খোলা বাজার২৪ ॥ বৃহস্পতিবার, ১৫ অক্টোবর ২০১৫ : মুদ্রা পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ ব্যবস্থা মূল্যায়নে এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপের (এপিজি) সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা এসেছে। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) কর্মকর্তা কামাল হোসেন জানিয়েছেন, শনিবার দুপুরে প্রতিনিধি দলটি ঢাকা এসে পৌঁছায়। বিএফআইইউ বাংলাদেশে মুদ্রা পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধের আইন, নীতিমালা বাস্তবায়নে কাজ করে, যা পরিচালিত হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের জনবলের মাধ্যমে। প্রতিনিধি দলটি ১১ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশে মুদ্রা পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ ব্যবস্থার বিভিন্ন দিক সরেজমিনে পরিদর্শন করবে। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, অর্থমন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, রাজস্ব বোর্ড, বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ অর্থ লেনদেনকারী সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে তারা বৈঠক করবেন। এটি এপিজির তৃতীয় পর্যায়ের মূল্যায়ন। এর আগের মূল্যায়নে মুদ্রা পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে অগ্রগতি হওয়ায় বাংলাদেশকে গ্রে লিস্ট থেকে সাধারণ লিস্টে র্যাংকিং করে এপিজি। এই মূল্যায়ন ও র্যাংকিং কোন দেশের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা নির্ধারণ করে। আন্তর্জাতিক লেনদেন ও তথ্য আদান প্রদানে এপিজির মূল্যায়ন গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়। এপিজির এই প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশ অর্থপাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে কীভাবে কাজ করছে তা দেখবে। বাংলাদেশে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বীমা, মানিচেঞ্জার, যেসব প্রতিষ্ঠান রেমিটেন্স আনা-নেওয়া করে, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে ব্যবসা করে এমন প্রতিষ্ঠান, স্টক ডিলার ও ব্রোকার, পোর্টফলিও ম্যানেজার ও মার্চেন্ট ব্যাংকার, সিকিউরিটিজ কাস্টডিয়ান, অ্যাসেট ম্যানেজার, অলাভজনক প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি সংস্থা (এনজিও), সমবায় সমিতি, রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার, হীরা, স্বর্ণ ও দামি ধাতুর ব্যবসায়ী, ট্র্রাস্ট ও কোম্পানি সেবা প্রদানকারী এবং আইনজীবী, নোটারি ও অন্যান্য আইন পেশাজীবী এবং অ্যাকাউন্ট্যান্টদেরকে রিপোর্টিং এজেন্সি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানকে নিয়মিত বাংলাদেশ ব্যাংকে নগদ ও সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য জানাতে হয়। এ বিষয়ে বিএফআইইউ উপ প্রধান ম. মাহফুজুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এপিজির এই মূল্যায়নের জন্য বাংলাদেশ পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা অনেক কাজ করেছি।” এবারের মূল্যায়নও ইতিবাচক হওয়ার তিনি আশা করলেও ভিন্ন মতও পাওয়া গেছে। বিএফআইইউর একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত বছর রাজনৈতিক অস্থিরতা গেছে। এরপর দেশের বিভিন্ন বিমান বন্দরে স্বর্ণ, মাদক, বিদেশি মুদ্রা পাচারের সময় ধরা পড়েছে। সন্ত্রাসে জড়িত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে অর্থায়ন করায় আইনজীবী গ্রেপ্তার হয়েছেন। “মানব পাচারের ঘটনাও উদঘাটিত হয়েছে। আবার সুইস ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বাংলাদেশিদের সেখানে অর্থের পরিমাণ বেড়েছে। এসব ইতিবাচক র্যাংকিং পাওয়ার ক্ষেত্রে অন্তরায়।” সর্বশেষ বিদেশী নাগরিক হত্যাকাণ্ড এবং আইএস এর সম্পৃক্তা মূল্যায়নে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে তার আশঙ্কা।