ধি ও স্বল্প আয়ের একটি কৃষিপ্রধান দেশ। কিন্তু এই তেতাল্লিশ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন এসেছে।বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম প্রধান তৈরি পোশাক রফতানিকারক দেশ। বৈশ্বিক মন্দা সত্ত্বেও গত এক যুগ ধরে বাংলাদেশ গড়ে ৬ শতাংশের ওপর প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে। মূল্যস্ফীতিও দীর্ঘদিন ধরে নিম্নমাত্রায় স্থিতিশীল রয়েছে।রাজস্ব ঘাটতিও কম। ঊর্ধ্বমুখী রফতানি আয়,প্রবাসী রেমিট্যান্স ও অন্তর্মুখী মূলধন প্রবাহের কারণে ডলারের বিপরীতে টাকার মান আশেপাশের দেশ ও অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় শক্তিশালী ও স্থিতিশীল রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সরকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থসামাজিক উন্নয়ন কৌশলের সাথে সঙ্গতি রেখে বাংলাদেশ ব্যাংক বেশকিছু বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এগুলো হলো কৃষি ঋণ সম্প্রসারণ,বর্গাচাষি ঋণ,এসএমই ঋণ, নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন, অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যাংকিং, গ্রিন ব্যাংকিংও পরিবেশবান্ধব অর্থায়ন, আর্থিক খাতের আধুনিকায়ন, ই-কমার্স, মোবাইল ব্যাংকিং ইত্যাদি। ফলে দেশের টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির ভিত্তিভুমি আরো প্রসারিত হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সেমিনারে আতিউর রহমান বলেন, অর্থনীতির সুফল ইতোমধ্যে জনগণ পেতে শুরু করেছে। কর্মসংস্থান হয়েছে ঊর্ধ্বমুখী। মাথাপিছু আয় ও প্রকৃত মজুরি বেড়েছে।জীবনের আয়ুষ্কাল, দারিদ্র্যের হার, শিশু ও মাতৃ মৃত্যুহারের মতো অনেক সূচকেই ইতিবাচক পরিবর্তন চোখে পড়েছে। ২০১৫ সালের জন্য নির্ধারিত এমডিজির অধিকাংশ লক্ষ্য পূরণে বাংলাদেশ সক্ষম হয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন,গত চার দশকে একটি স্বল্প আয়ের কৃষিপ্রধান দেশ থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতি সেবা ও শিল্প খাতে রূপান্তরের পেছনে কাজ করেছে ব্যাপক উদ্ভাবনীমূলক ব্যবসায়িক মডেল এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রযুক্তির সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করা। বিশেষ করে প্রযুক্তি ব্যবহারে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের অন্যান্য রেগুলেটরি প্রতিষ্ঠান উদারনীতি অবলম্বন করেছে।
গভর্নর বলেন,সত্তর দশকের মাঝামাঝি ব্যাংকিং সেবাবঞ্চিত গরিব মানুষের মাঝে কিছু বেসরকারি সংস্থার ক্ষুদ্রঋণ বাংলাদেশে দারিদ্র্য বিমোচনভিত্তিক আত্মকর্মসংস্থানে উদ্ভাবনীমূলক ব্যবসায়িক মডেল প্রবর্তন করে। সেই সময়ের গ্রামীণ ব্যাংক, ব্র্যাক, আশা আজ বিশ্বব্যাপী ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমে ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশ সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিগত সমর্থন, রেগুলেটরি কাঠামো, আর্থিক বাজারের সাথে সংযোগ স্থাপন এবং সাম্প্রতিক সময়ে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও শাখাহীন ব্যয়সাশ্রয়ী গ্রাহক সেবা বিশেষ করে অটোমেটেড লেনদেন ব্যবস্থা ও তথ্যপ্রযুক্তি আধুনিকায়ন ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমকে আরো বেগবান করেছে।
এছাড়া,তিনি সিবোস গেম চেঞ্জার সেশনে ‘ব্যালান্সিং মানিটারি পলিসি উইথ ডেভেলপমেন্ট’ এবং ‘টেকনোলজি অ্যান্ড সাসটেইন্যাবল গ্রোথ’ শীর্ষক দু’টি বিষয়ের ওপর সাক্ষাতকার পর্বে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এবং এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের কেন্দ্রীয় ব্যাংকারদের অংশগ্রহণে সিবোস গোলটেবিল বৈঠকে ‘ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন; দি জার্নি অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন। আজ রাতে দেশে প্রত্যাবর্তন করবেন গভর্নর।