খোলা বাজার২৪ ॥ বৃহস্পতিবার, ১৫ অক্টোবর ২০১৫ : সিলেটের কুমারগাঁওয়ে শিশু সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলায় নবম দিনে ছয় পুলিশ সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত মহানগর দায়রা জজ আকবর হোসেন মৃধার আদালতে তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয় বলে জানান পিপি মফুর আলী। এরা হলেন, সিলেটের জালালাবাদ থানার ওসি আক্তার হোসেন, ওই থানার সাময়িক বরখাস্ত পরিদর্শক (তদন্ত) আলমগীর হোসেন, এসআই আরিফুল আমিন, সোহেল রানা ও মহাদেব বাঁছাড়। গত ১ অক্টোবর এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। নয় কার্যদিবসে এ মামলার ৩৮ সাক্ষীর মধ্যে রাজনের বাবা মাসহ ৩৫ জনের জবানবন্দি শুনেছেন আদালত। বাকি তিন জনের সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ১৮ অক্টোবর দিন ধার্য করা হয়েছে বলে মফুর আলী জানান। গ্রেপ্তার ১০ আসামি সাক্ষ্য গ্রহণের সময় আদালতে হাজির ছিলেন বলে জানান মফুর আলী। মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- সদর উপজেলার শেখপাড়ার বাসিন্দা কামরুল ইসলাম, তার ভাই মুহিত আলম, আলী হায়দার ও শামীম আহমদ; পাভেল আহমদ, ময়না চৌকিদার, রুহুল আমিন, তাজউদ্দিন আহমদ বাদল, দুলাল আহমদ, নুর মিয়া, ফিরোজ মিয়া, আজমত উল্লাহ ও আয়াজ আলী। এদের মধ্যে পলাতক কামরুল, শামীম ও পাভেলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশিত হয়েছে। গত ৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাঁওয়ে চুরির অভিযোগ তুলে খুঁটিতে বেঁধে ১৩ বছরের রাজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকারীরাই নির্যাতনের ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিলে সারাদেশে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। ঘটনার দেড় মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে গত ১৬ অগাস্ট ১৩ জনকে আসামি করে মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিলেট মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক সুরঞ্জিত তালুকদার। গত ২২ সেপ্টেম্বর ১৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২ ও ৩৪ ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এছাড়া মুহিত আলম, ময়না চৌকিদার, শামীম আহমেদ ও তাজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ২০১ ধারায় লাশ গুম চেষ্টায় পৃথক অভিযোগ গঠন করা হয়। রাজন হত্যার পরদিনই কামরুল সৌদি আরবে পালিয়ে যান। বৃহস্পতিবার বিকালে কামরুলকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের পর মুহিত আলমের স্ত্রী লিপি বেগম ও শ্যালক ইসমাইল হোসেন আবলুছকে গ্রেপ্তার করা হলেও অপরাধে জড়িত থাকার প্রমাণ না পাওয়ায় তাদের অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। কামরুলের পালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশের সহযোগিতার অভিযোগও ওঠে। অভিযোগ ওঠে রাজনের বাবাকে হয়রানিরও। অভিযোগের তদন্ত শেষে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখান্ত করা হয়। প্রত্যাহার করা হয় জালালাবাদ থানার ওসিকে।