খোলা বাজার২৪ ॥ শুক্রবার, ১৬ অক্টোবর ২০১৫ : সিলেটে শিশু সামিউল আলম রাজনকে পিটিয়ে হত্যার প্রধান আসামি কামরুল ইসলামকে আদালতে হাজির করেছে পুলিশ। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে কামরুলকে সিলেটের মহানগর হাকিম আনোয়ারুল হকের আদালতে নিয়ে যায় পুলিশ। আগের রাতে তাকে রাখা হয় সিলেট কতোয়ালি থানা পুলিশের হেফাজতে। অপরাধ সংঘটনের পর পালিয়ে যাওয়া এই বাংলাদেশিকে সৌদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে বিচারের মুখোমুখি করতে বৃহস্পতিবার দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। বিকেলে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে নামার পর রাতেই তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সিলেটে। গত ৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাঁওয়ে চুরির অভিযোগ তুলে খুঁটিতে বেঁধে ১৩ বছরের শিশু রাজনকে পিটিয়ে হত্যার পর বিদেশে পালিয়ে যান কামরুল । মধ্যপ্রাচ্যের ওই দেশেই তিনি থাকেন। রাজনকে নির্যাতনের ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ার পর সারাদেশে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। তখন প্রবাসীদের সহায়তায় কামরুলকে আটক করে সৌদি পুলিশের হাতে তুলে দেন বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা। এরপর কামরুলকে ফেরাতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ পুলিশ, জারি করা হয় রেড নোটিস। পুলিশের এআইজি (গণমাধ্যম) মো. নজরুল ইসলাম জানান, সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দি বিনিময় চুক্তি না থাকলেও সরকারি পর্যায়ে আলোচনার ভিত্তিতে কামরুলকে ফিরিয়ে আনা হয়। ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ওই দিন শিশু রাজনকে পেটানোয় কামরুলই বেশি সক্রিয় ছিলেন। ঘটনার দেড় মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে গত ১৬ অগাস্ট ১৩ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিলেট মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক সুরঞ্জিত তালুকদার। এরপর ২২ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠনের মধ্যে দিয়ে আলোচিত এই হত্যা মামলার বিচার শুরু হয়। ১ অক্টোবর থেকে শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ। বুধবার পর্যন্ত এ মামলায় মোট ২৯ জনের জবানবন্দি শুনেছে আদালত। কামরুলকে নিয়ে এই মামলার আসামিদের মধ্যে মোট ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পলাতকদের মধ্যে কামরুলের ভাই সদর উপজেলার শেখপাড়ার বাসিন্দা শামীম আহমদের সঙ্গে পাভেল আহমদ নামে আরেকজন রয়েছেন। কামরুলের আরেক ভাই মুহিত আলম গ্রেপ্তার হয়ে রয়েছেন কারাগারে। পলাতক শামীম ও পাভেলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশিত হয়েছে।